মাদকে আচ্ছন্ন ‘আপত্তিকর পার্টি’তে ভরপুর প্রযুক্তির আঁতুড়ঘর!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

এখন সবাই প্রযুক্তিপ্রেমী। যিনি স্মার্টফোনের সিকিভাগ ব্যবহারও জানেন না, তিনিও হাই-এন্ড স্মার্টফোন ছাড়া চলেন না। আসলে এর প্রতি বিমুগ্ধতা ছড়িয়েছে মানুষের। আর এ কাজটি সফলভাবে করতে পেরেছে সিলিকন ভ্যালি। আমাদের দৃষ্টিতে সিলিকন ভ্যালি মানেই হাজার হাজার মেধাবী মুখ নিভৃতে অসাধারণ সব আবিষ্কার ঘটিয়ে চলেছেন। হচ্ছেও ঠিক তাই। কিন্তু এই টেক সাম্রাজ্যের অন্দরের অন্ধকার দিকে আলোকপাত করেছে ফক্স নিউজ। প্রযুক্তির এসব উজ্জ্বল নক্ষত্রদের মাদকে আচ্ছন্ন সেক্স পার্টির কথা তুলে এনেছে ভ্যানিটি ফেয়ার।

এমিলি চ্যাং এর লেখা একটি বইয়ের কথা বলছে ভ্যানিটি ফেয়ার। সেখানে বলা হয়, হলিউডের মতো সিলিকন ভ্যালিও যৌনতা আর মাদকে আসক্ত এক জগত। রাজনীতির মাঠ কিংবা মিডিয়ার চেয়েও কোনো অংশে কম নয় এরা। প্রযুক্তি দুনিয়ার বহু টাইকুন, উদ্যোক্তা, বড় বড় কর্মকর্তা আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতারা নিয়মিত মাদকে পরিপূর্ণ হলে যৌনতায় ভরপুর পার্টিতে অংশ নেন।

এ কারণে এখনো নারীরা প্রযুক্তি দুনিয়ায় ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে দ্বিধায় ভোগেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এসব পার্টিতে অংশ নিলে ক্যারিয়ারটাও দ্রুত এগিয়ে যায়। এসব পার্টিতে নারীরাই হয়ে ওঠেন ভোগ্যপণ্য।

হলিউডের জায়ান্ট প্রডিউসার হার্ভে উইনস্টেনের পর চ্যাংয়ের এই বইটি সাধারণ মানুষের মনে নতুন করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। কাজেই নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণ বদলের ক্ষেত্রে একটা বিপ্লবের সম্ভাবনা দেখছে সাংবাদিক এবং সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ফর পাবলিক ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স জিম গ্লাসম্যান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা বিষয়টাকে ঢেলে সাজাতে হলে আরো গভীরে যেতে হবে। পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনোদনতত্ত্বের ধারণা বদলাতে হবে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হতেই পারে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘সেক্স উইকস’ আয়োজিত হয়। সেখানে বক্তা হিসেবে আবির্ভূত হন পর্ন তারকারা। সেখানে সেক্স টয় কম্পানিগুলো তাদের পণ্য প্রদর্শন করে।

কিভাবে আপত্তিকর যৌনতায় ভাসতে হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওয়ার্কশপে অংশ নেন। শেখানোর জন্যে এমন সব বিষয় এবং তার শিরোনাম নির্ধারিত হয় যা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়। তাদের একঘেয়ে না হলে পর্ন তারকাদের মতো হতে উৎসাহিত করা হয়।

এই ধরনের আপত্তিকর বিষয়গুলো কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধারেকাছে আসে তা কারও বোধগম্য নয়। সেখানে শেখানো হয়- কোনো সম্পর্ক নয়, আবেগীয় যোগাযোগ নয়, কোনো প্রতিশ্রুতি নয়।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছানোর আগেই শিক্ষার্থীদের হাই স্কুলে যৌনতাবিষয়ক শিক্ষা প্রদান করা হয়। সেখানে শরীরের ওপরই বেশি জোর দেওয়া হয়। সেক্সের পেছনে দেহের কলাকৌশলগত বিদ্যা শেখানো হয়। যৌনবাহিত রোগের কথা বলা হয়। এসব শিক্ষা ছেলেমেয়েদের সেক্সের দিকে আরো বেশি ধাবিত করছে। অনেক টিনএজার জানান, তাদের প্রেমিক-প্রেমিকার চেয়ে অনেক বেশি জোরজবরদস্তি করছে এসব শিক্ষা।

এমিলি চ্যাং জানিয়েছেন, সিলিকন ভ্যালির এসব প্রযুক্তি টাইকুনরা যৌনতা নিয়ে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে নিজেরাই ব্যাপক উৎসাহিত হয়ে ওঠেন। ন্যায়-নীতি ছাড়া এসবে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিকে নিজেদের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ বলে ধারণা করছেন। আসলে তারা তাই করছেন যে শিক্ষা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই মিলেছে।

এ ধরনের বিষয়কে নিয়ে সমাধানের দিকে যেতে হলে আরো গভীরে ডুব দিতে হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখতে হবে, যৌনতার ক্ষেত্রে মানুষ অন্য একটা মানবদেহকে কী কেবলই একটা বস্তু হিসেবে মনে করছে? নাকি সঙ্গিনীর প্রতি তার মূল্যবোধ ও সম্মানবোধ রয়েছে? যেটাই মনে করুক না কেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাতে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটতে দেওয়া চলবে না।
সূত্র : ফক্স নিউজ