রাজশাহীতে অস্থির চালের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে হঠাৎ অস্থির চালের বাজার। সরবরাহ কম অজুহাতে বস্তা প্রতি এক লাফে চালের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চালের দাম কমলেও বেশি দামে কেনায় মজুত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা দাম কমাতে পারবেন না।

বর্তমানে বৃষ্টির কারণে চাতাল মালিকরা ঠিকমতো ধান শুকাতে ও সিদ্ধ দিতে পারছেন না। বর্ষা বিদায় নিয়েছে। তবে বৃষ্টি চলছে ভাদ্র মাসেও। তাই টানা কয়েক দিন ঠিকমতো রোদ না উঠলে ধান শুকাতে বা সিদ্ধ দিতে পারছেন না তারা। এ জন্য মিলে ধানও ভাঙানো যাচ্ছে না। এতে সরবরাহ কমায় বেড়েছে দাম।

তবে বাজারে নতুন ধান উঠলে মিল পর্যায়ে কিছুটা দাম কমবে। তখন বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। তাই সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রাজশাহীর বাজারে আবারও চালের দাম কমে আসবে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

নগরীর কাদিরগঞ্জের চাল ব্যবসায়ী আবদুর রৌফ বলেন, এ বছর করোনা, আম্ফান, খরা ও বন্যা লেগেই আছে। এসব কারণে শস্যভান্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের কোথায়ও আশানুরূপ ধান-চাল উৎপাদন হয়নি। তিন মাস ধরেই চালের দাম বেশি। মাঝখানে একটু কমলেও বন্যায় সরবরাহ কমে আসায় আবারও বেড়েছে দাম।

কাদিরগঞ্জ আড়তে আসা রবিউল আলম নামের একজন সাধারণ ক্রেতা বলেন, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই রাজশাহীর বাজারে চালের দাম বাড়তি। গত মাসেও যেই মিনিকেট চাল ২ হাজার ৫০০ টাকায় (৫০ কেজির বস্তা) নিয়ে গিয়েছিলেন, এখন তা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুনের চেয়ে পুরনো চালের দাম বেশি।

এ ছাড়া মহানগরীর কুমারপাড়া চালের আড়তে আসা মোবারক হোসেন বলেন, ঈদের পর থেকেই বাজারে হু-হু করে বাড়ছে সব চালের দাম। রোজার মধ্যে চালের বাজার মনিটরিং করা হলেও এখন হচ্ছে না। তাই অনেক আড়তে চালের মূল্য তালিকাও নেই। যে যেমন পারছেন দাম বাড়াচ্ছেন।

নগরীর কাদিরগঞ্জ, সাহেববাজার, কুমারপাড়া, লক্ষ্মীপুরে থাকা চালের পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

আড়তগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া স্বর্ণা চাল প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০, আঠাশ চাল ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৫০০, মিনিকেট ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭৫০, বাসমতি ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার, কাটারিভোগ ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার এবং কালিজিরা ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা চালের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়ায় খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা করে বেড়েছে।

নগরীর সাহেববাজার এলাকার আহমেদ রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী রাজু আহমেদ বলেন, চালের পাইকারি আড়তে দাম বেড়েছে। তাই খুচরা বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এপি চাল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মিলন প্রসাদ বলেন, কয়েক মাস ধরেই চালের দাম বেশির দিকে। তবে গত সপ্তাহ থেকে আরও বেড়েছে।