মুছার সঙ্গে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে ‘শলা পরামর্শ’ করতেন বাবুল

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের আগে সোর্স মুছা শিকদারের সঙ্গে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে কথা বলতেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর বাবুলকে যখন মুছা সিকদারের ছবি দেখানো হয় তখন বাবুল আক্তার দাবি করেছিলেন, তিনি মুছাকে চেনেন না। অথচ এই মুছাকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করে বাবুল আক্তার অনেক অভিযান পরিচালনা করেছেন। একই সঙ্গে মুছা নিজে বাবুল আক্তারের বাসায় বাজার করে দিতেন।

বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সারোয়ার জাহানের আদালতে এমন সাক্ষ্য জবানবন্দি দিয়েছেন বাবুল ও মুছার পূর্বপরিচিত আব্দুল সাত্তার মোল্লা। জবানবন্দি দেওয়ার পর তিনি নিজের বাসায় ফিরে গেছেন।

জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। বুধবার রাতে তিনি বলেন, ‘সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার এবং নিখোঁজ আসামি মুছা শিকদারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তারা দুজন হত্যাকাণ্ডের আগে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন শলাপরামর্শ করেছেন। সাক্ষী আব্দুস সাত্তার মোল্লা দুজনকে ভালোভাবে চেনেন এবং জানেন। মুছার সঙ্গে বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ট যোগাযোগ আছে সেটা এই সাক্ষ্য জবানবন্দির মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়েছে।’

এর আগে, সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার দাবি করেছিলেন, ‘তিনি মুছা সিকদারকে চেনেন না। ঘটনার পরপরই যদি ছবি দেখে মুছাকে শনাক্ত করতেন বাবুল আক্তার তাহলে মামলার তদন্ত আরো সহজ হতো।’

পঞ্চম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে মিতু হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তদন্ত শুরুর প্রথম সপ্তাহেই তিনি একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতে সোপর্দ করলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় জিইসির মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে মারা যান মিতু। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। কিন্তু তদন্ত পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুলের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় আদালতে ১২ মে এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। ওইদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুলকে প্রধান আসামি করে নতুন আরেকটি মামলা দায়ের করেন মৃত্যুর বাবা মোশারফ হোসেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বাবুল এখন ফেনী কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ