ভোলাহাটে আতংকের নাম আলী নবী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার এক মুর্তিমান আতংকের নাম আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহ (৩২)। তার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত ভোলাহাটবাসী। তার নামে ভোলাহাট থানা এবং র‌্যাব-৫ রাজশাহী অফিসে বিভিন্ন সময় অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে ও র‌্যাবের সোর্স পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে অস্ত্র বা জাল টাকা দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে অনেকের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ভুরিভুরি। মুরুব্বী, শিক্ষক, যুবক, বৃদ্ধ, দিনমজুর বা হোটেল মালিক কেউ রেহাই পায়নি তার থেকে। বিচার করে দেয়ার নাম করে উল্টো বিচারপ্রার্থীকে ফাঁসানোর অভিযোগও আছে আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহর বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহ ভোলাহাট উপজেলার ছোট জামবাড়িয়া গ্রামের মো. মফিজ উদ্দীন (মোংলা’র) ছেলে।

উপজেলার মূসরীভুজা বারইপাড়া গ্রামের হাজি রুস্তম আলীর ছেলে মো. আব্দুল আওয়াল, আলী নবীর অন্যায় নির্যাতন হতে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে ভোলাহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন (যার নং-৩০০/১৮ তারিখ-০৭/১০/২০১৮)। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল আওয়াল, মুসলিমপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি। তার এই মৎসজীবি সমিতি গোমস্তাপুর থানাধীন প্রায় ৫০৪ একরের বিলগুলদাহে বিলটি লিজ পায়। লিজ পাবার পর থেকেই আলী নবী ও কৃষ্ণপুর গ্রামের মোঃ রফিক আলীর ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম (৩৫) ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করায়, তারা জলকর রক্ষা ঘরে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখে অর্থের ক্ষতিসাধনসহ, ফাঁসানোর ঘোষণা ও পরিকল্পনা করেছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে, আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহ ও তরিকুল অত্যন্ত দুধ্ধর্ষ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

উপজেলার বড়গাছি বাজারের ফাইভ স্টার হোটেলের মালিক এমদাদ বলেন, গত রোজার আগে, হোটেলে খাওয়ার বাকী টাকা আলী নবীর কাছে চাইতে গেলে সে (আলী নবী) উত্তেজিত হয়ে আমার উপর চড়াও হয়ে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে অস্ত্র দিয়ে র‌্যাব দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত রোজায় কথিত র‌্যাব দিয়ে আমার ছেলে ও ভাতিজাসহ আমাকে উঠিয়ে নিয়ে তার (আলী নবী) দোকানে নিয়ে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। কথিত র‌্যাবের সামনেই আলী নবী আমার ভাতিজাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে তার লাঠির আঘাতে আমার ভাতিজার হাত ভেঙ্গে যায়। তিনি আরও বলেন, আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহর এই অন্যায় অত্যাচারের বিচার উপর ওয়ালার নিকট ছেড়ে দিয়েছি।
জামবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহ এলাকার অনেক লোককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে সর্বশান্ত করেছে। আমি তার এহনে অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করলে সে আমাকেও দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। এলাকাবাসী নবী উল্লাহর হাত থেকে বাঁচতে চাই। তিনি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আলী নবীর শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে আলী নবী ওরফে নবীউল্লাহর নিকট মোবাইলে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি চক্রান্তের শিকার। ‘শত্রুতাবশত কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও খারাপ লোক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দীন ম-ল বলেন, আমি শুনেছি নবীউল্লাহ বিভিন্ন জনকে হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কেউ তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

স/শা