মুন্ডুমালায় শতবর্ষী পুরোনো বটগাছ: কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র

গোলাম রসুল:
ভাল লাগা আর ভালবাসা হতে পারে সেখান থেকেই শুরু যেখানে রয়েছে শত বছরের বটবৃক্ষ। এমন একটি শত’ বছরের একটি বটগাছের দেখা মিলেছে তাহলো তানোর উপজেলা মুন্ডুমালা পৌরসভা এলাকার মহোইনপুর গ্রামে। মুন্ডুুমালা পৌরসভা হতে মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার দক্ষিনে মইনপুর বটতলা নামক স্থানেই অবস্থিত সেই বটগাছটি। অনেকের চোখের আড়াল হয়ে থাকলেও সেখানে ঘুরে আসলে মনের তৃপ্তির আড়াল দুর করবে সেই স্থানটি।

এক সময় মানুষ গ্রামের পথে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে অনেকেই কোনো গাছের ছায়ায় বসে নিজেকে জিরিয়ে নিতো। কিংবা কাজ শেষে কোনো গাছের ছায়ায় বসে গল্প মেতে উঠেছেন গ্রামের কিশোর থেকে বৃদ্ধ। গ্রামে এমন দৃশ্য সবারই চেনা। গ্রামের রাস্তার পাশেই দেখা মিলবে সুবিশাল কোনো বটগাছের। আর এর নিচে গ্রামবাসীর এমন জটলার দৃশ্যও চোখে পড়বে। তবে এখন গ্রামে বটগাছ খুব একটা চোখে পড়লেও দেখা মিলেছে মুন্ডুমালা পৌরসভার এলাকার মহোইনপুর গ্রামে।

মহোইন গ্রামের আব্দুর রশিদ নামের এক ব্যাক্তি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, এই বট গাছটি কতশত বছর আগের তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। এমনকি অনেক বয়স্ক মানুষই এই বটগাছের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনি শুধু এটাই বলতে পারেন যে তারা এই পৃথিবীর বুকে জন্মানোর পর থেকেই সেই একই রকম দেখে আসছেন বটগাছটি।

তিনি আরো বলেন, সবচাইতে অবাক ব্যপার হলো কেই বলতে পারে না এই বটগাছের উৎপত্তির গোড়া কোথায়, এছাড়াও বাটগাছটি মাঝখানে দেখতে একটি ঘোড়ারমত।
বটগাছরে নিচে অবস্থিত মনা ঘোষ নামের এক চা দোকান ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি দীঘদিন থেকে বটগাছের নিচে চা দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন তিনিও জানেন না এই বটগাছের রহস্য। তবে প্রতি বছরে ঈদের নামজ আদায় করার জন্য স্থানীয় লোকজন কিছু এলাকা ঘিরে ওই বটগাছের নিচে ঈদগাহ নির্মান করেছে। বর্তমানে অনেকেই এই বটগাছ দেখার জন্য সেখানে আসেন বলেন জানান চা ব্যবসায়ী।


তিনি আরো বলেন, পর্যবেক্ষনের অভাবে বটগাছটির সৌন্দর্য্য হারিয়ে যাচ্ছে। সরকারী পৃষ্টপোষকতায় সেখানে গড়ে উঠতে পারে বড় ধরনের বিনোদন কেন্দ্র, আর যা থেকে আয় করতে পারবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রাজশাহীর দাসপুরিয়া এলাকা থেকে বটগাছ দেখতে আশা দর্শনার্থী মশিউর রহমান, নাসরিন খাতুন ও আইরিন খাতুন বলেন, বাংলা সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সংস্পর্শে মিশে আছে এই বটগাছ। একটা সময় ছিল যখন বাড়ির সামনে, জমির ধারে ও নৌকাঘাটগুলোতে বট গাছ থাকতো। তখন কোনো ঠিকানা নিশ্চিত করতে বট গাছকেই ব্যবহার করা হতো। বট গাছ ছিল মানুষের মিলনমেলা। খেয়াঘাট অথবা বিভিন্ন স্থানে বটগাছের নিচে মানুষের জন্য তৈরি করা হতো বাঁশের মাচা। যেখানে খেয়া পারাপারের আগে পথচারীরা অলস সময় কাটিয়ে খেয়া পার হতেন।

তারা আরও বলেন, গ্রামগঞ্জের মেলাও বসতো বট গাছের নিচে। এমনকি কৃষি শ্রমিকরা এক সময় বিশ্রাম নিতেন এই বট গাছের নিচে। বর্তমানে এমন দৃশ্য আর তেমন চোখে পড়ে না। তবে এখনে এসে বাবা মায়ের মুখে শোনা সেই শৈশবকালের গল্পের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। বটগাছটি দেখে অনেক ভালা লাগছে। তবে প্রচার প্রচারনা অভাবে অনেক মানুষ এত সুন্দর দৃশ্যমান থেকে দুরে পড়ে আছেন।

যেহেতু একটি পৌরসভা এলাকার ভেতরে এই বটগাছ স্থানটি, তাই পৌর কর্তৃপক্ষ অথবা সরকারী উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। তাদের এই উদ্যোগের ফলে ওই স্থানটি গড়ে উঠতে পরে একসময় বড় ধরনের মিলন মেলায় দর্শনীয়স্থান বলে জানান তারা ।
স/শ