ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে দরিদ্র দেশগুলো

ধনী দেশগুলো ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরবরাহ মজুদ করে ফেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দরিদ্র দেশের ৯০ ভাগ জনগোষ্ঠী আগামী বছর ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হবে বলে নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে।

দরিদ্র দেশে টিকাদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা প্রতিষ্ঠান দ্য পিপল’স ভ্যাকসিন অ্যালাইয়েন্স তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ধনী দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার তিন গুন বেশি ভ্যাকসিন ডোজ নিশ্চিত করে রেখেছে। এর ফলে ৬৭টি দরিদ্র দেশের প্রতি দশ জনের মাত্র একজন ভ্যাকসিন পাবে বলে সতর্ক করেছে ভ্যাকসিন অ্যালাইয়েন্স। এই অ্যালাইয়েন্সে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অক্সফামের মতো মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

৬৭টি দেশের মধ্যে কেনিয়া, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও ইউক্রেনে এখন পর্যন্ত ১৫ লাখের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে।

অন্য দিকে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশের প্রতিনিধিত্বকারী ধনী দেশগুলো ৫৩ শতাংশ ভ্যাকসিন ডোজ ইতোমধ্যেই মজুদ করেছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হং কং, ম্যাকাউও, নিউজিল্যান্ড, ইসরায়েল ও কুয়েত।

এ প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইকোনোমিক ও সোশ্যাল জাস্টিস বিভাগের প্রধান স্টিভ ককবার্ন বলেন, ‘ভ্যাকসিন মজুদের ফলে বিশ্বের সকল স্থানে সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণের বিষয়টিকে স্পষ্টভাবেই অবহেলা করা হচ্ছে।’

অক্সফাম জানায়, কানাডা তাদের মোট জনসংখ্যার পাঁচগুণ ভ্যাকসিন সরবরাহ মজুদ করেছে। আরেক শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়া মোট জনসংখ্যার ৮৮ শতাংশ ভ্যাকসিন মজুদ করেছে।

অন্যদিকে ফিলিপাইনের মতো উন্নয়নশীল দেশ ২৬ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে পেরেছে যা তাদের ১০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ১৩ লাখকে প্রদান করা সম্ভব হবে।

অক্সফামের হেলথ পলিসি চিফ আনা ম্যারিয়ট বলেন, ‘জীবন বাঁচানো ভ্যাকসিন থেকে কেউই বঞ্চিত হতে পারেন না তা তিনি যে দেশেই থাকুন অথবা যে টাকাই তার পকেটে থাকুক না কেন।’

‘কিন্তু কোনো নাটকীয় পরিবর্তন না এলে আগামী বছরগুলোতে বিশ্বের শত কোটি মানুষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে পারবে না’, যোগ করেন তিনি।