রংপুরকে পরাজয়ের হ্যাটট্রিক স্বাদ দিয়ে জয়ে ফিরল কুমিল্লা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিলেন সৌম্য সরকার ও ভানুকা রাজাপাকশে। মাঝপথে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন সাব্বির রহমান। শেষদিকে দারুণ ফিনিশিং টাচ দিলেন ডেভিড মালান। তাতে রংপুর রেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এ রংপুরকেই ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা। তবে পরের ম্যাচে ঢাকা প্লাটুনের কাছে ২০ রানে পরাজিত হয়েছিল দাসুন শানাকা বাহিনী। তারা জয়ে ফিরলেও হ্যাটট্রিক পরাজয়ের স্বাদ নিল রংপুর।

১৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুরন্ত শুরু পায় কুমিল্লাও। উদ্বোধনী জুটিতে ঝড়োগতিতে ৬১ রান তোলেন সৌম্য ও রাজাপাকশে। ১৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩২ রান করে মোহাম্মদ নবীর বলে বিদায় নেন রাজাপাকশে। কিন্তু ওপেনিং পার্টনার হারিয়েও অবিচল ছিলেন সৌম্য। ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুরি। তবে আচমকা খেই হারান তিনি। মুকিদুল ইসলামের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার। ফেরার আগে ৩৪ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি।

পরে মালানকে নিয়ে এগিয়ে চলেন সাব্বির। ধীরে ধীরে জমাট বেঁধে ওঠে তাদের জুটি। এতে লক্ষ্যের পথে এগোতে থাকে কুমিল্লা। এর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার হয়ে ফেরেন সাব্বির। মাত্র ১ রানের জন্য ফিফটি বঞ্চিত হন তিনি। ৪০ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন এ হার্ডহিটার। ততক্ষণে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে কুমিল্লা। তাতে বাড়তি জ্বালানি জোগান মালান। তাণ্ডব চালাতে শুরু করেন তিনি।

এর মাঝে ১২ রান করে ফেরেন দাসুন শানাকা। তবে থেকে যান মালান। শেষদিকে দারুণ ফিনিশিং টাচ দেন তিনি। ২৪ বলে ৩ ছক্কার বিপরীতে ২ চারে ৪২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এ ইংলিশ ক্রিকেটার। শেষ অবধি ২ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে কুমিল্লা। রংপুরের হয়ে মোস্তাফিজ, মুগ্ধ, গ্রেগরি নেন ১টি করে উইকেট।

বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেন রংপুর অধিনায়ক নবী। তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণ করে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ও নাঈম শেখ। দারুণ শুরুর পর দলীয় ৪৯ রানে রানআউটে কাটা পড়েন নাঈম। তবে রয়ে যান শাহজাদ। কুমিল্লা বোলারদের ওপর রীতিমতো তোপ দাগান তিনি। পথিমধ্যে মাত্র ২১ বলে ফিফটি তুলে নেন এ হার্ডহিটার। এবারের বিপিএলে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি। প্রথমটি খুলনা টাইগার্সের রহমানউল্লাহ গুরবাজের। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে মাত্র ১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি।

অবশ্য ফিফটির পর বেশিক্ষণ শাহজাদ ঝড় চলেনি। সানজামুল ইসলামের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ২৭ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রংপুরের আফগান রিক্রুট। সেই রেশ না কাটতেই রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন আল-আমিন। এতে রানের চাকা স্লো হয়ে যায় তাদের। পরে নবীকে নিয়ে খেলা ধরার চেষ্টা করেন টম অ্যাবল। তবে রানের গতি একটু বাড়াতে গিয়ে ২৫ বলে ২৫ রান করে সৌম্য সরকারের বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি নবী। খানিক বাদে মুজিব-উর রহমানের বলে ২৬ রান করে ফেরত আসেন তিনি।

তাতে চাপে পড়ে রংপুর। সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন লুইস গ্রেগরি। তবে অতি আক্রমণাত্মক হয়ে খেলতে গিয়ে আল-আমিনের বলির পাঁঠা হন তিনি। বিদায় নেয়ার আগে ১২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২১ রানের ক্যামিও খেলেন এ ব্যাটার। পরক্ষণেই মুজিবের বলে প্লেড অন হন জহুরুল ইসলাম। এতদসত্ত্বেও শুরুটা শুভ হওয়ায় রানের গতি খুব একটা কমেনি রংপুরের। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে রানআউটে ফিনিশ হন নাদিফ চৌধুরী। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৮১ রান করে তারা। কুমিল্লার হয়ে মুজিব নেন সর্বোচ্চ ২ উইকেট।