মার্শ-ওয়ার্নারের দাপটে প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইল দিল্লি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

চলতি আইপিএলের ৫৮তম ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইলো ঋষভ পান্তের দিল্লি ক্যাপিটালস। দুই অজি তারকা জেতালেন দিল্লিকে। ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে অজি তারকা অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ প্রথমে বল হাতে নিজের কাজটা করেন রাজস্থানের ইনিংসে। এরপর ব্যাট হাতেও অনবদ্য পারফর্ম করে গেলেন মার্শ। আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন ডেভিড ওয়ার্নার।

একদিকে চার-ছয়ের বৃষ্টি ঝরছিল মার্শের ব্যাট থেকে। সুযোগ পেয়ে ওয়ার্নারও হাত খুলছিলেন মাঝে মধ্যেই। দ্বিতীয় উইকেটে মার্শ-ওয়ার্নারের ১৪৪ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপটাই দিল্লির জয়ের রাস্তা সহজ করে দেয়। ম্যাচের সেরার পুরস্কারও ঝুলিতে ভরেছেন মার্শ। বুধবার (১১ মে) রাজস্থানকে হারিয়ে ২ পয়েন্ট তুলে নিয়ে হাসিমুখে মাঠ ছাড়লেন পান্তরা। কারণ এই জয়টার ওপরে দিল্লি প্লে-অফের অঙ্ক টিকে ছিল।

এদিন, টসে জিতে শুরুতে সঞ্জুর পিঙ্ক আর্মিকে ব্য়াটিং করতে পাঠিয়েছিলেন দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ। আজ জমেনি রাজস্থানের ওপেনিং জুটি। দিল্লি এ ম্যাচে সুযোগ দিয়েছিল চেতন সাকারিয়াকে। তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে সাকারিয়াই দিল্লিকে প্রথম উইকেট এনে দেন। মাত্র ৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন অরেঞ্জ ক্যাপের মালিক জস বাটলার। তিন নম্বরে নেমে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বাটলার ফিরলে যশস্বীর সঙ্গে পিঙ্ক আর্মিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন তিনি। তবে যশস্বীর ব্যাট হাসেনি। ১৯ বলে ১৯ রান করে মিচেল মার্শের শিকার হন তিনি।

এরপর দেবদত্ত পাড়িক্কালকে নিয়ে ফের ম্যাচে রাজস্থানকে ট্র্যাকে রাখেন অশ্বিন। ব্যাট হাতে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন অশ্বিন। ধীরে ধীরে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন তিনি। ৩৮ বলে ৫০ রান করার পথে তিনি মারেন ৪টি চার ও ২টি ছয়। এটাই অশ্বিনের আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে অশ্বিনের বড় উইকেটটি তুলে নেন মার্শ। বেশ কয়েকটি ম্যাচের পর রানে ফিরেছেন দেবদত্তও।

রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। মাত্র ৬ রান করে অনরিখ নর্টজেকে উইকেট দিয়ে বসেন সঞ্জু। ১৭, ১৮ ও ১৯ ওভারে পরপর তিনটি উইকেট হারায় গোরাজস্থান। রিয়ান পরাগকে (৯) ক্রিজে থিতু হতে দেননি চেতন সাকারিয়া। ১৯তম ওভারে নর্টজে তুলে নেন পাড়িক্কালের উইকেট। হাফসেঞ্চুরি (৪৮) হাতছাড়া করে মাঠ ছাড়েন তিনি। শেষ বেলায় ১২ রান অপরাজিত থাকেন রসি ভ্যান দার দুসেন এবং ট্রেন্ট বোল্ট নট আউট ৩ রানে। অশ্বিন-পাড়িক্কালের দুরন্ত ইনিংসের পরও দিল্লিকে খুব বড়সড় টার্গেট দিতে পারেনি রাজস্থান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৬০ রানে থেমে যায় সঞ্জুর দল।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার শ্রীকর ভরতের উইকেট খুইয়ে বসে দিল্লি। ট্রেন্ট বোল্টের দেওয়া ধাক্কা সামলে এরপর দিল্লির হাল ধরেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। প্রথম ওভারে উইকেট ও দ্বিতীয় ওভারে প্রসিধ কৃষ্ণা মেডেন দিলেও, ওয়ার্নার-মার্শ জুটিকে টলাতেই পারেননি অশ্বিনরা। ব্যাটিংয়ে যেমন তেমন করে দেড়শোর গণ্ডি পেরিয়ে গেলেও, ফিল্ডিংয়ে রীতিমতো ফাঁকফোকর ছিল রাজস্থানের। একের পর এক ক্যাচের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন বোল্ট-বাটলাররা। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ব্যাট হাতে দাপট দেখালেও বল হাতে তার দিন ছিল না। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩২ রান দিলেও কোনও উইকেট পাননি অশ্বিন। মিচেল মার্শের ব্যাট তো রীতিমতো জ্বলজ্বল করছিল। আর ওয়ার্নারও তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন।

উইকেটের খোঁজে থাকা রাজস্থানকে অবশেষে ১৮তম ওভারে বিধ্বংসী ফর্মে থাকা মিচেলকে ফেরান পার্পল ক্যাপের মালিক যুজবেন্দ্র চাহাল। ৪ ওভারে ৪৩ রান হজম করে মাত্র ১টি উইকেট পান যুজি। শেষ বেলায় হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন ওয়ার্নার। মার্শ ফিরলে ওয়ার্নারের সঙ্গে দলকে জেতাতে আসেন অধিনায়ক ঋষভ পান্ত। ৪ বলে ১৩ রানে নট আউট থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে যান ওয়ার্নার। তাতে ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়। ১১ বল বাকি থাকতেই টার্গেট পূর্ণ করে ফেলে দিল্লি। রাজস্থানকে হারিয়ে ২ পয়েন্ট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি প্লে-অফের দৌড়েও টিকে রইলো তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

রাজস্থান ১৬০-৬ (রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৫০, দেবদত্ত পাড়িক্কাল ৪৮, যশস্বী জসওয়াল ১৯, চেতন সাকারিয়া ২-২৩, মিচেল মার্শ ২-২৫, অনরিখ নর্টজে ২-৩৯)।

দিল্লি ১৬১-২ (মিচেল মার্শ ৮৯, ডেভিড ওয়ার্নার ৫২*, ঋষভ পন্থ ১৩*, ট্রেন্ট বোল্ট ১-৩২, যুজবেন্দ্র চাহাল ১-৪৩)।

 

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন