রাজশাহীতে একই লাইনে উত্তরা-কপোতাক্ষ: চালকের বুদ্ধিমত্তায় রক্ষা পেল দুই ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও একই ধরনের ঘটনা ঘটতে চলেছিল রাজশাহীর আড়ানীতে। তবে চালকের বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল এই দুই ট্রেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে একই লাইনে উঠে যায় দু’টি যাত্রীবাহী ট্রেন। তবে চালকের দক্ষতায় মাত্র ৩০ ফুট দূরত্বে থাকতেই থেমে যায় ট্রেন দু’টি। এতে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান দুই ট্রেনের প্রায় এক হাজার যাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উত্তরা এক্সপ্রেস রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছিল। আর খুলনা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস রাজশাহী আসছিল।

এসময় আড়ানী রেলস্টেশনের অদূরে উত্তরা এক্সপ্রেস ও কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসের ক্রসিং হওয়ার কথা ছিল। রাজশাহী প্রান্তে আব্দুলপুর অভিমুখী উত্তরা এক্সপ্রেস ক্রসিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। এসময় খুলনা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনটি একই লাইনের মধ্যে ঢুকে পড়ে। লাইনের ওপর ট্রেন দেখে তাৎক্ষণিক ব্রেক করেন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসের লোকোমাস্টার (চালক)। ট্রেনটি মুখোমুখী একেবারে কাছাকাছি এসে পড়লেও শেষ পর্যন্ত থামিয়ে দিতে সক্ষম হন তিনি। এসময় দুই ট্রেনের দূরত্ব ছিল মাত্র ৩০ ফুট।

এ ঘটনার পরপরই দুই ট্রেনের যাত্রীরা নেমে আসেন। চারদিকে রীতিমতো হৈ চৈ পড়ে যায়। অল্পের জন্য ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় যাত্রীবাহী দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের মতো ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন বলে জানান আতঙ্কিত যাত্রীরা।

কপোতাক্ষ আন্ত:নগর ট্রেনের চালক রুহুল আমিন সিরাজ বলেন, আড়ানী স্টেশনে কপোতাক্ষ আন্তনগর ট্রেনের স্টোপেজ নেই। নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন চলছিল। আড়ানী রেল স্টেশনের পূর্ব দিকের পয়েন্ট পার হওয়ার পর দেখি, যে লাইন দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে, সেই লাইনে আরেকটি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। আমি কৌশলে ট্রেনটির মুখোমুখি হওয়ার আগে থামিয়ে দিই।

সিক্স ডাউন ট্রেনের চালক রাজু আহম্মেদ বলেন, যে লাইনে আমার ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল, সেই লাইন দিয়ে আরেকটি ট্রেন আসা দেখে যাত্রীরা ছুটোছুটি শুরু করে। ফলে ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে আতংক দেখা দেয়।

কপোতাক্ষ আন্তনগর ট্রেনের পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, এ ট্রেনের স্টোপেজ নেই আড়ানীতে। হঠাৎ আড়ানী স্টেশনে এছে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। ট্রেন থেকে নেমে এসে দেখি, যে লাইন দিয়ে ট্রেনটি যাচ্ছিল, সেই লাইনে আরেকটি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা দেখে চালক ট্রেনটি কৌশলে থামিয়ে দেন। প্রায় ৩৩ মিনিট পর ট্রেনটি পেছনের দিকে ব্যাক করে ২ নম্বর লাইনে দিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

আড়ানী স্টেশনের পয়েন্টম্যান রওশন আলী বলেন, আমি কিছুদিন আগে স্টোক করে প্রতিবন্ধীর মতো হয়ে পড়েছি। দূত চলাচল করতে সমস্যা হয়। আমি পয়েন্ট ঠিক করতে যাওয়ার আগেই কপোতাক্ষ আন্তনগর ট্রেন আড়ানী স্টেশনে ঢুকে পড়ে। তবে চালকের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মুখোমুখি হওয়ার আগে ট্রেন থামিয়ে দেন।