যারা পরীমণিকে দেখতে এসেছেন, দেখে বের হয়ে যান:বিচারক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণির আরও একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকালে পরীকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এদিকে শুনানি করা সময় অন্যদিনের মতো আজও এজলাসে আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল দেখা গেছে। পরীমণিকে জামিন ও রিমান্ড শুনানির জন্য হাজির করলে শতাধিক সাধারণ আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা বিচারকক্ষে ভিড় করেন। কানায় কানায় পূর্ণ বিচারকক্ষে হইচই ও শোরগোল শুরু হয়।

এসময় বিচারক আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেউ যদি পরীমণিকে দেখার জন্য এজলাসে প্রবেশ করেন তাহলে একটু দেখে বের হয়ে যান। আমাদেরকে শুনানি করার জন্য সময় দিন।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু সবাইকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যাদের এই কোর্টে মামলার শুনানি নেই, তারা দয়া করে বের হয়ে যান। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।’

এরপরেও কোনো আইনজীবী বের না হওয়ায় বিচারক আতিকুর রহমান বলেন, ‘আপনারা যাঁরা উনাকে (পরীমণিকে) দেখতে এসেছেন, তাঁরা দেখে চলে যান। আপনারা ভিড় কমান, অন্যথায় শুনানি সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এরপরেও কোনো সাধারণ আইনজীবী কোর্ট রুম থেকে বের হননি। বেশিরভাগ আইনজীবী পরী মণিকে দেখার জন্য কোর্ট রুমে অবস্থান করতে থাকেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে ভিড় কমানোর চেষ্টা করা হলেও কেউ বের হননি। পরে আদালত বলেন, ‘সবাই নীরব থাকুন, শুনানির জন্য সহযোগিতা করুন। পরে ১১টা ৪৮ মিনিটে শুনানি শুরু হয়।’

অপরদিকে, আদালতে আনা পরীমণির সঙ্গে দেখা করতে ছুটে এসেছেন তার নানা ও খালাতো ভাই মেহেদী। আজ সকাল ১১টা ২০ মিনিটের দিকে তারা আদালত প্রাঙ্গণে আসেন। পরীমণির খালাতো ভাই মেহেদী বলেন, তিনি নানাকে আদালতে আনার জন্য পিরোজপুর থেকে এসেছেন।

গত ৪ আগস্ট পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‍্যাব। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে তারা। তার ড্রয়িংরুমের কাবার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম এবং বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল মদের বোতল উদ্ধার করা হয় বলেও দাবি করা হয়। পরদিন বিকেলে পরীমণি, প্রযোজক ও অভিনেতা মো. নজরুল ইসলাম রাজ এবং তাদের দুই সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু ও মো. সবুজ আলীকে বনানী থানায় সোপর্দ করে র‍্যাব।

এরপর র‍্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। রাত ৮টা ২৪ মিনিটে পরীমণি ও তার সহযোগীকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাদের ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এরপর ১০ আগস্ট পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আদালতে হাজির করে ফের ৫ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুই দফায় রিমান্ড শেষে গত ১৩ আগস্ট পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সূত্র: কালের কন্ঠ