‘মণ্ডপে হামলায় নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে লজ্জা পেয়েছি’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা টানা ১২ বছর ধরে এ দেশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠানে হামলা ও দুর্ঘটনা হয়নি। কিন্তু এখন নির্বাচন সামনে রেখে দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করেছে একটি দল। আওয়ামী লীগের প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে আস্থা তা নষ্ট করার জন্য ও পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমি মনে করি।

আজ মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের’ মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে থেকে মানবিক উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কুমিল্লা ঘটনার পর সারা দেশের নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকলে অন্যান্য জায়গায় এসব ঘটনা ঘটত না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আরো সতর্ক থাকলে সাম্প্রদায়িকতার ঘটনা ঘটানোর সাহস পেত না। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের যে ব্যর্থতা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক নির্ভয়ে থাকবে। কেন তারা দেশ ছাড়বে, তারা তো মুক্তিযুদ্ধ করেছে। জীবন দিয়েছে, এই দেশে থাকার তাদেরও অধিকার আছে। তারাও এ দেশের প্রথম শ্রেণির মানুষ।

সব কিছু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এত বড় সংগঠন, এত কর্মীবাহিনী। কুমিল্লার ঘটনার পরদিন চৌমুহনীর ঘটনা ঘটেছে। যদি কঠোরভাবে সতর্কতা আপনারা অবলম্বন করতেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকলে এদের এত দুঃসাহস হতো? এ রকম তাণ্ডব চৌমুহনীতে তারা করে গেল।

কাদের বলেন, ভোট এলেই হিন্দুদের কাছে গিয়ে আমরা যারা মায়াকান্না করি, হিন্দুদের দরদ দেখাই, হিন্দুদের বিপদের সময় আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি কেন? এ প্রশ্ন আপনাদের প্রত্যেকের বিবেকের কাছে আমি রেখে গেলাম।

তিনি আরো বলেন, এতগুলো মণ্ডপ চৌমুহনীতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিল, আপনারা কি নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন? একটা প্রতিরোধও তো হলো না। এটা নোয়াখালীর সন্তান হিসেবে আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আমি নিজে লজ্জা পেয়েছি। কী জবাব দেব আজকে হিন্দু সম্প্রদায়কে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনাদের সঙ্গে আছে, আওয়ামী লীগ আপনাদের সঙ্গে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে, ভয় পাবেন না। সাম্প্রদায়িক হামলায় যেসব পূজামণ্ডপ ভাঙা হয়েছে, সেগুলো আবার নতুন করে সরকারি সহয়তায় নির্মাণ করা হবে। শেখ হাসিনার সরকার মুখে নয়, কাজে প্রমাণ করে দেখায় আমরা অসাম্প্রদায়িক।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু  চিহ্নিত হয়েছে, তাদেরকে চিনে রাখতে হবে। নির্বাচন সামনে রেখে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত করছে বিএনপি। সাম্প্রদায়িক শক্তির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। এ সময় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ খায়রুল আনাম চৌধুরী সেলিম, আমেনা নূর ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আল জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ