মুয়াজ্জিনের পক্ষে সৃষ্টিজগতের সাক্ষ্যদান

মুয়াজ্জিনের পক্ষে সৃষ্টিজগতের সাক্ষ্য : ইসলামে মুয়াজ্জিনের সুমহান মর্যাদা। মানুষকে তিনি কল্যাণের দিকে আহ্বান করেন। তাই সবার সৎকর্মের প্রতিদানের অংশ মুয়াজ্জিনের জন্যও বরাদ্দ থাকে। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাঁদের সৃষ্টিজগতের ওপর সম্মাননা দেবেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান আনসারি মাজিনি (রহ.) তাঁর বাবা থেকে বর্ণনা করেছেন, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) তাঁকে বলেছেন, আমি দেখছি তুমি বকরি চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাসো। তাই তুমি যখন বকরি নিয়ে থাকো বা বন-জঙ্গলে থাকো এবং নামাজের জন্য আজান দাও, তখন উচ্চকণ্ঠে আজান দাও। কেননা জিন, মানুষ বা যেকোনো বস্তুই যত দূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শুনবে, সে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। আবু সাঈদ (রা.) বলেন, এ কথা আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে শুনেছি। (বুখারি, হাদিস : ৬০৯)

আজানের পর দোয়া পাঠে সুপারিশ লাভ : আজানের পর মাসনুন দোয়া পাঠের অনেক ফজিলত। দোয়া পাঠকারী কেয়ামতের দিন রাসুল (সা.)-এর সুপারিশ লাভ করবে।

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শুনে দোয়া করে, হে আল্লাহ! এ পরিপূর্ণ আহ্বান ও প্রতিষ্ঠিত নামাজের মালিক, মুহাম্মদ (সা.)-কে অসিলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিন, যার অঙ্গীকার আপনি করেছেন। কিয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ লাভের অধিকারী হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৪)

আজানের জন্য প্রতিযোগিতা : আজান দেওয়া অনেক বড় সওয়াবের কাজ। কল্পনাতীত সওয়াব মিলে আজানে। কিন্তু মানুষ তা উপলব্ধি করতে পারে না। অগণিত সওয়াবের কথা মানুষের বোধগম্য হলে তাঁরা আজান ও প্রথম কাতারে নামাজের জন্য প্রতিযোগিতা করত।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আজানে ও প্রথম কাতারে কী (ফজিলত) রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত, (তাহলে) লটারির মাধ্যমে বাছাই ছাড়া এ সুযোগ লাভ করা অসম্ভব হলে প্রয়োজনে লটারির মাধ্যমে আজান দেওয়ার ফায়সালা করত। জোহরের নামাজ আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করার মধ্যে কী (ফজিলত) রয়েছে, যদি তারা জানত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করত। আর এশা ও ফজরের নামাজ (জামাতে) আদায়ের কী ফজিলত তা যদি তারা জানত, তাহলে নিঃসন্দেহে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (মসজিদে) হাজির হতো। (বুখারি, হাদিস : ৬১৫)

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ