রাজশাহীতে বৃষ্টি বাগড়া পুজামণ্ডপ তৈরির কাজে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তিনদিন থেকে চলছে বৃষ্টি। প্রথম দিনে দিনভর বৃষ্টি ঝরলেও বাকি দুই দিন ঝরেছে থেমে থেমে। অবিরাম বৃষ্টির কারণে বাগড়া পড়েছে পুজার পুজামণ্ডপ তৈরির কাজে। যদিও প্রতিমা তৈরি কাজ প্রায় শেষ করেছে শিল্পীরা। তবে মণ্ডপ তৈরির কারিগরদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বৃষ্টির জন্য। কারণ অবিরাম বৃষ্টিতে ভিজেছে বাঁশসহ সব সামগ্রী। ফলে কাজে সুবিধা করতে পারছেন না শ্রমিকরা। তাই অতিরিক্ত শ্রমিক দিয়ে রাত-দিন সমান তালে কাজ চালাতে হচ্ছে ডেকোরেটরের শ্রমিকদের।

রাজশাহীর আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টিময় আবহাওয়া থাকতে পরে আরও কয়েকদিন। রাজশাহী অঞ্চলে গত বৃহস্পতিবার ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া শুক্রবার ১৫ দশমিক ৬ এবং গতকাল শনিবার ৫ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে হালকা বাতাসও।

অন্যদিকে বৃষ্টি ঝরলেও থেমে নেই প্রতিমা শিল্পীদের কাজ। হাতে অল্প কিছুদিন থাকায় রাত-দিন সমান তালে কাজ করছেন তারা। শেষ মহুর্তে প্রতিমার গায়ের রঙ তুলির আচড় কাটছেন শিল্পীরা। প্রতিমা শিল্পীরা বলছেন, তাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। আবহাওয়া তেমন ভালো না থাকায় রঙ শুকানো নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। কোনো কোনো সময় রং! শুকাতে চালাতে হচ্ছে ফ্যান।

নগরীর বুধপাড়া হরিজন কলোনির সভাপতি শ্রী স্বপন জানায়, তাদের ম-পের বাইরের লাইটিং কাজ শেষ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে মূল ম-পের কাজ শেষ করতে পারেনি ডেকোরেটরের শ্রমিকরা। বৃষ্টিতে ভিজেছে মণ্ডপের বাঁশগুলো। তাই ধীর গতিতে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।

গত বছর রাজশাহীর সবচেয়ে বড় প্রতিমা উঠানো হয় টাইগার মণ্ডপে। মণ্ডপটির সাধারণ সম্পাদক পার্থ পাল চৌধুরী বলেন, বৃষ্টির কারণে কাজ সুবিধা করতে পারেনি ডেকোরেটরের শ্রমিকরা। তারা কয়েকদিনে শুধু মণ্ডপের ফ্রেম তৈরি করেছে। পুরো কাজ বাকি আছে। আজ ফ্রেমের উপরের বিভিন্ন ধরনের কাপড় দিয়ে সাজাচ্ছে তারা।

তিনি বলেন, এবার স্যাটালাইট স্টেশনের আদলে প্রতিমা রাখার মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। ১০ ফুটের এই প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে নাটোর জেলায়। প্রতিমা আনার পরে মূল মণ্ডপের কাজ শুরু করা হবে। এবছরও রাজশাহীর সব থেকে বড় প্রতিমা টাইগার মণ্ডপে আনা হবে বলে জানান পার্থ।

অন্যদিকে সময়মত কাজ শেষ করা নিয়ে শংকায় রয়েছেন বলে জানান তালাইমারী এলাকার আরসি ডেকোরেটরের মালিক শামসুল। তিনি বলেন, বোয়ালিয়া থানার মোড় এলাকার উৎসর্গ মণ্ডপের সাজসজ্জার কাজ করছেন তারা। বৃষ্টির জন্য ঠিকঠাক কাজ করতে পারছেন না। বৃষ্টিতে বাঁশসহ অন্য সামগ্রী ভিজে থাকায় উঠেতে সমস্যা হয়। বৃষ্টির জন্য পুরো দুইদিন কাজ করতে পারেনি তারা। সেই কাজগুলো তুলতে এখন দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বৃষ্টি না হলে পাঁচজন শ্রমিকেরই কাজ হতো। এখন ১২ থেকে ১৩ জন শ্রমিক নিযুক্ত করেও কাজ শেষ হচ্ছে না। এর ফলে বেশি শ্রমিক নিয়ে কাজ করতে (ডেকোরেটরের মালিক) বেশি খরচা হচ্ছে। আর বৃষ্টি না হলে সময় মত কাজ শেষ হতো। বর্তমানে ম-পের ভেতরের কাজগুলো করা হচ্ছে। বাইরের ডেকোরেশনের কাজ পুজোর রাতে করবেন বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে দুর্গাপুজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে রাজশাহী মেট্রোপলিন পলিশের (আরএমপি) পক্ষ থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাগুলোতে সনাতন ধর্মের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আর পুরো পুজা ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরএমপির মুখপাত্র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম।

 

স/আ