যেসব কারণে ধুঁকছে এয়ারলাইন্সগুলো

> লিটারপ্রতি জেট ফুয়েলে ১২ টাকা বেশি দিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো
>> অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি গুনতে হচ্ছে এভিয়েশন চার্জ
>> যন্ত্রাংশ আমদানিতে উচ্চহারে ট্যাক্স— এ খাতের নীরব ঘাতক
>> ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ফি

করোনাকালে প্রায় তিন মাস বন্ধ ছিল দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ চলাচল। থেমে ছিল না খরচ। উড়োজাহাজ আকাশে ডানা মেলুক আর না মেলুক, এর পেছনে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মোটা অঙ্কের। এর ওপর লিজে আনা উড়োজাহাজের ভাড়া পরিশোধ, সিভিল এভিয়েশনের অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ, কর্মীদের বেতন, অফিস ভাড়াসহ বিভিন্ন ব্যয় টানতে গিয়ে তছনছ বাংলাদেশের এভিয়েশন খাত।

ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠান টানছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, পাঁচ মাস ধরে আকাশে উড়ছে না রিজেন্ট, সরকারি নিয়মনীতি মেনে সীমিতভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। লাভ-তো দূরের কথা, ছোট হয়ে এসেছে আকাশপথ; ক্ষতির অঙ্ক বেশ বড়। তিন-চার মাস ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এভিয়েশন খাতে এর চেয়ে বড় বিপর্যয় আর দেখা যায়নি।

মহামারি করোনার কারণে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের সার্বিক অবস্থা এবং বর্তমান ক্ষতি পুষিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে করণীয় নিয়ে এ খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে। তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথমটি।

‘অযৌক্তিক’ তেলের দাম, দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছে এয়ারলাইন্সগুলো

২০১৩ সালের দিকে অভ্যন্তরীণ রুটে বছরে প্রায় ছয় লাখ ৪৮ হাজার যাত্রী আকাশপথে যাতায়াত করতো। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দিকে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ লাখে। তবে সম্ভাবনাময় এ সেক্টরে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অতিরিক্ত তেলের (জেট ফুয়েল) দাম এবং তেলের দাম নির্ধারণে অসামঞ্জস্যতা ও বৈষম্য।

biman-02.jpg

সর্বশেষ করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) অভ্যন্তরীণ রুট পরিচালনার ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলোকে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ৪৯ টাকা নির্ধারণ করে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এ দাম পরে শূন্য দশমিক ৪৪ মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৩৭ টাকা (সর্বশেষ ৫ আগস্ট ২০২০ থেকে কার্যকর) নির্ধারণ করা হয়। তেল কেনার জন্য বিদেশিদের চেয়ে দেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে প্রতি লিটারে ১২ টাকা বেশি দিতে হয়। ফলে দেশের এয়ারলাইন্সগুলো খরচ বাঁচাতে বিদেশে গিয়ে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। অর্থ চলে যাচ্ছে বিদেশে।

একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, এয়ারলাইন্স পরিচালনায় জ্বালানির ব্যয় বাবদ ৪০ শতাংশ অর্থের খরচ হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এ খরচ আরও বেড়েছে। দেশি এয়ারলাইন্সগুলো যখন দেশ থেকে জ্বালানি কেনে তখন আমাদের কাছ থেকে প্রতি লিটারে ১২ টাকা বেশি নেয়। একই জ্বালানি যখন বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো কেনে তখন তাদের কাছ থেকে ১২ টাকা কম রাখা হয়। এ বৈষম্য কেন? ২০১৮ সালের দিকে তেলের দামের ব্যবধান ছিল ২৫ টাকা। বর্তমানে এ ব্যবধান কমে ১২-তে ঠেকলেও মহামারির কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য এটা এখন অনেক বড় মাথাব্যথার কারণ।

অতিরিক্ত দামের কারণে বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো ফুয়েলের ট্যাঙ্কি সম্পূর্ণ না ভরে অনেক সময় সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালামপুরে গিয়ে জ্বালানি সংগ্রহ করে। বর্তমানে অতিরিক্ত দামে দেশ থেকেই তেল নিতে হচ্ছে।

পাশের দেশের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দামের তুলনা করে তিনি আরও বলেন, ভারত জুলাইয়ে তাদের জেট ফুয়েলের দাম দেড় শতাংশ বাড়িয়েছে। এরপরও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য দিল্লি বিমানবন্দর (টার্মিনাল-৩) থেকে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল ৩৫.১৪৬ রুপি অর্থাৎ প্রায় ৪০ টাকা নিচ্ছে। কয়েক দফা মূল্যবৃদ্ধির পরও দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে এখনও ৯ টাকা কমে তেল বিক্রি হচ্ছে।

biman-02.jpg

ভোগাচ্ছে অতিরিক্ত চার্জ

বাংলাদেশে বর্তমানে কমপক্ষে ১০ হাজার কেজি ওজনের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ল্যান্ড করাতে চার হাজার ৪৩৬ টাকা এবং একই ওজনে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫৩০ টাকা দিতে হচ্ছে। বড় ফ্লাইটের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন লাখ ২৩ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করতে হচ্ছে। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য ল্যান্ডিং চার্জ সর্বনিম্ন ৩৭৭ টাকা।

অন্য কোনো ক্ষেত্র না দেখে শুধুমাত্র ওজনের ভিত্তিতে ফ্লাইট ল্যান্ডিং চার্জ নির্ধারণেও বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেসরকারি এয়ারলাইন্সের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা থেকে কক্সবাজার ও কলকাতা বিমানবন্দরের দূরত্ব প্রায় একই। দুই রুটের ভাড়াও প্রায় সমান। অথচ কক্সবাজার ফ্লাইটটি যখন ঢাকায় অবতরণ করে তখন সর্বনিম্ন ল্যান্ডিং চার্জ ৫৩০ টাকা দিতে হয়। একই দূরত্ব এবং একই ভাড়া দিয়ে আসা কলকাতার ফ্লাইটের জন্য গুনতে হয় প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা। ভারত-নেপালসহ আশপাশের আন্তর্জাতিক গন্তব্যের যাত্রী থেকে প্রায় কাছাকাছি ভাড়া নেয়া হয়। আমাদের খরচ এক্ষেত্রে বেশি হচ্ছে। এ জিনিসগুলো ফিগার আউট (খুঁজে বের করা) না করলে করোনা-পরবর্তীতে আমাদের টিকে থাকা দায় হয়ে দাঁড়াবে।

এছাড়া একটি ফ্লাইটকে বোর্ডিং ব্রিজ ব্যবহার বাবদ আট হাজার ৪৫০ থেকে ২১ হাজার ১২৫ টাকা, রুট নেভিগেশনের জন্য (আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে ৩৮ হাজার এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৭৫ থেকে তিন হাজার ৭৫০ টাকা দিতে হয়। প্রতিটি ফি পাশের দেশ ভারতের চেয়ে প্রায় দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি।

আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের ৫০০ টাকার এম্বারকেশন (জাহাজে আরোহণ) ফি এবং অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের ২৫ টাকা হারে ফি পরিশোধ করতে হয়। এই টাকা বিমানবন্দরের পক্ষে এয়ারলাইন্সগুলো টিকিটের মাধ্যমে সংগ্রহ করে। বর্তমানে এম্বারকেশন ফিসহ বোর্ডিং-ল্যান্ডিং চার্জগুলো সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে প্রতি বছর ৭২ শতাংশ সারচার্জসহ পরিশোধ করতে হচ্ছে। যেটি ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ বলছে এয়ারলাইন্সগুলো। তারা বলছে, সারচার্জ সর্বোচ্চ ৬-৮ শতাংশ হলে যৌক্তিক হবে।

গত মে মাসে দেশের এভিয়েশন খাতকে বাঁচাতে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর এভিয়েশন চার্জ (অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল উভয়ই) মওকুফ করতে বৈঠকে বসে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক। বৈঠকে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সের জন্য কিছু এভিয়েশন চার্জ মওকুফসহ প্রাথমিকভাব কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে তা পাসের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি অর্থ মন্ত্রণালয়।

biman-02.jpg

এ বিষয়ে এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এওএবি) সাধারণ সম্পাদক ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনের অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জগুলো অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় ৭ থেকে ১০ গুণ বেশি পরিশোধ করতে হয়। সাধারণত জ্বালানি তেল, গ্যাস বা অন্যকিছুর দাম বাড়ানোর আগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। কিন্তু আমাদের এভিয়েশনের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম অনুপস্থিত। অতীতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি এয়ারলাইন্স সংস্থাগুলোর সঙ্গে কোনো আলাচনা ছাড়াই বিভিন্ন ফি ও চার্জ বাড়িয়েছে।

সুদের হার বেশি, ট্যাক্সও আকাশচুম্বী

এভিয়েশন ব্যবসায় বিনিয়োগ বেশি, আয় কম। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ও পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি। বিশ্বের ব্যাংকগুলো এভিয়েশন খাতে এক থেকে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশে এ খাতকে সাধারণ খাত ধরে কখনও কখনও দুই অঙ্কের ঘরে সুদ ধরে ঋণ দেয়া হচ্ছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়া অন্যান্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সকে উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ আমদানিতে অনেক বেশি ট্যাক্স দিতে হয়। খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে ক্ষেত্রবিশেষ ১৫ থেকে ১৫০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হচ্ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এমনিতে উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশের দাম বেশি, এর মধ্যে উচ্চহারে ট্যাক্স আদায় দেশের এভিয়েশন খাতে নীরব ঘাতকের ভূমিকা পালন করছে— মনে করেন এ খাতের বিশ্লেষকরা।

এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, প্রতিটি উড়োজাহাজকে সচল রাখতে অনেক সময় স্বল্প সময়ের মধ্যে দাম পরিশোধ করে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয় এলসির মাধ্যমে, যাতে সময়ক্ষেপণ হয়। এলসির মাধ্যমে উড়োজাহাজের খুচরা যন্ত্রাংশের আমদানির নজির বিশ্বের কোথাও নেই।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটা এয়ারলাইন্সের পরিচালন ব্যয়ের ৪০ শতাংশই হলো ফুয়েল (জ্বালানি তেল) খরচ। বাংলাদেশের জেট ফুয়েলের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দামে বড় ধরনের হেরফের রয়েছে। এয়ারলাইন্স টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এটা যেন একটা যৌক্তিক পর্যায়ে আনা হয়, এমন দাবি রইল।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের ৭০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার বিদেশি এয়ারলাইন্সের কাছে। বাকি ৩০ শতাংশ দেশীয়দের হাতে। এভাবে বারবার হোঁচট খেলে আরও শেয়ার বিদেশিদের হাতে চলে যাবে। দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমাদের সাময়িক প্রণোদনা না দিয়ে তেলের দাম, অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা করা উচিত।

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ২৩ বছরের ইতিহাসে বর্তমানে মাত্র দুটি (ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার) টিকে আছে। বাকিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল তারল্য সংকট, এয়ারক্রাফট চয়েস, রুট চয়েস ও ফ্লাইট টাইমিংয়ের ভুল সিদ্ধান্ত। তবে দায় শুধু এয়ারলাইন্সের একার নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বেবিচকেরও উচিত এয়ারলাইন্সকে টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা।’

biman-02.jpg

‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ফি

করোনাকালীন এমনিতেই উড়োজাহাজের যাত্রী কম, এর ওপর গত ১৬ আগস্ট থেকে যুক্ত হয়েছে যাত্রী নিরাপত্তা ও বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি। সার্কভুক্ত দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি দিতে হচ্ছে পাঁচ মার্কিন ডলার এবং যাত্রীর নিরাপত্তা ফি দিতে হচ্ছে ছয় মার্কিন ডলার। সার্কভুক্ত ছাড়া অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি দিতে হচ্ছে ১০ মার্কিন ডলার এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফিও ১০ মার্কিন ডলার গুনতে হচ্ছে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে যাত্রীদের প্রতিবার ভ্রমণে বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি দিতে হচ্ছে ৭০ টাকা।

বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, বেবিচকের আরোপ করা এসব ফি উড়োজাহাজের টিকিট কেনার সময় পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে টিকিটের মূল্য বেড়েছে। এমনিতে আকাশপথে যাত্রী কম, এ মুহূর্তে টিকিটের দাম বেশি নিলে অনেকেই ভ্রমণে নিরুৎসাহিত হবেন।

এসব বিষয়ে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোর্ড অব ডিরেক্টরস’র সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে বর্তমানে তারল্য সংকট রয়েছে। তিনটি বাদে সব রুট বন্ধ। পাশাপাশি বাকি এয়ারলাইন্সগুলো তাদের আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কবে যেতে পারবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফিরতে না পারলে আমাদের এয়ারলাইন্সগুলো টিকবে কিনা- তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’

পাশাপাশি আমরা দেখতে পাচ্ছি, সম্প্রতি বেবিচক যাত্রীদের ওপর বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি ও যাত্রী নিরাপত্তা ফি বসিয়েছে। এটি কার্যকরও হয়েছে। বেবিচকের এমন সিদ্ধান্তে আকাশপথের ভাড়া বাড়লো। করোনার সময়ে যাত্রী সংখ্যা এমনিতেই কম, নতুন করে ভাড়া বাড়ায় আকাশপথে ভ্রমণে আরও নিরুৎসাহিত হবেন যাত্রীরা। এটি এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়াবে’— বলেন কাজী ওয়াহিদুল আলম।

সূত্র: জাগো নিউজ