মাদরাসাছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় চিতলমারীতে যুবক খুন

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রতিবেশী চাচাতো বোনের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই আব্দুল জব্বার শেখ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় জব্বারের বেয়াই রাজীব শেখ মারাত্মক আহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের খবরে উত্তেজিত জনতা হত্যায় অভিযুক্ত দেলোয়ার মুন্সীর তিনটি বসতঘর, তিনটি রান্নাঘর ও একটি ইজিবাইকে অগ্নিসংযোগ করে।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে থানার ওসি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে থানায় জিডি হয়েছে। ঘটনাস্থল চিতলমারীর গোড়ানালুয়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

গ্রামবাসী জানায়, গোড়ানালুয়া গ্রামের বাংলাদেশ সেবাশ্রমের অদূরে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। নিহত জব্বারের বেয়াই রাজীব শেখকে প্রথমে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে শনিবার তাকে জরুরিভাবে ঢাকায় নেওয়া হয়। নিহত আব্দুল জব্বার শেখ বড়বাক গ্রামের আব্দুল হক শেখের ছোট ছেলে। আহত রাজিব শেখ গোড়ানলুয়া গ্রামের মো. তৈয়ব শেখের ছেলে এবং নিহত জব্বারের বড় ভাইয়ের শ্যালক।

নিহত জব্বারের বড় ভাই মো. শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে একটি মোবাইল কল পেয়ে জব্বার বাড়ি হতে বেরিয়ে যায়। রাত আটটার দিকে তারা জানতে পারে জব্বার ও তার বেয়াই রাজীব শেখকে গোড়ানালুয়া গ্রামের দেলোয়ার মুন্সি, তার বাবা ডাবলু মুন্সি, দেলোয়ারের ভাই জিনু মুন্সিসহ কয়েকজন ছুরি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত জব্বারের বাবা আব্দুল হক শেখ বলেন, জব্বার অনেক আদরের ছিল। তাকে বিয়ে দিয়েছি। এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। দুই বছর দুবাই থেকে তিন-চার মাস আগে বাড়ি আসে। আবারো বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এলাকার মানুষের বিপদ-আপদের খবর পেলে ছুটে যেত। জব্বার বলতো আমার ছেলে-মেয়ের মতোই এলাকার বাচ্চাদের রক্ষা করতে হবে। বাপ হয়ে ছেলের লাশ কবরে নামানো যে কী যন্ত্রণার!

চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। সূত্র: কালের কণ্ঠ