যাদের ঝলকে কাঁপবে ভবিষ্যৎ ফুটবল বিশ্ব

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ফুটবলে বর্তমান সময়ের সেরা খেলোয়াড় কারা? এ প্রশ্নটি করলে সবাই প্রথমে বলবে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম। এরপরে নাম আসবে নেইমার, হ্যাজার্ড, হ্যারি কেইন, সালাহ বা কেভিন ডি ব্রুইনের নাম। অনেকে হয়তো লেভানডস্কি, মার্কো রঈস বা গ্রিজমানের নামও বলবেন। একটি ঋতুকে বিদায় দিয়ে নতুন একটি ঋতুকে গ্রহণ করা যেমন প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম, তেমনই ফুটবলে একটি প্রজন্মকে বিদায় দিয়ে আরেক প্রজন্মকে গ্রহণ করে নিতেই হয়।

ঠিক একইভাবে মেসি ও রোনালদোর বিদায়ের পর তাদের শূন্যতা পূরণের জন্য অনেকেই তৈরি আছেন। কিন্তু তারপরের প্রজন্ম! বর্তমান ফুটবলের তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলাররা কি সেরাদের সেরা স্তরে যাবার যোগ্য? পাঠক, আজ সেরকম কয়েকজন তরুণ প্রতিভাধর ফুটবলারদের নিয়ে আলোচনা করবো, যারা ভবিষ্যৎ ফুটবলের সেরার মঞ্চে যাবার ক্ষমতা রাখেন।

উসমান ডেমবেলে (বার্সেলোনা, ফ্রান্স)

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ডেমবেলে

উসমান ডেমবেলে বর্তমানে বিশ্বে চতুর্থ দামি খেলোয়াড়। এ মৌসুমে তাকে দলে আনতে বিরাট অঙ্কের অর্থ খরচ করে বার্সেলোনা। অথচ এই ডেমবেলে ২০১৫-১৬ সিজনে খেলতেন রেঁনে নামক এক অখ্যাত দলে। এক সিজনে ২৬ ম্যাচে ১২ গোল এনে দেয় বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডে খেলার সুযোগ। সেখানে আলো ছড়িয়ে ডেমবেলে আজ বার্সেলোনায়। সাধারণত রাইট উইং বা রাইট মিডফিল্ডার পজিশনে খেলে থাকেন তিনি। দুর্দান্ত গতির সাথে ড্রিবলিংয়ে পারদর্শী এই ফ্রেঞ্চ উইঙ্গার। গোল করা থেকে যেন গোল করাতেই তার বেশি আগ্রহ। বার্সেলোনায় এসে মাত্র ২টি গোল করলেও অ্যাসিস্ট করেছেন ৮টিতে। বয়স মাত্র ২০! এত অল্প বয়সেই যেভাবে আস্থা কেড়ে নিচ্ছেন, আলো ছড়ানোর মোক্ষম সময় তো এখনো বাকি।

মার্কো অ্যাসেনসিও (রিয়াল মাদ্রিদ, স্পেন)

অ্যাসেনসিও এরকম উদযাপন ট্রেডমার্ক বানিয়ে ফেলেছেন

মার্কো অ্যাসেনসিও বর্তমানে স্পেনের সেরা তরুণ প্রতিভা। এসপানিওল থেকে এসে মাদ্রিদের বেঞ্চে থেকেও যেভাবে এ সিজনে খেলে যাচ্ছেন তাতে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই। দুর্দান্ত গতি আর ড্রিবলিংয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বাঁপাশে যেভাবে ঝড় তুলছেন, তাতে এখনই তাকে রোনালদোর উত্তরসূরি ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন মাদ্রিদ সমর্থকেরা। জিদানের কাছ থেকে চলতি সিজনে ভালো খেলার সময় পেয়েছেন অ্যাসেনসিও। ৪৯ ম্যাচে ১১ গোল ও ৮ অ্যাসিস্ট করে অর্জন করেছেন “সুপার সাব” এর তকমা। সিজন শেষমুহুর্তে তার সম্পর্কে নানারকম গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে মিডিয়াতে। কিন্তু যেভাবে নজর কেড়ে নিয়েছেন, রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যতকে কিনতে হলে যে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হবে, তা না বললেও চলে।

লিওন বেইলি (বায়ার লেভারকুসেন/ জ্যামাইকা)

লিওন বেইল

বুন্দেসলিগার খোঁজখবর রাখলে লিওন বেইলকে চেনার কথা। এফসি গেন্ত থেকে বায়ার লেভারকুসেনে এসে এবার জার্মান ফুটবল মাত করে দিয়েছেন। তার দুর্নিবার গতিকে উসাইন বোল্টের সাথে তুলনা করা হয়। ২০ বছর বয়সের এই উইঙ্গারের গতির সাথে খাপ খাওয়ানোই যে মুশকিল! বুন্দেসলিগায় চলতি মৌসুমে লেভারকুসেনের হয়ে ৩৩ ম্যাচে করেছেন ১২ গোল ও ৬ অ্যাসিস্ট। বেইলির প্রায় প্রতিটি গোল হয়েছে দুর্দান্ত সলো রান ও নিখুঁত ফিনিশিংয়ের মাধ্যমে। এমন নজরকাঁড়া পারফর্মেন্সে এখনই বেইলিকে দলে টানতে ইচ্ছুক চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো ক্লাব। শুধু ক্লাবগুলো নয়, জামাইকান এ স্পিডস্টারকে জাতীয় দলে অভিষেক করার জন্য আদাজল খেয়ে নেমেছে ইংল্যান্ড। স্রোতের তোড়ে হারিয়ে না গেলে ভবিষ্যৎ ফুটবলে লিওন বেইলিকে সেরা উইংগারের কাতারে দেখলে অবাক হবেন না নিশ্চয়ই।

আর্থার মেলো (গ্রেমিও, ব্রাজিল)

আগামী মৌসুমে ক্যাম্প ন্যুতে দেখা যাবে আর্থারকে

বর্তমানে ব্রাজিলের তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের মধ্যে আর্থারের নাম সবথেকে উপরে থাকবে। ২১ বছর বয়সী আর্থার সাধারণত সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার পজিশনে খেলে থাকেন। তার সবথেকে চমৎকার দিক হলো একজন মিডফিল্ডার হয়েও অ্যাটাকে অবদান। তার গোলের সুযোগ তৈরির দক্ষতা যথেষ্ট ভালো। পাসিং, বল কন্ট্রোল, প্লে মেকিং এবং ড্রিবলিং- সবকিছুর সমন্বয়ে গ্রেমিওর ইঞ্জিন বলা হয় থাকে আর্থারকে। তার মতো এমন শৈল্পিক খেলোয়াড় বার্সেলোনা ক্লাবের সাথে মানায় ভালো। তাই বার্সেলোনাও দেরি করেনি, প্রি-কন্ট্রাক্ট করে রেখেছে গ্রেমিওর সাথে। আগামী মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে খেলতে দেখা যাবে এ ব্রাজিলিয়ানকে।

মাথিজিস ডি লিখেট (আয়াক্স,নেদারল্যান্ড)

নেদারল্যান্ডের ভবিষ্যৎ ভরসা

কতটা প্রতিভাবান হলে কেউ লিগে মাত্র ২ ম্যাচ খেলে জাতীয় দলে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে? ১৮ বছর বয়সে যখন নেদারল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে মাথিজিস ডি লিখটের অভিষেক হয়, আয়াক্সের হয়ে তিনি সবেমাত্র ২টি ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন। যদিও এই দুটি ম্যাচ নয়, ডি লিখটের স্কাউট করা হচ্ছে তার উত্থানের অনেক আগে থেকেই। আয়াক্স ও নেদারল্যান্ডের হয়ে এ পর্যন্ত ৫৯ ম্যাচ খেলেছেন তিনি,  গোল করেছেন ৭টি। তবে একজন সেন্ট্রাল-ব্যাক ডিফেন্ডারকে গোলের সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা করা যায় না। লিখটের ডি-বক্স থেকে নিখুঁত পাস, ঠাণ্ডা মাথায় ট্যাকল ও প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে কড়া মার্কিংয়ে রাখার দক্ষতা মনে করায় ফ্রাঙ্ক ডি বোয়ের বা জাপ স্ট্যামের যুগের কথা। বর্তমান ফুটবলে সবথেকে সেরা ইয়াং সেন্ট্রাল-ব্যাক ডিফেন্ডারের উপর অচিরেই চোখ পড়ে গেছে বার্সেলোনার। হয়ত ভবিষ্যতে তিনিই হবেন বার্সেলোনা ও নেদারল্যান্ডের রক্ষণ ভরসা।

গ্যাব্রিয়েল জেসুস (ম্যানচেস্টার সিটি, ব্রাজিল)

ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে জেসুস

ব্রাজিল দল একজন স্ট্রাইকারের শূন্যতা অনেকদিন থেকে অনুভব করছিলো। ম্যানচেস্টার সিটিরও দরকার ছিলো সের্হিও আগুয়েরোর রিপ্লেসমেন্ট। যদিও গ্যাব্রিয়েল জেসুস প্রতিভার ছটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে ব্রাজিল দলে স্ট্রাইকারের দায়িত্ব তার পাকা হয়ে গেছে।

সের্হিও আগুয়েরোর পর ম্যানসিটির স্ট্রাইকারের হাল ধরবেন তিনি। গোলমুখে জেসুস অনেক বেশি শান্ত ও নির্ভার। সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে পৌঁছে গোলের সুযোগকে গোলে পরিণত করার দক্ষতা মাত্র ২০ বছর বয়সে তাকে এনে দিয়েছে তারকাখ্যাতি। গ্যাব্রিয়েল জেসুস হারিয়ে যাবেন না, কারণ পেপ গার্দিওলা বা টিটে এমন রত্ন কোনোভাবে নষ্ট হতে দেবেন না। আগামী ১০ বছর অনায়াসে ব্রাজিলের স্ট্রাইকারের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন জেসুস। ইনজুরিতে আক্রান্ত হবার প্রবণতা কাটিয়ে উঠে যদি তিনি নিয়মিত পরিশ্রম করতে পারেন, তবে ক্যারিয়ারের শেষে কিংবদন্তি তকমা নিয়ে অবসর নেয়াটা অবাক করা কিছু হবে না।

অ্যান্থনি মার্সিয়েল (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ফ্রান্স)

রেড ডেভিলদের সাথে মার্সিয়েলের ভবিষ্যৎ বর্তমানে কিছুটা নড়বড়ে

ফ্রান্সের তারুণ্য নির্ভর বর্তমান দলের অন্যতম প্লেয়ার অ্যান্থনি মার্সিয়েল। ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-২১ এ থাকার সময় পেয়েছিলেন ইউরোপের সেরা গোল্ডেন বয় অ্যাওয়ার্ড। মোনাকোতে নিজের প্রতিভা বিকশিত করে সুযোগ পান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলার সুযোগ। ৮৬ ম্যাচে ২৪ গোল করে বড় ক্লাবে মার্সিয়েল নিজেকে আবারও প্রমাণ করেছেন।

২২ বছর বয়সী এ ফরাসি সাধারণত লেফট-উইং পজিশনে খেলে থাকেন। বল দখলের লড়াইয়ে মার্সিয়েলের জুড়ি নেই। পাসিং দক্ষতা ও ড্রিবলিং অতটা ভালো মানের না হলেও নিম্নমানের নয়। উপযুক্ত সমর্থন ও যত্নের ফলে মার্সিয়েল হতে পারতেন আরো পরিণত খেলোয়াড়। কিন্তু ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের উপযুক্ত দেখভালের অভাবে মার্সিয়েল তার ক্যারিয়ারের অগ্রগতিতে শুধু পিছিয়ে নেই, অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিজের স্থান। জোসে মরিনহো বলেছেন, আসন্ন মৌসুমে তাকে নিয়ে নতুনভাবে ভাববে ম্যানইউ। কিন্তু তা-ও যেন কমতি থেকেই যায়। প্রাক্তন মোনাকো খেলোয়াড়ের প্রতি আগ্রহী চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস ও পিএসজির মতো দল। সুযোগ না পেয়ে দল পরিবর্তন করাটাই মার্সিয়েলের জন্য সবথেকে সঠিক হবে।

জিয়ানলুইজি ডোনারুমা (ইতালি, এসি মিলান)

ডোনারুমা, বুফনের উত্তরসূরি

বর্তমান যুগে তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলারদের ভেতর অধিকাংশ হয় আক্রমণাত্মক মস্তিষ্কের খেলোয়াড়, নয়তো আপাদমস্তক মিডফিল্ডার। গোলকিপার পজিশনে ভালো তরুণ তুলনামূলকভাবে কম। জিয়ানলুইজি বুফনের সময় যখন শেষ পর্যায়ে এবং ইতালির দরকার নতুন একজনের, তখনই আর্বিভাব হয় ডোনারুমার। মাত্র ১৬ বছর বয়সে সিরি আ-তে অভিষেক হয় ডোনারুমার। পরের বছর ইতিহাসের সবথেকে কম বয়সী গোলকিপার হিসেবে অভিষেক হয় ইতালি দলে। জিয়ানলুইজি ডোনারুমার বয়স বর্তমানে ১৯। এই বয়সেই তাকে বুফনের উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে। এত অল্প বয়সে ডোনারুমার শারীরিক শক্তি, টেকনিক্যাল অ্যাবিলিটি মনোমুগ্ধকর এবং মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতাও দারুণ। জিওভানি গালি, দিদা, দিনো জফ এবং বুফনের মতো লিজেন্ডারি ইতালিয়ান গোলকিপাররা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। জিয়ানলুইজি ডোনারুমা যেভাবে অল্প বয়সে নিজেকে প্রমাণ করলেন, হয়তো বুফনের মতোই আরেক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার তার জন্য অপেক্ষা করছে।

মার্কোস রাশফোর্ড (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইংল্যান্ড)

রাশফোর্ডকে নিয়ে ম্যানইউয়ের দীর্ঘকালীন চিন্তাভাবনা কি আসলেই আছে?

২০ বছর বয়সী মার্কোস রাশফোর্ড ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আরো একটি তরুণ রত্ন, যিনি নিজেকে প্রমাণ করার পরেও দলে জায়গা পাকাপোক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অথচ রাশফোর্ড হতে পারতেন মরিনহোর দলের অন্যতম হাতিয়ার। ভবিষ্যতে সেরাদের কাতারে যাবার মতো যোগ্যতা আছে তার। উইঙ্গার পজিশনে খেলা রাশফোর্ডের নিখুঁত পাসিং, বল নিয়ে ড্রিবলিংটাও বেশ ভালো পারেন। সরাসরি ফ্রি কিক শটে তিনি সবথেকে বেশি প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। এ সিজনে গোলের পাশাপাশি সমানভাবে অ্যাসিস্টও করেছেন।  ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অ্যাকাডেমিতে বেড়ে ওঠা এ ইংলিশ উইংগারের যদি আসন্ন সিজনেও ক্লাবে স্থান তৈরি না হয়, অবিলম্বে তার ক্লাব ত্যাগ করা উচিত। নিজেকে মেলে ধরার মোক্ষম সময় চলে গেলে যে ভবিষ্যতে রাশফোর্ডের ক্যারিয়ার খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়াবে!

লিরয় সানে (ম্যানচেস্টার সিটি, জার্মানি)

লেরয় সানে

প্রিমিয়ার লিগে এবার সেরা খেলোয়াড় কে? কেভিন ডি ব্রুইন, মোহাম্মদ সালাহ বা সের্হিও আগুয়েরোর পাশাপাশি লেরয় সানের নাম থাকা যে বাঞ্ছনীয়। প্রিমিয়ার লিগে ২৯ ম্যাচে ১০ গোল ও ১২ অ্যাসিস্ট করে ম্যানচেস্টার সিটিকে শুধু শিরোপা এনে দেননি, নিজেও পেয়েছেন সেরা গতিময় ফুটবলের খেতাব। পাশাপাশি হ্যারি কেইন ও রহিম স্টার্লিংকে পেছনে ফেলে পিএফএর বর্ষসেরা উদীয়মান তারকা হয়েছেন সিটির এ জার্মান তারকা। লেরয় সানে সাধারণত লেফট-উইং পজিশনে খেলে থাকেন। এছাড়াও অ্যাটাকিং মিড ও রাইট-উইং পজিশনেও তাকে দেখা গেছে। দুর্নিবার গতির পাশাপাশি সানে প্লে মেকিং, সলো রান,  ক্রস ও পাসিংয়ে পারদর্শী। মাত্র ২২ বছর বয়সে শুধু সিটি নয়, হয়ে উঠেছেন জার্মানির বাঁপাশের ভরসা। আসন্ন বিশ্বকাপে সানে জার্মানির হয়ে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন।

কিলিয়ান এমবাপ্পে (পিএসজি, ফ্রান্স)

পিএসজির গোল্ডেন বয়

এমবাপ্পে ‘গোল্ডেন বয়’ হিসেবেই বেশি পরিচিত। তারকা ফুটবলার হতে তিনি সময় নিয়েছিলেন মাত্র এক মৌসুম। ১৮ বছর বয়সী এমবাপ্পে প্রথমে আলো ছড়িয়েছেন মোনাকোর হয়ে। এরপর প্যারিস সেন্ট জার্মেইতেও টেনে নিয়ে এসেছেন একই দ্যুতি। ফিনিশিং, প্লে মেকিং এবং বল কন্ট্রোলে তিনি খুব দ্রুত উন্নতি করেছেন। চলতি সিজনেও ৪৩ ম্যাচে ২১ গোল ও ১৭ অ্যাসিস্ট নিয়ে দারুণ ফর্মে আছেন এ ফরাসী উইঙ্গার। নিয়মিত ভালো খেলার পুরষ্কারটা গত বছরই পেয়েছেন। ইউরোপে গোল্ডেন বয় শিরোপা গেছে তার কাছে। তিনি যে ফ্রান্স ফুটবলের জ্বলজ্বলে ভবিষ্যৎ তা সন্দেহাতীতভাবেই প্রমাণিত।

ম্যালকম অলিভিয়েরা (বোরডেক্স, ব্রাজিল)

বোরডেক্সের মাঠে ম্যালকম

২১ বছর বয়সী এ ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার খেলে থাকেন ফরাসী ক্লাব বোরডেক্সে। একজন অ্যাটাকিং প্লেয়ার হওয়া সত্ত্বেও ম্যালকম উইঙ্গার অথবা ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলতে সক্ষম। অসাধারণ গতির পাশাপাশি ক্রসিং, বল কন্ট্রোল এবং দূরপাল্লার শট নিতে পারদর্শী তিনি। একটা সময় ব্রাজিলিয়ান ইয়ুথ ক্লাবে ডাক পাবার পর তার ফিনিশিংয়ে কিছু সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। তবে সময়ের সাথে সেদিকে তিনি দ্রুত উন্নতি করেছেন। ব্রাজিলের এ তরুণ তুর্কীকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বায়ার্ন মিউনিখ, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটির মতো ক্লাবগুলো।

ডেলে আলি (টটেনহাম হটস্পার, ইংল্যান্ড)

ডেলে আলি, পরবর্তী প্রজন্মের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়

ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম হটস্পারের কোচ মরিসিও পচেত্তিনো বিশ্বাস করেন, তার দলের উদীয়মান তারকা ফুটবলার ডেলে আলি হতে পারেন বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে লিগ ওয়ানের দল এমকে ডনস থেকে টটেনহামে নাম লেখান আলি। ইংলিশ লিগে এসে প্রথম মৌসুমেই সবার নজর কাড়েন। ২২ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার স্পার্সে খেলেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার পজিশনে। একজন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হয়ে আক্রমণ গড়ে দেবার কাজটি তিনি ভালোভাবেই পারেন। ৪৮ ম্যাচে ১৪ গোল ও ১৭ অ্যাসিস্ট বলে দেয় স্পার্সের জন্য তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। দিন দিন যেভাবে পরিণত হয়ে উঠছেন তিনি, মরিসিও পচেত্তিনোর বিশ্বাস সত্য হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।