রাজশাহীতে ছাত্রলীগের খুনি আ.লীগ নেতাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় মামলা

 নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগ নেতা এসএম গোলাম মূর্শিদ গোলাম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল আলম বেন্টু দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদকসহ দুই প্রতিবেদকের নামে মামলা দায়ের করেছেন। রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানা আমলি আদালতে রবিবার দুপুরে মানহানির এ মামলাটি করেন তিনি। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর ‘ছাত্রলীগ নেতার খুনি প্রভাবশালী আ.লীগ নেতা’ শিরোনামে  একটি অনুসন্ধানী খবর প্রকাশ হয়। এরপর গত ১৭ অক্টোবর ‘পাঁচ বছরে শত কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি’ শিরোনামে ও ‘আ.লীগ নেতার বালুর সম্রাজ্য’ উপ-শিরোনামে দুটি আলাদা সংবাদ প্রকাশ হয়।

তবে গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদে আজিজুল আলম বেন্টুর মান  সম্পানের হানি হয়েছে বলে দাবি করে তিনি মামলাটি করেন। মামলায় কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বিশেষ প্রতিবেদক আব্দুল আল মামুন ও রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টু দাবি করেন, তিনি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান কিন্তু। তাকে নিয়ে মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে কালের কণ্ঠে উঠে এসেছে আজিজুল আলম বেন্টু একসময়ে সামান্য ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ছিলেন। সেখান থেকে এখন তিনি দামি গাড়ী এবং অঢেল সম্পদের মালিক। এদিকে মামলার আরজিতে আ.লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টু উল্লেখ করেন, ‘গত ১৩ অক্টোবর কালের কণ্ঠে যে সংবাদ প্রকাশ হয় ওই সংবাদের প্রতিবাদলিপি ছাপানো হয়েছে স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে। পাশাপাশি ১৪ অক্টোর মানববন্ধন ও ১৫ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করা হয়। তবে তার এসব কার্যকলাপের মধ্যে মানববন্ধনে অংশ নেয় হত্যা, মাদকসহ বিভিন্ন মামলার আসামিরাও। এমনকি রাবির ছাত্রের ওপর হামলা ও ছিনতাই চেষ্টা মামলার আসামি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা অনিক মাহমুদ বনিও ছিলেন ওই মানববন্ধনে। গত শনিবার রাতে ছিনতাইকারী এই বনিকে আটক করে পুলিশ।

আজিজুল আলম বেন্টুর পক্ষে নানা ধরনের ভিডিও ও কমেন্টও রয়েছে এই বনির ফেসবুকে। এছাড়াও আজ বেন্টু তাঁর যেসব সঙ্গীদের নিয়ে আদালতে মামলা করতে যান, তাদের মধ্যেও ছিল হত্যা মামলার আসামি থেকে থেকে শুরু করে একাধিক মাদক মামলা, ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের আসামি। এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতার বেন্টুর হয়ে তাঁর অনুসারীরা ফেসবুকে নানাভাবে রাজশাহীর তিন সাংবাদিককে নিয়ে অপপ্রচার চালাতে থাকে। এছাড়াও সাংবাদিকদের নানাভাবে ভয়ভীতিও প্রদান করতে থাকেন। এ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রাজশাহীর সাংবাদিক সমাজ। রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষে একটি প্রতিবাদ লিপিও দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা জানায়, নিজেকে রক্ষা করতে বেন্টু এখন মামলার পথ বেছে নিয়েছে। এর আগেও তিনি রাজশাহীর সাংবাদিকদের নামে মামলা করেছেন। তবে বেন্টুর নানা কাণ্ড নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন সংস্থা তদন্তে মাঠে নেমেছে। পাশাপাশি দুদক থেকেও তাঁর সম্পদের পাহাড়ের খোঁজে মাঠে নেমেছে একটি দল। পাশাপাশি তিনি যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন এর জন্য বিভিন্ন সংস্থাকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দলের ভিতরেই কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছে এই বেন্টুকে।

 

স/আর