যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার আফগানিস্তান ফুটবল-প্রধানের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বেশ কয়েক দিন আগে আফগানিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান কেরামুদ্দিন করিমের বিরুদ্ধে তিন নারী ফুটবলার যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। এই অভিযোগকে অস্বীকার করে তিনি জানিয়েছেন, মানহানির উদ্দেশ্যেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে

তিনজন আফগানি নারী ফুটবলার যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন দেশটার ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট কেরামুদ্দিন করিমের বিরুদ্ধে। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে, করিম কেরামুদ্দিনসহ অভিযুক্ত আরও চারজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দেশ ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না, এ নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। এই অবস্থায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট।

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সরাসরি অস্বীকার করে কেরামুদ্দিন করিম জানিয়েছেন, ‘এটা আমার সম্মানহানি করার জন্য একটা চক্রের কারসাজি। এসব অভিযোগ আমি অস্বীকার করছি। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তিই নেই। শুধুমাত্র পরিচয় না দিতে চাওয়া, চেহারা না দেখতে পাওয়া কয়েকজনের কণ্ঠস্বর এই অভিযোগ তুলেছে আমার দিকে। এতে কোনো কিছু প্রমাণ হয় না।’ ভয়ংকর এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে করিমকে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফাও।

বহির্বিশ্বের কাছে আফগানিস্তানের মানহানি করার হীন উদ্দেশ্য নিয়ে অভিযোগকারীরা এমন কাজ করছে বলে মনে করছেন করিম, ‘যারা এসব অভিযোগ করছে, তারা আফগানিস্তান ছেড়ে ইউরোপে থাকতে চায়, বাইরের বিশ্বের কাছে আমাদের দেশের, আমাদের ফেডারেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায়। এমন শত্রু আফগানিস্তানের ভেতরে ও বাইরে ছড়িয়ে আছে অনেক।’ এসব অভিযোগের প্রভাব তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের পড়ছে বলে জানিয়েছেন দুই স্ত্রী ও ১১ সন্তানের জনক, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল তদন্ত করে দেখবেন এসব অভিযোগের সত্যতা আদৌ আছে কি নেই। একজন স্বামী হিসেবে, একজন পিতা হিসেবে অনেক যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছি আমি।’

এদিকে নারী ফুটবল দলের সাবেক সহকারী কোচ হেলি কার্টার জানিয়েছেন যথাযথ তদন্তে যে দোষী হিসেবে বের হয়ে আসবেন, তাকেই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে, ‘নারী খেলোয়াড়েরা তাদের অভিযোগ আমাকে জানিয়েছে, অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণও দেখিয়েছে আমাকে। তাই করিম যদি মনে করে থাকেন অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই, সেটা হাস্যকর।’

গত সপ্তাহে তিনজন নারী ফুটবলার দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের প্রধানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানকে জানান, তারা যৌন হয়রানির শিকার। ফেডারেশন প্রধান তাঁদের এই বলেও হুমকি দিয়েছিলেন, যে এসব কথা ফাঁস করলে জীবনশঙ্কায় পড়তে হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবার পরিবার। একজন নারী ফুটবলার ঘটনার ভয়াবহতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, করিমের অফিসের মধ্যে গোপন শয়নকক্ষে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন তিনি, খেয়েছেন ঘুষিও। আরেকজনের অভিযোগ, করিম তাঁর ঘাড় ও ঠোঁটে চুমু দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে তাঁকে সমকামী আখ্যা থেকে দল থেকেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন! আরেকজনের অভিযোগ, করিম তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে চেয়েছেন।

অভিযুক্ত কেরামুদ্দিন করিম আফগানিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পাশাপাশি দেশটার একজন রাজনীতিকও বটে। আফগানিস্তানের পাঞ্জশির এলাকার গভর্নর ছিলেন তিনি।