ভেঙে গেল নায়িকা মুনমুনের সংসার

দশ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তারা। খোঁজ নিতে গেলে বেশ সুখী দম্পতি হিসেবেই তাদের নাম শোনা যেত। নানা অনুষ্ঠানে স্বামীকে নিয়ে আসতেন তিনি। পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সিনেমার মানুষদের সঙ্গে। দুটি সন্তানও রয়েছে। বোঝা যেত সংসারের প্রতি বেশ মনযোগী চিত্রনায়িকা মুনমুন।

তবে সেই সংসার টিকিয়ে রাখতে পারলেন না। স্বামী মীর মোশাররফ হোসেন রোবেনের নির্যাতন ও স্বার্থপরতার শিকার হয়ে তাকে তালাক দিয়েছেন ‘রানি কেন ডাকাত’খ্যাত এ নায়িকা। গেল কোরবানি ঈদের পরদিন তালাক কার্যকর হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন মুনমুন নিজেই।

নায়িকা মুনমুন ২০০৩ সালে সিলেটের একজন ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। সিনেমায় অনিয়মিত হওয়ার পর স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে চলে যান। ২০০৬ সালে সেই সংসার ভেঙে যয় মুনমুনের। এরপর দেশে ফিরে আসেন। যোগ দেন যাত্রা ও স্টেজ শো-তে। সেখানে কাজ করতে গিয়ে পরিচয় ঘটে রোবেনের সঙ্গে। সেই পরিচয় সূত্রে প্রণয়। অবশেষে ২০১০ সালে তিনি তাকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। এক দশকের সেই সংসারটিও এবার ভেঙে গেল।

কেন স্বামী রোবনেকে ডিভোর্স দিলেন মুনমুন? এ প্রসঙ্গে জানিয়ে গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর আমরা একসঙ্গে ছিলাম। কেউ চায় না সংসার ভেঙে যাক। যেখানে একটা সন্তানও রয়েছে আমার। পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অনেক চেষ্টা করেছি। বারবার চেয়েছি রোবেন বুঝুক কিন্ত সে বেপরোয়া। বাধ্য হয়ে তাকে ডিভোর্স দিতে হলো।’

তিনি জানান, তার স্বামী রোবেন পেশায় একজন শৌখিন মডেল। তার সঙ্গে যাত্রা ও স্টেজ শো-তে কাজ করতে গিয়ে মুনমুনের পরিচয় ও প্রেম-বিয়ে। কিন্তু সংসার শুরু করার পর থেকেই রোবেন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। স্বার্থপর রোবেন সংসারের দিকে মনোযোগ ছিলেন না। তিনি সিনেমাও বানাতে চাইতেন যার অর্থের যোগান দিতেন মুনমুন। বেশ কয়েকবার সিনেমার পরিকল্পনা করেছেন। টাকাও নষ্ট করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হতো না। এসব নিয়ে মুনমুনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হতো। রোবেন অনেক সময় মুনমুনকে মারধরও করতেন বলে জানান মুনমুন।

এ নায়িকা বলেন, ‘তার জন্য আমি অনেক স্যাক্রিফাইস করেছি। আসলে আমি চেয়েছি সংসারটি টিকে থাকুক। তার সুবিধার জন্য আমার নিজের একটি ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছিলাম ও স্টুডিও করবে বলে। বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা দিতাম। কিন্তু সে কিছুই করতে পারলো না। উল্টো তার হতাশা সে আমার উপর ক্ষোভ হিসেবে প্রয়োগ করেছে। আমার উপর শারীরিক নির্যাতনও করতো সে। এটা আমি মেনে নিতে পারতাম না।

ঝগড়া হতো। একবার ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত নিলাম। তখন চার বছর সেপারেশনে ছিলাম। হঠাৎ সে যোগাযোগ করলো। বললো সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে। আবারও সে ফিরে আসে আমার ফ্ল্যাটে। কিছুদিন না যেতেই আগের মতো হয়ে গেল। সব মিলিয়ে দেখলাম রোবেনের সঙ্গে আর একসঙ্গে থাকা সম্ভব না। শারীরিক নির্যাতনের মাত্রাও দিনদিন বেড়ে যাচ্ছিলো। তাই ওকে ডিভোর্স দিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, মুনমুন ১৯৯৭ সালে বিখ্যাত পরিচালক এহতেশাম পরিচালিত ‘মৌমাছি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। এরপর প্রায় ৮৫টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মিজানুর রহমান মিজান পরিচালিত ‘রাগী’ চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

সম্প্রতি টাঙ্গাইলের সখীপুরে মসজিদের সামনে নেচে তুমুল সমালোচনায় পড়েন অভিনেত্রী মুনমুন। এরপরেই জানা গেল মুনমুনের সংসার ভাঙনের ঘটনা।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ