যা বললেন চেয়ারে বসে থেকে সমালোচিত সেই নারী ইউএনও

নরসিংদীর মনোহরদীর চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন গত মঙ্গলবার। বিকেল পাঁচটায় জানাজা নামাজ। দলীয় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সম্মান জানাতে মহামারি করোনা সংক্রমণকে উপেক্ষা করে সেখানে নিজে জানাজা নামাজে উপস্থিত হন স্থানীয় সাংসদ ও শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। নামাজে যখন দলীয় নেতাকর্মীরা মরহুম নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন, তখন ঠাঁই দাঁড়িয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু তখন পাশেই চেয়ারে বসা ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু। এমন একটি ছবি দিনব্যাপী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আর তা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। জেলাব্যাপী হচ্ছে মিশ্র সমালোচনা।

এ ব্যাপারে ইউএনও শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, একজন মানুষ হিসেবে আমার সবসময় চেষ্টা থাকে সবাইকে সম্মান ও সহযোগিতা করার। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে স্মৃতিচারণ করার সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ যখন দীর্ঘ বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন মন্ত্রী মহোদয় চেয়ার থেকে উঠে বলেন বক্তব্য ছোট করতে। সময়টা ২-৩ সেকেন্ডের। এরই মধ্যে কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে একটা ছবি তোলে তা ভাইরাল করে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এক নেতা বলেন, ইউএনও শাফিয়া আক্তার শিমু নিজেই পরিচয় দেন তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় ওনার চাকরি হয়। সেখানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় রাষ্ট্রীয় সম্মান জানাতে গিয়ে একজন মন্ত্রী যখন দাঁড়িয়ে, ঠিক তখন একজন ইউএনও চেয়ারে বসে থাকেন কিভাবে তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এটা বেয়াদাবির চূড়ান্ত পর্যায়। তার আগেও চরমান্দালিয়া ইউনিয়নের একজন মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল।

নেতাকর্মীরা জানান, মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফজলুল হকের বড় ভাই সিরাজুল হক। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। খবর শুনেই দলীয় নেতাকে সম্মান জানাতে ছুটে আসেন শিল্পমন্ত্রী। জানাজার নামাজে মরহুমের স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা যখন মাইকে শোক মঞ্চে স্মৃতিচারণ করছিলেন, তখন শিল্পমন্ত্রী চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যান। কিন্তু তখন ইউএনও শাফিয়া আক্তার শিমু চেয়ারে বসেছিলেন।

সূত্র কালের কন্ঠ