রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়

স্মৃতি আক্তার:

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১৯ আগস্ট থেকে খুলেছে রাজশাহীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো। সেই সাথে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্যে দর্শনীয় স্থান ও আবাসিক হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্টগুলোও খুলে দেয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হলেও রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা এখনো না খোলায় প্রকৃতি ও বিনোদনপ্রেমিরা ভিড় করছে পদ্মাপাড়ে।

সরেজমিন রাজশাহীর পদ্মাপাড়ের উন্মুক্ত বিনোদনস্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেয়ার প্রথম দিন দর্শনাথীদের ভিড় ওইভাবে লক্ষ্য করা না গেলেও গত শুক্রবার (২১আগস্ট) থেকে পদ্মাপাড়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মত। উজান থেকে আসা  ঢলে বেশ কয়েকদিন পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানি  বাড়ছিল। বর্তমানে পানি এখন একটু কমতে শুরু করলেও পানি দেখতে ও সেইসাথে নৌকা ভ্রমণে যেতে  বিকেলে পদ্মারপাড়ে মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে নগরীর ফুতকিপাড়া, ফুলতলা, পঞ্চবটি, পাঠানপাড়া এলাকার মুক্তমঞ, টি-বাঁধ, আই-বাঁধ ঘুরে দেখা গেছে- বর্তমানে ভরা পদ্মার নয়-নাভিরান সৌন্দর্য্য আর প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করতে দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসেছেন। আবার পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করার পর থেকে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় টি-বাঁধে দর্শনার্থী চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপরেই মানুষের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ।

নগরীর কাজলা ফুলতলা পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা তনুজা নামে দর্শনার্থী জানান, পরিবার সাথে নদীর পানি বেড়েছে তাই দেখতে আসা। লকডাউনে বের হতে না পারায় প্রাকৃতিক উপভোগ করতে ও পদ্মায় নির্মল বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে এসেছি।

আইবাধে ঘুরতে আসা বিনোদন প্রেমী সুমাইয়া, সাব্বির, রাহাত জানান, কলেজ বন্ধ ঈদেও তেমন ঘুরতে পারেনি। লকডাউন শেষ কাছের বন্ধু-বান্ধবিরা মিলে নদীর পানি দেখতে এসেছি। আগে তো প্রায় আসা হতো, রাতেও আড্ডা দিয়া হতো। কিন্তু অনেক দিন যাবৎ দেশে এমন আবস্থায় সেই দিনগুলো হয়ে উঠে না। তবে অনেক দিন পর এসে ভালোই লাগছে।

পদ্মাপাড়ে বিভিন্ন রকমের খাবার জিনিস বিক্রি করে একাধিক খাবার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, পাঁচ মাস বিনোদনের এই জায়গাগুলো বন্ধ ছিলো। আমাদের ব্যাবসা ছিলো না। কোনো রকমের দিন পার করছিলাম। এখন নদীর পানি বেড়েছে। সেই সাথে লকডাউন তুলে নেয়ায় তাদের ব্যবসা ভালোই হচ্ছে বলে জানান তারা।

তবে ভরা পদ্মায় পানি অনেক বেশি হওয়ায় অনেকটা কপাল পুড়েছে নৌকা চালকদের। টি-বাঁধ এলাকার নৌকাচালক রাজু মিয়া জানান, পদ্মায় পানি বেশি হওয়ায় দর্শনার্থীরা ভয়ে নৌকায় উঠছে না। পাড় থেকে পানি দেখেই যেন তারা শান্তি পায়। ফলে ব্যবসাও নাই। এজন্য কয়েক দিন থেকে শুধু নৌকায় বসে অলস সময় পার করছি।

উন্মুক্ত ও প্রাকৃতিকভাবে বিনোদিত হওয়ার বিনোদন স্পট বিশাল এলাকাজুড়ে পদ্মারপাড়। রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের অবারিত ইচ্ছায় পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি করা হয়েছে। এজন্য এখন সারাবছরই উন্মুক্ত এই পদ্মাপাড়ের বিনোদন স্পটগুলোতে মানুষের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত। তবে পদ্মাপাড়ে দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি ভালোলাগা যুক্ত করেছে ভরাপদ্মার পানি। আর এজন্যই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পদ্মাপাড়ে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় যেন পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করেছে।

এএইচ/এস