মনোনয়ন বঞ্চিত ও সমর্থকেরা দুই ভাগে বিভক্ত

আজিজার রহমান,খানসামা: 
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ১২দিন বাকি। তবে দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনে নির্বাচনী আমেজ উৎসবে পরিণত হয়নি। আসনটিতে আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকার কারণে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছেন৷
বরাবরই আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে থাকলেও এবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ভোটের লড়াইয়ে না আসায় আওয়ামী লীগের কৌশলের কারণে নৌকা বনাম আওয়ামী লীগের ভোটের লড়াইয়ের অপেক্ষায়। আসনটিতে মোট ৪ জন প্রার্থী ভোট মাঠে লড়াই করবেন।
তারা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বতন্ত্র ট্রাক মার্কার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম তারিক, জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী মোনাজাত চৌধুরী মিলন ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) মনোনীত আম মার্কার প্রার্থী আজিজা সুলতানা।
আলোচনায় থাকা দুই প্রার্থীদের মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে গণসংযোগ চালাতে দেখা গেলেও এই আসনে জাতীয় পার্টি ও এনপিপি প্রার্থী মিলিয়ে মোট দুইজন নির্বাচন করলেও তাদের নেই কোনো তোরজোর।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ১১ জনের মধ্যে ৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন নিলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে লড়াই করছেন তারিকুল ইসলাম তারিক। মনোনয়ন বঞ্চিত মো. মিজানুর রহমান মানু, ডা. এম আমজাদ হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম ও জ্যোতিষ চন্দ্র রায় বর্তমানে প্রকাশ্যে নৌকার কাজ করলেও। বাকি ৬ জনের মধ্যে মো. আনোয়ার হোসেন নৌকার ভোট চেয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাকীদের মধ্যে এ্যাড. সামসুর রহমান পারভেজ প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোট করছেন। বাকীদের নেই কোন ভূমিকা।
তবে মনোনয়ন বঞ্চিত সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে বিভক্তি। তাদের অধিকাংশই স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে কাজ করছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়েছে এ আসনে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও ট্রাক প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম তারিকের সমর্থনে এই বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। নৌকার পক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী, সহ-সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম, সদস্য মোস্তফা আহমেদ শাহ্ কাজ করছেন। এছাড়া ট্রাকের পক্ষে উপজেলা সহ-সভাপতি রতন কুমার রত্ন ও আমিনুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা ও ধীমান দাস, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. সামসুর রহমান পারভেজ কাজ করছেন।
ইতিমধ্যে নৌকা মার্কার প্রচারণা কেন্দ্র করে আসনটিতে হাতাতিরও নিজেদের মধ্যে ঘটনা ঘ‌টে‌ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিজেদের মধ্যেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও বিব্রত।
পদধারী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অনেকেই উপরে উপরে নৌকার নির্বাচন করলেও ভেতরে তারা কাজ করছেন ট্রাকের পক্ষে। দল ও সংগঠনের পদ হারানোর ভয়ে তারা এই কাজ করছেন, বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
এরইমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী নৌকার বিরুদ্ধে যারা কাজ করছেন, তাদের বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন। এ দিকে যারা ট্রাক প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে কাজ করছেন তারা বলছেন, মাঠ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যে যার মত প্রার্থীর হয়ে কাজ করতে পারবে। কেন্দ্র ঘোষিত কাউকেই বহিস্কার করা হবে না বলে জানিয়েছেন তারা।
এ দিকে ডামি নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের জনমত তৈরির লক্ষ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রবিউল আলম তুহিনের নেতৃত্বে শুক্রবার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।