যে ৫ কারণে ফাইনালে হারল ভারত

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

দীর্ঘ ১২ বছর পর দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ জেতা হল না ভারতের। ভারতকে কাঁদিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘরে তুলল অস্ট্রেলিয়া। বোলারদের নৈপুণ্যের পর ট্রাভিস হেডের অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ফাইনালে ৬ উইকেটের বড় জয় পান প্যাট কামিন্সরা।

ফাইনালে বেশ কয়েকটি কারণে ভারত শিরোপা খুইয়েছে। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম এই হারের পাঁচটি কারণ তুলে ধরেছে।

১) টসে হার: আমদাবাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল টস। অনেক বড় বড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা বলেছিলেন, টসে জিতে চোখ বুজে ব্যাট করা উচিত ছিল। রোহিত টসে হারলেন বটে, কিন্তু বিপক্ষ অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বোলিং নেওয়ায় স্টেডিয়ামের এক লাখ দর্শক চিৎকার করে উঠেছিল। অস্ট্রেলিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা মুণ্ডপাত করছিলেন অসি অধিনায়কের। দিনের শেষে দেখা গেল, কামিন্স নির্ভুল। ভারত ব্যাট করার সময় পিচ প্রচণ্ড মন্থর এবং শুকনো ছিল। ফলে বল দেরিতে ব্যাটে আসছিল। রান করা সহজ হচ্ছিল না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সময় পরিস্থিতি পুরোপুরি পাল্টে গেল। সন্ধ্যা ৭টা গড়াতেই শিশির পড়তে শুরু করল। ভারতের জন্যে পরিবেশ আরও খারাপ হয়ে গেল। ম্যাচও বেরিয়ে গেল ওখানেই। দিনের শেষে তাই নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে নায়ক কামিন্সই।

২) ব্যাটিংয়ে কোনো ‘প্ল্যান বি’ না থাকা: সেমিফাইনাল এবং ভারতের অন্যান্য ম্যাচগুলিতে ব্যাটিংয়ের সময় একটা দ্বিতীয় পরিকল্পনা ছিল। ক্রিজে দুই ওপেনার থাকার সময় একজন ধরে খেলছিলেন, আরেকজন আক্রমণ করছিলেন। কেউ আউট হলে নতুন যিনি নামছিলেন তিনি ধরে খেলছিলেন, অপরজন মারছিলেন। কিন্তু ফাইনালে ভারতের ব্যাটিংয়ে কোনো দ্বিতীয় পরিকল্পনা চোখে পড়েনি। কোহলি এবং রাহুলের জুটি বাধে কেউ বুদ্ধি কাজে লাগাতে পারেননি।

৩) লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যর্থ: ফাইনালেই সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে বসেছিল লোয়ার মিডল অর্ডার। অর্থাৎ রবীন্দ্র জাডেজা এবং সূর্যকুমার যাদবের ব্যাট। ম্যাচের আগে এই বিষয়টিকে খামতি হিসাবে ধরা হয়েছিল। সেটা খামতিই থেকে গেল। জাডেজা মোটে ৯ রান করলেন। সূর্য মাত্র ১৮। দ্বিতীয়জন কী যে ব্যাট করলেন কিছু বোঝাই গেল না। টি-টোয়েন্টির নায়ক এক দিনের ক্রিকেটে ডাহা ফেল। আর তাঁকে এই দলে রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না ভেবে দেখা দরকার।

৪) প্রচুর অতিরিক্ত রান দেওয়া: অস্ট্রেলিয়া ফিল্ডিংয়ে খুব কম করে হলেও ৪০-৪৫ রান বাঁচিয়েছে। অসাধারণ ফিল্ডিং করেছে তারা। অতিরিক্ত রান দিয়েছে মোটে ১২। সেখানে ভারতের ফিল্ডারেরা যথেষ্ট বল গলালেন। সহজ বলও পায়ের তলা দিয়ে গলিয়ে দিলেন রাহুল। শামি এতটা বাইরে বল করলেন যে রাহুল ঝাঁপিয়েও ধরতে পারলেন না। এ রকমই প্রচুর রান ফিল্ডিংয়েই গলিয়ে দিল ভারত। ফলে অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া করা আরও সহজ হয়ে গেল।

৫) প্রথম ৭ ওভারের পর ভারতের বোলিংয়ের ধার কমে যাওয়া: প্রথম বলেই ক্যাচের সুযোগ দিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। কাজে লাগাতে পারেনি ভারত। পরের দিকে ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ এবং স্টিভ স্মিথ ফিরে যান। সাত ওভার এবং ৪৭ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ৩টি উইকেট ফেলে দেওয়ার পর রক্তের স্বাদ পেয়ে যাওয়া উচিত ছিল ভারতীয় বোলারদের। কিন্তু এর পরেই ভারতীয় বোলারদের ধার কমে গেল। কাউকে এনেই সাফল্য পাওয়া যাচ্ছিল না। এর জন্যেও পরিস্থিতি দায়ী। পিচ থেকে এক ফোঁটা সাহায্য পাওয়া যায়নি।