শুক্রবার , ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ | ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

যে কারণে নতুন ব্যাংক অনুমোদনে লাগবে হাজার কোটি টাকা

Paris
জানুয়ারি ২৫, ২০১৯ ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নতুন ব্যাংক অনুমোদনে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে। একই পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন বাধ্যতামূলক হচ্ছে পুরনো ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও।

সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে এ সংক্রান্ত আদেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের অংশ হিসেবে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে আগামীতে কোনো নতুন ব্যাংক এলে এর ভিত্তি শক্ত হবে। পাশাপাশি বিগত কয়েক বছরে অনুমোদন পাওয়া ৯ ব্যাংকের মতো দুর্বল পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কা থাকবে না- এমনটি মনে করছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, এ মুহূর্তে নতুন ব্যাংক করতে হলে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৪শ’ কোটি টাকা বাধ্যতামূলক।

সেই অনুযায়ী বর্তমান সরকারি-বেসরকরি প্রতিটি ব্যাংককের ৪শ’ কোটি টাকা করে পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ যুগান্তরকে বলেন, অর্থমন্ত্রীর এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।

সরাসরি আর ব্যাংক দেয়া হবে না- এটি না বলে পরিশোধিত মূলধন এক হাজার কোটি টাকা করে দেয়া হবে। এর মাধ্যমে নতুন ব্যাংক আসাকে নিরুৎসাহিত করা হবে। সেদিক থেকে এটি একটি ভালো উদ্যোগও। এর বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ব্যাংকিং) ফজলুল হক  বলেন, অর্থমন্ত্রীর এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ প্রথমে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংস্কার করতে হবে। বর্তমান আইনে একটি নতুন ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য ৪০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন রাখার বিধান রয়েছে। এটি পরিবর্তন করতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে।

২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত নতুন ৯টি ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এগুলো হল- ইউনিয়ন ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক, সাউথ-বাংলা ব্যাংক, এনআরবিজি ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংক।

অনুমোদন পাওয়ার পরপরই ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণের কবলে পড়েছে এসব ব্যাংক। এতে আর্থিক ঝুঁকি বাড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হচ্ছে ফারমার্স ব্যাংকের। এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার ৭১ কোটি টাকা। আর ৩৫০ কোটি টাকা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে এনআরবিসি ব্যাংক এবং ২৩৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে মেঘনা ব্যাংক।

শুধু তা-ই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা থাকায় এবং প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে কিছু ব্যাংক আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকে পড়ে। তারই মাশুল দিয়ে যাচ্ছে এখন। এগুলো বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়া তো দূরের কথা, কোনোমতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এমনকি ফারমার্স ব্যাংক তো দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই এটিকে কোনোমতে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।

এদিকে নতুন ব্যাংকের বিষয়ে বরাবরই বিরোধিতা করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, বাংলাদেশে ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেছে। বর্তমান অবস্থায় দেশে আর ব্যাংকের প্রয়োজন নেই। সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা এমনিতেই খারাপ।

এ পরিস্থিতিতে নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া কোনোভাবেই উচিত হবে না। কারণ নতুন ব্যাংক অনুমোদন অর্থনীতির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না, তা সহজেই বোঝা যায় নতুন ব্যাংকের পাশাপাশি গোটা ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি ও লাগামহীন খেলাপি ঋণ থেকে।

এ ছাড়া যেখানে বিদ্যমানগুলো ভালো ব্যবসা করতে পারছে না, সেখানে নতুন উদ্যোক্তা কেন আসছে- এমন প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক।

সর্বশেষ - জাতীয়