নিজস্ব প্রতিবেষদক :
বর্তমান ফ্যাসিবাদি সরকারের ড্যামি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যাবে না মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্ঠা, সাবেক মেয়র ও এমপি জননেতা মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, ভোট কেন্দ্রে বিশেষ চার পা আলা জন্তু ছাড়া আর কাউ যাবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
রোববার বেলা ১১টায় নগরীর বাটার মোড়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে ও বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম, খুন, আটক, নির্যাতনের প্রতিবাদে মহানগর এবং জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ অংশ গ্রহণ করবে না। রাজশাহীর মানুষ এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নই আসে না। কারণ রাজশাহী শহীদ জিয়ার দূর্গ। প্রশাসনের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, মামলা থাক বা না থাক আপনারা আমার ভাইদের ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। টাকা দাবি করছেন। এ দিন সব সময় থাকবে না। আমি একজন জাস্টিসকে দিয়ে গুম, খুন, নির্যাতনের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। একজন সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে কিভাবে টাকা দাবি করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, বিষয়গুলো নিরপেক্ষ তদন্ত করুন, বেরিয়ে আসবে আসল সত্যটা।
তিনি আরো বলেন, মাথা পচে গেলে, গোটা শরীর পচে যায়। মাথাই তো আজ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। তারা আর কি করবে। আমি বলতে চাই, দিস বাংলাদেশ ইজ আওয়ার। আমরা অর্জন করতে জানি, আমরা রক্ষা করতে জানি। আমরা লক্ষ কোটি প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশকে রক্ষা করবো। দেশে ১৮৭জন নেতাকর্মী হত্যা-গুম হয়েছে। নির্যাতনের হিসেব নাই। ম্যান্ডেলার পর সবচেয়ে নির্যাতনকারী ও কারা বরণকারী নেতা বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আজ মৃত্যুর মুখে। আমি সরকারকে বলতে চাই, ম্যাডামের কিছু হলে আমরা ডান বাঁম দেখবো না। কারণ আমাদের নেতা তারেক রহমান।
বিএনপি সন্ত্রাসী দল নয় উল্লেখ করে মিনু বলেন, বিএনপি অত্যান্ত সুসংগঠিত দল। বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক মানুষের দল। আমরা আন্দোলনে বিশ^াস করি। বিএনপি শান্তিপুর্ন আন্দোলনে বিশ^াস করে। বিভিন্নস্থানে গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে মিনু বলেন, সরকারের ভাড়াটিয়া ও সরকারী দলের লোকজন, বিভিন্ন জায়গায় পুরোনো গাড়ি ক্রয় করে প্রশাসনের পাহারায় সেই সমস্ত গাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর মিথ্যে মামলা দিচ্ছে। আটক করা হচ্ছে নির্দোষ নেতাকর্মীদের।
তিনি বলেন, আপনাদের নেতার বিচার ৪০ বছর পর যদি হতে পারে, মনে রাখবেন বিএনপি ক্ষমতায় আসবেই। আমরা সেইদিন নিরপক্ষে তদন্ত করে যারা হত্যা, গুমকারী, যারা এসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদেরও উপযুক্ত বিচারের ব্যবস্থা করবো।
তিনি বলেন, ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে বিএনপি নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে আটক করা হচ্ছে। চালানো হচ্ছে হামলা, দেয়া হচ্ছে মামলা। এই জুলুম ও অত্যাচারের জবার আন্দোলনের মাধ্যমে দেয়া হবে। এই সরকার বাংলাদেশের জনগণকে একটি বিষাক্ত মাকড়শার জালের মধ্যে আটকে রেখেছে। দেশের মানুষকে বাঁচাতে, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে এই জাল কেটে ফেলতে হবে। তিনি বলেন, এর অবৈধ সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে নায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। নিত্যপন্যের মূল্যবৃদ্ধি করে মানুষকে মহাবিপদে ফেলেছে। আইন শৃংখলাবাহিনী গণহারে বিএনপি পরিবারের সদস্যদের আটক করছে। পুলিশের হাত থেকে আবাল বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশুরা রেহাই পাচ্ছে না। আমরা সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবো। দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল বাতিল, তত্ত্বাবধায় সরকারের অধিনে নির্বাচন, আটক বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তি দাবী করেন তিনি।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি জাহান পান্না, অধ্যক্ষ সালমা সাহাদাৎ, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ^নাথ সরকার, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ও বজলুল হক মন্টু, রাজশাহী মহানগর জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেন।
যুবদল রাজশাহী রাজশাহী মহানগরের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক শফিকুল আলম সমাপ্ত, সদস্য সচিব আকুল হোসেন মিঠু, মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম টুকটুকি, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট রওশন আরা পপি, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সকিনা খাতুন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকটে সামসাদ বেগম মিতালী, সাধারণ সম্পাদক মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি, এডাভোকেট আবুল কাশেম, পারভেজ তৌফিক জাহেদী, রইসুল ইসলাম, জমসেদ আলী, শাহজাহান আলী ফাহিম, এনামুল হক, তারেক হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন, সিফাত জেরিন তুলি ও হাবিবুর রহমান সহ বিভিন্ন জেলা ও মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।