মওলানা ভাসানী গণতন্ত্রের সংগ্রামে ক্রমেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন: রাজশাহীতে জোনায়েদ সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাওলানা ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলা শাখার আয়োজনে  ‘মাওলানা ভাসানী ও আমাদের সময়ের রাজনীতি’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় নগরীর সাহেববাজারস্থ একটি রেস্টুরেন্টের সেমিনার রুমে এর আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, যতই দিন যাচ্ছে মওলানা ভাসানী সার্বভৌমত্ব ও মানুষের মুক্তির রাজনীতির দিশা নিয়ে ততই আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন।

সাকি বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীই প্রথম ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে পাকিস্তানকে আসসালামু আলাইকুম জানিয়ে দেন। পূর্ব বাংলার মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা সেই প্রথম রাজনৈতিক ভাষা পেয়েছিল। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ এক দশকের লড়াইয়ে আইউব শাহীর বিরুদ্ধে শেষ পদাঘাত ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অবিসংবাদিত নেতা তিনিই।

জোনায়েদ সাকি আরো বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীতে সংবিধান প্রণয়নে নতুন জনপ্রতিনিধিত্বের দাবি তোলেন মওলানা ভাসানী। রাজনৈতিক জুলুম-নিপীড়ন ও লুটপাটের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিলেন তিনি। দেশে দুর্ভিক্ষাবস্থার অনুমান করে দুর্ভিক্ষের প্রতিরোধ ও জনগণের জীবন বাঁচাতে আন্দোলনও গড়ে তোলেন তিনিই। জীবনের শেষ সময়েও মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের মানুষ ও নদী বাঁচাতে ফারাক্কা লং মার্চে নেতৃত্ব দেন। নদীতে বাঁধ দেয়ার নীতির বিরুদ্ধে রাজনীতিকদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম অবস্থান নেন। তিনিই দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘পিণ্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব করতে নয়’।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, মওলানা ভাসানী এমন একজন নেতা ছিলেন, যিনি বাংলাদেশের সকল নিপীড়িত মানুষের রাজনৈতিক আকাঙক্ষার অভিভাবক হিসেবে একজন সার্বজনীন নেতা। তাঁর সারা জীবনের সংগ্রামের একটিই লক্ষ্য ছিলো শোষিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তি। তাঁকে আজকের বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী একনায়কত্বের সময়ে স্মরণ করাই শুধু নয়, প্রয়োজন তার চেতনাকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। আজকের বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর স্মৃতিকে জাগরুক রেখেই সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হবে বলে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন।

সভাটি পরিচালনা করেন গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলা শাখার সম্পাদক জুয়েল রানা।

 

স/শা