রাজশাহীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালীতে বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাইক্রোবাসে আগুন ধরে গেলে ভেতরে থাকা ১১ যাত্রী পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এছাড়া সিএনজির  ভেতরে থাকা যাত্রীদের অনেককেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে যাওয়ার পর আরও ৬ যাত্রী মারা যায়। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দুইজন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টার দিকে কাটাখালীর কাপাশিয়া এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, রাজশাহী থেকে হানিফ পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিলো। অন্যদিকে যাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাস ঢাকা থেকে রাজশাহী শহরের দিকে ঢুকছিলো। মাইক্রোবাসের যাত্রীরা রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে স্বপরিবারে রয়েল হাসপাতালের প্রধান হিসাবরক্ষক তারিফের বাসায় বেড়াতে আসছিলেন বলে জানা যায়।

যাত্রীবাহী হানিফ পরিবহন ও মাইক্রোবাসটি ওই এলাকায় পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মূহুর্তের মধ্যে মাইক্রোবাসটিতে আগুন লেগে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ফলে মাইক্রোবাসের ভিতরেই পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় ৫ পুরুষ, চার নারী ও দুই শিশু। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে মাইক্রোবাসের ভিতর থেকে সবমিলিয়ে  ১১ জনের লাশ উদ্ধার করেন।

এছাড়াও রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে আরও ৯ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬ জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অপর তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আগুনে ও বাসের ধাক্কায় যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসটি চূর্ন-বিচুর্ণ হয়ে যায়। সেই আগুন রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফাঁকা সিএনজিতেও লাগে। সেটিরও অনেকটা অংশ পুড়ে যায়।

মাইক্রোবাস থেকে ৪ জন মেয়ে, ২জন শিশু ও ৫ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়। তারা সবাই পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। মাইক্রোবাসে মোট ১৭ জন যাত্রী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে মাইক্রোবাসের কেউ বের হতে না পারায় ভেতরে থাকা ১১ যাত্রী পুড়ে মারা যায়। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাস যাত্রীদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬ যাত্রী মারা যায় বলে জানান রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস।

তিনি সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা ১১ যাত্রী পুড়ে মারা যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় আরও ৬ জন। তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনজন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, দুটি যানবাহনের এভাবে মুখোমুখি সংঘর্ষ আসলে কী কারণে ঘটলো তা এখনো  যায়নি।

স/আর