মেধাবী সোমার অর্থের অভাবে সামনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে অদম্য মেধাবী ছামছুন নাহার সোমা।
তাদের বাড়ি গোপিনাথপুর ইউপির মহীতুড় গ্রামে। তার বাবা ছামছুল ইসলাম একজন বাক প্রতিবন্ধী। ভাল ফলাফল করায় তাকে নিয়ে ফের দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার । মেয়েটি একটি ভাল কলেজে ভর্তি হতে চায়। কলেজে ভর্তি ও বাহিরে থাকা-খাওয়ার টাকা জোগাড় দেওয়া তার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। মেয়েটির বাবা বধির। তাদের সহায় সম্পদ বলতে মাটির বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। বাবা দিনমজুরীর আয় দিয়ে চলে পুরো সংসার। মেয়েটি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। টাকার অভাবে মেয়েটি এবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার (এসএসসি) ফরম ফিলাপ করতে পারছিল না। মেয়েটি ও তার পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় পড়েছিল।
এ ঘটনাটি লোকমুখে জানার পর বিদ্যালয় পরিচালা কমিটির সভাপতি মেয়েটি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদ্যালয়ে ডেকে পাঠায়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাঁর নিজের পকেটের টাকায় মেয়েটির ফরম ফিলাপ করায়। সেদিন মেয়েটি ও তার পরিবারের সদস্যদের চোখে আনন্দ অশ্রু ঝড়েছিল। এখন মেয়েটি ভাল কলেজে ভর্তি ও বই কেনার জন্য অর্থের প্রয়োজন। ভাল ফল করার পরেও হাসি নেই পরিবারের লোকজনের।
শামছুন নাহার সোমা বলেন, আমার বগুড়ার সরকারি আযিযুল হক কলেজে ভর্তি হওয়ার বাসনা রয়েছে। আমার পরিবার তো বাহিরে লেখাপড়ার খরচা চালাতে পারবে না। মাকে বলেছি, মা বলেছে ফরম ফিলাপের টাকায় দিতে পারিনি। তোকে আবার বাহিরে লেখাপড়া করাব কিভাবে?।
শামছুন নাহার সোমার মা সেলিনা খাতুন বলেন,  মেয়ে বাহিরের ভাল কলেজে ভর্তি হতে চায়। এত টাকা কোথায় পাব। গৃহস্ত একজন বাক প্রতিবন্ধী মানুষ সবাইকে বোঝাতে পারে না। আমি মেয়ে মানুষ বাইরে যেতে পারিনা। মেয়েটির মেধা ভাল ভাল ফলও করে সে। টাকার অভাবে বাইরের ভাল কলেজে ভর্তি করাতে পারছি না। গৃহস্ত একদিন কাজে না গেলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।
গোপিনাথপুর ইউপির সদস্য ও মহীতুড় গ্রামের বাসিন্দা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শামছুন নাহার সোমার বাবা বোবা মানুষ। দিনমজুরি করে সংসার চালায়। এক কাঠাও আবাদি জমি নেই। বাড়িটিই একমাত্র সম্বল। মেয়েটি ছোট থেকেই খুব মেধাবী।
কাশিড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিপ্লব সাখিদার বলেন, মেয়েটি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল।  মেয়েটি টাকার অভাবে ফরম ফিলাপ হচ্ছিল না। ঘটনার জানার পর নিজের টাকায় মেয়েটির ফরম ফিলাপ করেছিলাম। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।

স/অ