রাজশাহীতে বাল্যবিবাহের হার আশঙ্কাজনক: পরিসংখ্যান ব্যুরো

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বাল্যবিবাহ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে রাজশাহী বিভাগের শহরাঞ্চলের শিশু কল্যাণ জরিপে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়,  সারাদেশে বাল্য বিবাহের হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশ হলেও রাজশাহীতে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ মেয়েদের বিয়ে হয় ১৫ বছরের নিচে। আর ১৫ বছরের নিচে বিয়ে হয় ৬৩ শতাংশ মেয়েদের, যেখান সারা দেশে ৫৯ শতাংশ। আশংকাজনকভাবে বাল্যবিবাহের বৃদ্ধির কারণে ২৮ শতাংশ মেয়ে ১৫ থেকে ১৯ বছরে মা হন।

সোমবার সকালে রাজশাহী সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে রাজশাহী বিভাগের শহরাঞ্চলের শিশু কল্যাণ জরিপ ( Child Well-being Survey in Urban Areas of Bangladesh 2016) রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগীয় পরিসংখ্যান অফিসের যুগ্ম পরিচালক আশরাফুল আলম সিদ্দিকী এই অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগের শহরাঞ্চলে বসবাসরত মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা, পানি- স্যানিটেশনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জীবন মান উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ের জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন।

জরিপে আরও দেখা যায়,শতকরা ৯৯.২০ গৃহের নিরাপদ খাবার পানির উৎস আছে, এবং ৮৯.২০ শতাংশ গৃহের নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা আছে। রাজশাহী বিভাগের শহরাঞ্চলের ১৬.৫ শতাংশ শিশু এখনও স্কুল শিক্ষার বাইরে আছে, যাদের বেশিরভাগ বস্তি এলাকায় বসবাসরত। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ২১.৯ শতাংশ এখনও নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে স্বল্প ওজনের। বাল্যবিবাহের মাত্রা অধিক এবং মাতৃ শিক্ষার হার কমার কারণে শিশু স্বাস্থ্য হুমকির মুখে বলে জানা যায়।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক এস এম আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার নুর-উর-রহমান, ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর সোশ্যাল পলিসি, ইভালুএশন, এনালিটিকস ও রিসার্চ এর প্রধান কার্লোস একস্তা বারমুদেজ এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান নাজিবল্লাহ হামীম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী তথ্য উপাত্ত ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় শিশু কল্যাণ জরিপ এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন পরিকল্পনায় জরিপের ফলাফলকে কাজে লাগানোর আহবান জানান।

এ সময় রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন সংস্থা এবং বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

স/শ