রাজশাহীতে চুরি করা গাভী-বাছুরসহ থানায় দুই চোর!


নিজস্ব প্রতিবেদক:

২৩ আগস্ট রাত আনুমানিক ১টা। রাজশাহী মহানগরীর শাহ-মখদুম থানার কুলপাড়া এলাকার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায় একটি গাভী। পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে গাভীটিকে বাছুরসহ থানায় নিয়ে যায় দুই চোর। পাঠক, আপনি হয়তো একটু চিন্তায় পড়ে গেলেন? হয়তো ভাবছেন, চুরি হয়ে গেল একটি গাভী! আবার চুরি যাওয়া গাভীটিকে বাছুরসহ দুই চোর থানায় নিয়ে গেলো? এটা কীভাবে সম্ভব? হ্যাঁ পাঠক, আপনি আশ্চর্য্য হলেও হতে পারেন, তবে ঘটনাটি ঠিক এরকমই! তবে এবার আপনি জানুন এই ঘটনার বিস্তারিত।

রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, নগরীর শাহ মখদুম থানাধীন কুলপাড়া এলাকার মো. আবু বাক্কারের ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম বাড়িতে ৩টি গুরু পালন-পালন করতেন। কিন্তু গত ২৩ আগস্ট গভীর রাতে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ফ্রিজিয়ান গর্ভবতী একটি গাভী তরিকুলের গোয়ালঘর থেকে চুরি হয়ে যায়। পরে গরুর মালিক শাহ-মখদুম থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন।’

ওসি আরও বলেন, ‘বাদির অভিযোগপত্রের বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নাসির উদ্দিনসহ পুলিশের একটি টিমকে গাভীটি উদ্ধারে দায়িত্ব দেয়া হয়। এক পর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে নগরীর রাজপাড়া থানার আলীগঞ্জ এলাকার আজাহার আলীর স্ত্রী বিলকিস বেগম (নারী চোর) নামের এক নারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। বাদির এজহারের বর্ণনা অনুযায়ী, এসময় বাছুরসহ (চোরের বাড়িতেই গাভীটির বাছুর হয়) চুরি যাওয়া গাভীটিকে বিলকিস বেগমের ঘরে পাওয়া যায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বিলকিস বেগম গাভীটি চুরি করার কথা স্বীকার জানায়, চুরি করে নিয়ে আসার ৪-৫ দিন পরই তার (বিলকিস) বাড়িতেই গাভীটি বাছুর প্রসব করে। বিলকিসের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গাভী চুরির সঙ্গে জড়িত অপর ব্যক্তি একই এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. মাসুম আলীকে (৩৫) তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে গাভীসহ এই দুই গরুচোরকে থানায় নিয়ে আসা হয়।’

ওসি আরও বলেন, ‘বাদির করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাতেই ৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড (১৮৬০) ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। আটককৃত এই দুইজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উদ্ধার হওয়া গাভীসহ আদালতে পাঠানো হয়।’ পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে গাভীর মালিককে বাছুরসহ গাভীটি হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এএইচ/এস