মানবাধিকার নয়, আসল উদ্দেশ্য চাপ দিয়ে ফায়দা নেওয়া যায় কিনা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে মানবাধিকারের অভিযোগে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে শোনা যাচ্ছে, আলোচনা-সমালোচনা, অভিযোগ পালটা অভিযোগ। কেউ কেউ বলছেন, আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে। মূলত এই নিষেধাজ্ঞার বিষয় নিয়ে দেশে তোলপাড় চলছে।

এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘যেহেতু আমরা পলিটিক্যালি-স্ট্রাটিজিক্যালি খুব ভালো অবস্থানে আছি, আমাদের আশেপাশের বড় বড় দেশ এবং আমাদের সমুদ্র অ্যাকসেসের জন্য অনেক বেশি উদ্বিগ্ন, সেই জন্য এখন আমরা সবার চক্ষুসূল। আসল উদ্দেশ্য কিন্তু হিউম্যান রাইটস (মানবাধিকার) না। আসল উদ্দেশ্য গুম-খুন না। আসল উদ্দেশ্য, এসব চাপ দিয়ে কিছু ফায়দা সংগ্রহ করা যায় কিনা।’

এ সময় সাংবাদিকরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান- বলা হয়েছে আমেরিকা থেকে নতুন করে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসবে না, এ রকম কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে কিনা? জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটা আমি জানি না। যিনি বলেছেন, তিনি ভালো জানেন। আই ডোন্ট নো।

গুম-খুনের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স শব্দই তো নেই! আমরা চাই না কাউকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা চাই প্রত্যেকের আইনের মাধ্যমে বিচার হবে।

তিনি বলেন, একটা-দুইটা দুর্ঘটনা ঘটে যেগুলোর খবর আমরা ঠিক মতো পাই না। যেমন আমরা অনেক দিন ধরে জানি হারিছ আলী সাহেব গুম হয়ে গিয়েছিলেন। এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স। এখন দেখি না, উনি দেশেই ছিলেন এবং দেশেই নাকি মারা গেছেন। তার মেয়ে বলেছে। আমরা এক সময় দেখলাম, একজন নেতা তিনি দেশে নেই, তারপর ইন্ডিয়ার হোটেল ইন্ডিয়ানরা তাকে ধরলো। ওই সব গুম-খুন বলা হয়, কতটুকু সত্য তা আমরা ঠিক জানি না। একটা লোক গুম হোক, একটা লোক খুন হোক আমরা চাই না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় প্রতি বছর হাজার খানেক লোকের বিনা বিচারে মৃত্যু হয়। পুলিশ মেরে ফেলে। প্রতি বছর তার দেশে লাখ খানেক লোক নিখোঁজ হয়, ওইটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আমরা চাই আমাদের দেশে একটি লোকও…আমাদের দেশে এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স শব্দই তো নেই! আমরা চাই না কাউকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা চাই প্রত্যেকের আইনের মাধ্যমে বিচার হবে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ এসব করে। পৃথিবীর সব দেশেই হয়, কম-বেশি। আমাদের এখানে অন্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম হয়।

 

সূত্রঃ যুগান্তর