“রাজশাহীকে নিয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখি, তা অনেক বড়” : লিটন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী শহরকে আবারো নতুন করে পরিকল্পিতভাবে সাজানোর আশা করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আমি রাজশাহী নিয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখি, তা অনেক বড়। এই শহর আমার জন্মের শহর, এই শহর আমাকে বড় করেছে, এই শহরে খেলাধূলা করেছি। এই শহরের মাটির টান, এই মাটিতে আমার মাতা-পিতা শুয়ে আছে। এই শহরের প্রতি আমার ঋণ রয়েছে। আমি সেই ঋণ পরিশোধ করতে চাই। রাজশাহীকে অনন্য একটি শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্যে আমি সুযোগ চাই।

আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর নানকিং দরবার হলে রাজশাহীর সকল প্রগতিশীল সাবেক ছাত্রনেতাদের আয়োজনে মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি আপনাদের একটি স্বপ্ন দেখায়। আপনারা মনে করবেন পারব না। কিন্তু আমার বিশ^াস আমি পারব। শাহমখদুম কলেজের সামনে থেকে আলুপট্টি হয়ে সাহেববাজার হয়ে মনিচত্বর হয়ে রাজশাহী কলেজের সামনে দিয়ে সিএন্ডবি মোড় পর্যন্ত একটি ফ্রাইওভার। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে রেলক্রসিং হয়ে নিউমার্কেট হয়ে গণকপাড়া হয়ে সাহেব বাজারজিরো পয়েন্ট পর্যন্ত একটি এবং বর্ণালীর মোড় থেকে রেল ক্রসিং হয়ে ভদ্র স্মৃতি অম্লান পর্যন্ত আরেকটি ফ্লাইওভার করতে চাই। এই তিনটি ফ্লাইওভার করতে মোট ২৪০০ কোটি টাকা লাগবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আমার পক্ষে এটি করা সম্ভব।

নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টার করা হবে জানিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, খেলার মাঠ অনেক কমে গেছে। শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ করতে চাই। মাঠের পাশেই থাকবে কমিউনিটি সেন্টার। তার নিচ তলায় হবে কাউন্সিলের কার্যালয়। এরজন্যে জায়গা দেখা আছে। সুযোগ পেলে বাস্তবায়ন করবো।

বেকার সমস্যা দূরকরণে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বেকারত্ব থেকে হতাশা বাড়ে। হতাশা থেকে তরুণ সমাজ মাদকাসক্ত হয়। এই সমস্যা সমাধানে অনেক শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হবে, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানাও গড়ে তোলা হবে। এসবের মাধ্যমে ৫ বছরে লক্ষাধিক ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।

রাজশাহীতে গ্যাস সংযোগ আনার ইতিহাস উল্লেখ করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দাবি করে রাজশাহীবাসীর জন্যে গ্যাস এনেছি। গ্যাস সংযোগ দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পরপর তিনবার গেছি। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, আপা, আমি গ্যাস সংযোগ না নিয়ে আপনার অফিস থেকে যাব না। প্রথমদিন, দ্বিতীয় দিন তিনি তেমন কিছু বলেননি। তৃতীয়দিন আবার বলার সময় প্রধানমন্ত্রী আমার দিকে রেগে তাকিয়েছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে সেখানে এক কর্মকর্তা আসেন। তিনি রাজশাহীতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার বিরোধীতা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার দিকে রেগে তাকিয়ে নিজে তার অফিসের কর্মকর্তা দিয়ে ফাইল আনিয়ে গ্যাস সংযোগের ফাইলে স্বাক্ষর করেন।

সদ্য বিদায়ী বিএনপির মেয়রের সমালোচনা করে খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বিএনপির একজন মেয়র ছিলেন, তিনি সিটি কর্পোরেশনের ঋণ রেখে দায়িত্ব ছেড়েছেন। ৫ বছরে কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি। তবে তারা যুক্তি দেখায়, চেয়ারে বেশিদিন থাকতে না পারায় উন্নয়ন করতে পারেননি। আসলে যারা পারে নয় বছরে পারে, যারা পারে না নব্বই বছরেও কিছু করতে পারবে না।

বিএনপি-জামায়াত অপপ্রচারে নেমেছে উল্লেখ করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত নির্বাচনে তারা অপপ্রচার করেছিল। এবারো অপপ্রচারে নেমেছে। তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে।
নগরীতের সরকারি ¯ু‹ল-কলেজ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, শিক্ষানগরীর রাজশাহী। কিন্তু এখানে সরকারি স্কুল-কলেজ হাতেগোনা। আগামীতে ছেলেদের দুইটি এবং মেয়েদের দুইটি সরকারি স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুর্নাঙ্গ কৃষি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।

সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাড. আবু রায়হান মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমান রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক আ.ন.ম ওয়াহিদ, নিউ গর্ভ. ডিগ্রি কলেজের সাবেক প্রো-ভিপি ফরিদ উদ্দিন, সাবেক ছাত্রনেতা আবু হেনা, দেশ ট্রাভেলস এর এমডি বজলুর রহমান রতন, কমরেড মাসুদ রানা, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ, সাধারণ সম্পাদক খালেদ ওয়াশি কেটু।

স/অ