রাজশাহীর চেজ রাজ্জাকে ১৩ জনের নাস্তা পরিবেশন সার্ভিস বিল ১৩১০ টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিল দেখে মনে হবে ১৩ জনকে নাস্তার খরচের হিসেবে দেওয়া হয়েছে। আদৌ তাই নই। নাস্তা পরিবহনের জন্য সার্ভিস বিল ধরা হয়েছে ১৩১০ টাকা। হে এভাবেই গলাকাটা বিল আদায় করা হচ্ছে রাজশাহীর চেজ রাজ্জাক সার্ভিস নামের একটি আবাসিক হোটেলে। নগরীর ভদ্রা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এই হোটেলটির বেশ খ্যাতি। আর সেই খ্যাতির দাপটে ভোক্তাদের নিকট থেকে গলাকাটা অর্থ আদায় করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।

এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ভোক্তাদের মাঝে। এছাড়াও বিভিন্ন খাতে হোটেলটিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

রবিবার একটি ব্যাংকের রাজশাহী শাখায় দাখিলকৃত চেজ রাজ্জাক হোটেলের বিল দেখে যেন চোখ ছানা-বড়া হয়ে যায় ওই শাখার ম্যানেজারের। শাখা ম্যানেজারের কাছে দাখিলকৃত তিনটি বিলে দুটি সার্ভিস চার্জের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বিলে সার্ভিস চার্জ ধরা হয়েছে ১৩১০ টাকা। সকালের ১০ জনকে নাস্তা সরবরাহের ওই বিলে সার্ভিস চার্জ ধরা হয়েছে ওই পরিমাণ টাকা। মানে নাস্তার আলাদা খরচের পাশাপাশি শুধু ১৩ জনকে পরিবেশন বিল দিতে হয়েছে ১৩১০ টাকা।

আবার রাতে ওই হোটেলের একটি সুইফট রুমের ভাড়া ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা করে। যা রাজশাহীর আর কোনো হোটেলে এমন অস্বাভাবিক ভাড়া নাই। এই রকম ভাড়া আদায় করা হয় ঢাকার ফাইভ স্টার মাণের হোটেলগুলোতে।

আর সাধারণ মাণের একটি কক্ষের ভাড়া ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১০০ টাকা। মধ্যম মাণের আরেকটি কক্ষের ভাগা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১০০ টাকা। আর তিনটি কক্ষের চারজন অতিথিকে এক রাত থাকার জন্য আলাদা সার্ভিস বিল ধরা হয়েছে ২ হাজার ১২০ টাকা। সেই হিসেবে চারজনকে পানি আর চা পরিবেশন করতেই শুধু পরিবেশ বিল দিতে হয়েছে ওই পরিমাণ টাকা।

চেজ রাজ্জাকের ওই বিলে আরো দেখা যায়, স্ন্যাক্স নাস্তার জন্য ১৬ জনের পেছনে বিল ধরা হয়েছে ৫ হাজার  ৪৪০ টাকা। তিজনের বিকেলের নাস্তার জন্য বিল ধরা হয়েছে ৫৭০ টাকা করে প্রতিজনে। রাতের খাবার পরে হালকা নাস্তার বিলও ধরা হয়েছে প্রতি জনে ২৫০ টাকা করে। আর রাতের খাবারের মূল্য প্রতিজনে ৯৫০ টাকা।

কনফারেন্স রুমে নাস্তা সরবরাহের জন্য প্রতিজনে বিল ধরা হয়েছে ৩৪০ টাকা করে। আর এক কাপ চায়ের মূল্য এখানে ২৫ টাকা। শুধুমাত্র এসি আর চেয়ার-টেবিল পাতা সাদা-মাটা কনফারেন্স রুমটির এক ঘন্টার ভাড়া ধরা হয়েছে ৬ হাজার টাকা। যা রাজশাহীর আর কোনো কনফারেন্স রুমের এমন ভাড়া গুনতে হয় না ভোক্তাদের।

রাজশাহীর ওই ব্যাংকের ম্যানেজার সিল্কসিটি নিউজকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেজ রাজ্জাকের যে বিল ধরা হয়েছে-তা রুপপুরের বালিশ কেনাকেও হার মানিয়েছে। এমন বিল পরিশোধ করার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি কিবাবে নিবেন-সেটি নিয়েই আতঙ্কে আছি।’

বিল কমানোর জন্য আমি অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। এ নিয়ে চেজ রাজ্জাকের ম্যানেজারকে আমি দু’কথা শুনিয়েও দিয়েছি।

ওই ম্যানেজার আরো জানান, গত ৩১ জুলাই ব্যাংকটির দু’জন কর্মকর্তাসহ চারজন ঢাকা থেকে রাজশাহীতে আসেন। এরপর ব্যাংকটির জনা তেরো গ্রাহকদের নিয়ে ওই দিনই একটি মতবিনিময় করা হয়। মাত্র এক ঘন্টা মতবিনিময় করা হয়। কিন্তু ওইসময় কনফারেন্স রুমের এসিও নষ্ট ছিল। এই মতবিনিময়ে রাস্তা পরিবেশনের জন্য আলাদা সার্ভিস বিল ধরা হয়েছে ১৩১০ টাকা। এটি মগের মুল্লুক ছাড়া কিছুই নয় বলেও দাবি করেন ওই ম্যানেজার। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় তিনি ব্যাংকটির নাম ও নিজের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।

তবে বিল পরিবেশনকারী চেজ রাজ্জাক সার্ভিসের ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার কিছু করার নাই। মালিকের নির্দেশমতো বিল করা হয়েছে। তাই এ নিয়ে আমি কিছু বলতেও পারব না।’

স/আর