রাজশাহীতে ক্ষেতের সবজি শহরে বিক্রি হচ্ছে দিগুন দামে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হাসির প্রবার খড়খড়ি বাজারে গতকাল শনিবার সকালে এক মণ বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬ থেকে ৭শ টাকা দরে। সে হিসেবে এক কেজি বেগুনের দাম পরে ১৫ থেকে সাড়ে ১৭ টাকা। অথচ নগরীর উপকণ্ঠ খড়খড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে রাজশাহী শহরে সেই বেগুন বিক্রি হয়েছে গতকাল ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে। একইভাবে এক মণ ফুলকপি বিক্রি হয়েছে গতকাল খড়খড়ি বাজারে ৫০০-৬০০ টাকা দরে। কিন্তু সেই ফুলকপি রাজশাহী শহরে বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। এভাবে প্রতিটি সবজির দাম মাঠ পর্যায়ে থেকে শহরে এসে প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাজশাহী দুর্গাপুরের সবজি চাষী আকবর হোসেন বলেন, আমরা কষ্ট করে খেতে ফসল ফলায়। কিন্তু সেই হারে কখনো দাম পাই না। ফসলের দাম কমুক আর বাড়ুক তাতে ব্যবসায়ীদের কোন লোকসান হয় না যা লোকসান হয় আমাদের। এখন সবজির দাম কম। এর ফলে প্রায় প্রতিটি সবজি চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। অথচ আমাদের কাছ থেকে সবজি কিনে নিয়ে গিয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

দুর্গাপুরের খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুল মানিক বলেন, কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনে মনে ২০০-৩০০ টাকা লাভ না করলে আমাদের সংসার চলবে না। আবার মাঠ থেকে যারা শহরে নিয়ে গিয়ে পাইকারী বিক্রি করে, তারা আরও বেশি লাভ করে। তাদের নিকট থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। ঐ ব্যবহার সেরা লাভ করেন। এভাবে সবজির দাম মাঠ পর্যায়ে থেকে শহরে গিয়ে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায়।

রাজশাহীর সাহেব বাজার পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকারি বাজারে যেসব বিক্রেতা সবজি বিক্রি করেন তারা মণে ৫০ থেকে ১০০ টাকা লাভ করে থাকেন বড় জোর। পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে নিয়ে গিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা কোন কোন ক্ষেত্রে দশ টাকা পর্যন্ত লাভ করেন। এ কারণে গ্রামের বাজারে যে বেগুন ১৫ টাকায় বিক্রি হয় সেটির শহরে এসে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল রাজশাহীর বানেশ্বরে এক মণ টমেটো বিক্রি হয়েছে ৬৫০-৭০০ টাকা মণ। কিন্তু ওই বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। পেঁপে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা আর রাজশাহী শহরে এসে সেটি দাঁড়ায় ২০ টাকা কেজি। এক কেজি সিম বিক্রি হয়েছে রাজশাহী শহরে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। বানেশ্বর বাজারে পাইকারী সেটি ছিলো ২০০-২৫ টাকা কেজি।

রাজশাহীর বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ কেজি দরে। আর খড়খড়ি বাজারে সেটি সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা কেজি। এছাড়াও ৩৫ টাকার করলা ৫০ টাকা কেজিতে, ২০ টাকার মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাতা কেজি, ১৫ টাকার লাউ ২৫ থেকে ৪০ টাকা পিস । আবার ১০ টাকার পালং শাক ২০ টাকা, ১০ টাকার সবুজ ও লাল শাক ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
স/আর