মমতার উপনির্বাচন বৃহস্পতিবার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচন আগামীকাল বৃহস্পতিবার। গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় হারার পরেও ফের মুখ্যমন্ত্রী থাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ভোটে জিতে আসতেই হবে। কলকাতায় দুই দিন ধরে চলা নিম্নচাপের বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে আজ মঙ্গলবারই বুথ এবং এজেন্টদের নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে তৃণমূল। কর্মীদের তালিকা হাতে রেখে ১০০ শতাংশ ভোটারকে বুথে আনার টার্গেট নিয়ে নামছে নেতৃত্ব।

ভোটের প্রচার পর্বের সবটা শেষ হয়ে গেছে গত সোমবার। আজ মঙ্গলবার একেবারে রুটিন বৈঠক করে নেতৃত্ব। সেখানে আটটি ওয়ার্ডের প্রতিনিধি থেকে বুথ এজেন্টদের দফায় দফায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কী করণীয়। দলের নেতৃত্বের স্পষ্ট নির্দেশ, ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, যাঁরা ভবানীপুরের বাসিন্দা নন, তারা কেউ আর ভোটের দিন ভবানীপুর বিধানসভায় থাকবেন না। নির্বাচনী বিধি মেনে তারা থাকবেন নিজেদের এলাকায়। কোন কর্মীর কোন বুথে দায়িত্ব, সেই তালিকা নির্দিষ্ট নেতার কাছে থাকবে। সকাল দশটা থেকে তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট নেওয়ার কাজ শুরু করবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। সব মিলিয়ে রিপোর্ট যাবে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে।

দুপুরের মধ্যে ভোট দিতে যাওয়ার কথা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের। বিকেলে মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দিতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবানীপুরে ২৮৭টি বুথ। ভোটার দুই লাখ ২৫ হাজার। প্রত্যেকে যেন ভোট দিতে আসেন, তা নিশ্চিত করতে বুথপিছু নির্দিষ্টসংখ্যক কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টই নেওয়া হবে সকাল থেকে। এই বিধানসভায় সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট রয়েছে ২২ শতাংশ। বেশির ভাগই ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। চেতলায় ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে লক্ষ্য ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ভোটের। অবাঙালি ভোট রয়েছে ১২ শতাংশ। তাদের ভোট ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ৭০ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে গত ভোটে পিছিয়ে ছিলেন শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়ও। সেই দুটি ওয়ার্ডেও এবার বেশি ভোটের টার্গেট নেওয়া হয়েছে।

উপনির্বাচনে ভোট কম পড়ে। সে কথা মাথায় রেখেই ভোটারদের বুথকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বস্তি ও কলোনি এলাকার ৯০ শতাংশ ভোটারকে বুথে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এর মধ্যেই প্রকৃতির অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা থাকছে। বুথে দুজনের বেশি কর্মীকে থাকতে নিষেধ করা হয়েছে নির্বাচনী বিধির কথা ভেবে। তার বদলে প্রতি গলিতে কর্মীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে পারেন। এর মধ্যে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিজেপি যেন কোনোভাবে অশান্তি করার সুযোগ না পায়। প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না।

এই ভোটে মমতার বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এবং সিপিএমের শ্রীজীব গোস্বামী। কংগ্রেস এখানে এবার প্রার্থী দেয়নি।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ