ম্যারাডোনার চিকিৎসা নিয়ে ৭০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন, কাঠগড়ায় চিকিৎসকরা


মৃত্যুর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও ফুটবলের কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা মৃত্যুরহস্য নিয়ে বিতর্ক থামছেই না।

মৃত্যুর কদিন পরই যে অভিযোগ ওঠে, চিকিৎসকদের গাফিলতিতে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন ম্যারাডোনা। তাকে ক্লিনিকে নিতে দেরি করা হয়েছিল।

সেই সময় ম্যারাডোনার আইনজীবী মাতিয়াস মোরিয়া কিংবদন্তির মৃত্যুর পূর্ণ তদন্তের দাবি জানান।

তার সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে  ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। যার তদন্তের পর  ৭০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মেডিকেল বোর্ড। সেই প্রতিবেদনে এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃত্যুর আগে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে ‘ত্রুটিপূর্ণ ও যত্নহীন’ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর আগে অযত্নে ভুগেছেন ম্যারাডোনা। তার সুস্থতার জন্যও দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক-নার্সরা যথেষ্ট সোচ্চার ছিলেন না।

ক্লার্ন নামক স্থানীয় সংবাদপত্রসহ আর্জেন্টিনার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে শুক্রবার তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে খবর ছাপা হয়েছে, যা প্রকাশ হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও।

৭০ পাতার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃত্যুর ১২ ঘণ্টা আগে ম্যারাডোনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও ওই সময়ে তার দেখভাল ঠিকমতো করা হয়নি। তার সঠিক পর্যবেক্ষণ হয়নি। কিংবদন্দির বাঁচা-মরার বিষয়টি ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

বাড়িতে চিকিৎসা না করে শুরু থেকেই হাসপাতালে নিলে ম্যারাডোনার বাঁচার ভালো সম্ভাবনা ছিল বলে দাবি করেছে বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি।

৭০ পাতার ওই প্রতিবেদনের একটি কপি হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্সের দাবি, মৃত্যুর আগে ম্যারাডোনাকে দেওয়া চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল‘অনুপযুক্ত, ত্রুটিপূর্ণ ও যত্নহীন’।

তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের মধ্যে প্রথম কাতারেই রয়েছেন ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিয়োপোল্ডে লুকে ও মনোবিদ অগাস্টিনা কোসাচভ।

মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ চিকিৎসকদের কপালে কী রয়েছে সে বিষয়ে প্রসিকিউটররা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা গেছে। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ক্লার্ন বলছে, এ ক্ষেত্রে হত্যার বিষয় বিবেচিত হতে পারে।

প্রসঙ্গত গত বছর ২৫ নভেম্বর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক ম্যারাডোনা। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। মৃত্যুর আগে নভেম্বরের শুরুতে তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এর পর অতিরিক্ত অ্যালকোহল নির্ভরতা থেকে মুক্তির জন্য তার চিকিৎসা চলছিল।

 

সুত্রঃ যুগান্তর