ময়নাতদন্তের জন্য রামেকে নেওয়া হল পুলিশ কর্মকর্তা সরফরাজের লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: 

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে সহকারী পুলিশ কমিশনার সাব্বির আহমেদ সরফরাজের ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৬টায় দিকে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রামেকে নেওয়া হয়।

 

বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহ আসার পরে রাজশাহী মহানগরী রাজপাড়া থানা জোনের সহকারী পুলিশ কর্মকর্তা (এসি) সাব্বির আহম্মেদ সরফরাজ ওরফে প্রীতমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

তবে তার বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহ বলেন, ময়না তদন্তের জন্য মৃহদেহটি রামেকে নেওয়া হয়েছে। তবে পারিবারিক ভাবে তার অাত্মহত্যার কোন কারণ ছিলনা বলে  দাবি করেন তার বাবা।

এদিকে আত্মহত্যার পরে সরফরাজের লাশ সকাল থেকেই ঝুলে ছিল নগর পুলিশ অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। দোতালার ওই পুলিশ অফিসার্স মেসের নিচ তলার একটি কক্ষে সকাল ১০টার দিকে তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান ওই মেসের কর্মচারীরা। পরে অন্য কর্মকর্তারা ছুটে আসেন। সেই থেকে ঝুলে ছিল সরফরাজের লাশ।

 

তারা বাবা সাবেক পুলিশ কমিশনার ওবাইদুল্লাহ ঢাকা থেকে বিকেল চারটার দিকে রাজশাহীতে বিমানযোগে এসে পৌঁছেন বাবা ওবাইদুল্লাহ। তারপর সরফরাজের লাশ উদ্ধার কার্য শুরু করা হয়। জানান মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম।

 

তিনি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, তার বাবা না আসা পর্যন্ত সরফরাজের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা যাবে না বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন। কারণ তার বাবাও ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি নিজে ছেলের লাশ দেখার পর সরফরাজের দেহ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়।

 

সরফরাজের মামাতো ভাই মেহেরুল সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, সরফরাজ আমাকে দাদা বলেই ডাকতো।নগরীর  শেখপাড়া এলাকায় তার একটি বাড়ানবাড়ি আছে। আমিই সেটার দেখাশোনা করতাম।  গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ডিউটি পালণ শেষে বাসায় না গিয়ে বাগানবাড়িতে আসে। তার সাথে খাওয়া দাওয়া করে আমি চলে যাই। তারপর সে তার দেহরক্ষীকে অস্ত্র জমা দিয়ে ঘুমিয়ে যায়। তখন সে স্বাভাবিক ছিল।

 

তিনি বলেন, সরফরাজ নতুন গরু কিনেছিল ভোরে উঠে আমি গরুর খাবার দিতে যায়। ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে সে বাগানবাড়ি থেকে চলে যায়। এরপর শুনি সে আত্মহত্যা করেছে। তারপর আমি এখানে ছুটে আসি।

 

সরফরাজ ৩১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এবং তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) রাজপাড়া থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

 

আরএমপির মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম আরো বলেন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে আরএমপির একটি অফিসার্স মেস আছে। সেখানে একটি কক্ষে মাঝে মাঝে গিয়ে বিশ্রাম করতেন পুলিশ কর্মকর্তা সরফরাজ। শনিবার সকালে ওই কক্ষেই তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

 

ইফতেখায়ের আলম আরো জানান, জানালার গ্রিলের সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সরফরাজের লাশ পাওয়া গেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধারের প্রস্তুতি চলছে।

 

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লাশটি উদ্ধার করা হয়নি। অফিসার্স মেসটির ভেতরে আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা অবস্থান করছেন।

 

আজ শনিবার তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিসার্স মেছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। তবে বর্তমানে তারা রাজশাহী নগরীর ‍উপশহর এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানা গেছে। তিনি রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম ওবায়দুল্লাহ ছেলে। সরফরাজ হোসেন রাজপাড়া থানা সহকারি পুলিশ কমিশনার ছিলেন।

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার অধ্যাপক এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তার রুমের ভেতর থেকে লাগানো ছিলো। তিনি লাইলন রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

স/অ