মান্দায় কালি মন্দিরের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল: অর্থাভাবে পূঁজা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁর মান্দায় কতিপয় ব্যাক্তির নামে কালি মন্দিরের সম্পত্তি অবৈধভাবে জবর-দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, মন্দিরের সম্পত্তি দখল করে নেওয়ায় অর্থের অভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ধর্মীয় উৎসব বন্ধ হয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চেরাগপুর গ্রামে।

মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন চেরাগপুর গ্রামের শিশু বরের ছেলে সামসুল (৩০), আতাউর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা (২৮), খোরশেদ আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩২), মেছের আলীর ছেলে আকবর আলী (৩৩), শরিফ উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) ও নিয়ামতপুর উপজেলার রাজাপুর দর্গাপাড়া গ্রামের মৃত বদন মন্ডলের ছেলে মছির উদ্দিন (৫০) এবং আবু বক্করের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩৫) এই মন্দিরের সম্পত্তি দখল করেছেন।

জানা গেছে, জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর তৎকালীন জমিদার কালিপদ ও দেবপদ মন্দিরের সেবায়েত হিসেবে থাকবে মর্মে ১৯২০ সালের আর এস ৩৫ খতিয়ানের চেরাগপুর মৌজায় প্রায় ৩২ একর সম্পত্তি কালি মন্দিরের নামে দান করেন।

মামলা সূত্রে জানাগেছে, ১৯৭২ সালে মন্দিরের নামে দানকৃত জমিদার সম্পত্তির অর্ধাংশ সরকারের ও অর্ধাংশ মন্দিরের নামে ভূলক্রমে রেকর্ডভুক্ত হয়। এই সুযোগে অত্র এলাকার কতিপয় অসাধু ভূমিদূস্য ও দখলবাজরা সন্ত্রাসী কায়দায় মন্দিরের সম্পত্তি ও ১৯ একর জলাশয়ের দিঘী জবর-দখল করে মাছ উত্তোলন করে আসছে। এতে মন্দিরের অর্থনৈতিক সংকটে পূঁজা বন্ধ হয়ে গেছে।

আর এস রেকর্ডে অনাকাঙ্খিতভাবে ভূল পরিলক্ষিত হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষকে বিবাদী করে মন্দিরের পক্ষে দেবাশীষ রায় বাদী হয়ে রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেন। মামলা নং-৩৭/১১। উক্ত মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে দেবাশীয় রায়ের পক্ষে ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ মামলার বিরুদ্ধে আপিল করলে আবারোও বাদী পক্ষ ডিগ্রি প্রাপ্ত
হয়। যাহার নং-৭২/১২। এরপর আপীলে রাষ্ট্রপক্ষ হেরে গেলে আদালত ৮৪/১৩ মিস মামলার কাগজপত্র পুনরায়
পর্যালোচনা করে যাচাই-বাছাই অন্তে বাদী পক্ষকে ডিগ্রি প্রদান করেন। বাদীপক্ষ একাধিকবার ডিগ্রিপ্রাপ্ত হলেও দখলবাজ কতিপয় ভূমিদস্যুরা জোরপূর্বক আদালতের রায় উপেক্ষা করে মন্দিরের ৭.৮৯ আমদিঘী, ৭.৭১ ধুকর দিঘী, ১.৬৫ বায়নামারী দিঘী ও ১.৭৭ একরের কটবিলা দিঘী এবং ধানী-ভিটাসহ সর্বমোট প্রায় ৩২ একর সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে।

এ বিষয়ে কালি মন্দিরের পক্ষে ভুক্তভোগী দেবাশীষ রায় স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েও কোন ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।

এব্যাপারে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি এ থানায় নতুন যোগদান করায়, বিষয়টি অবগত নয়। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স/অ