ভিয়ারিয়ালকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

প্রথম লেগের দুই গোলের ঘাটতি পুষিয়ে পরের ধাপে যেতে ভিয়ারিয়ালকে করে দেখাতে হতো দারুণ কিছু। প্রথমার্ধে উজ্জীবিত ফুটবলে লিভারপুলকে কোণঠাসা করে দুই লেগ মিলিয়ে সমতা টেনে আশাও জাগাল স্প্যানিশ দলটি, কিন্তু বিরতির পর খেই হারিয়ে ফেলল তারা। দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।

প্রতিপক্ষের মাঠে মঙ্গলবার (৩ মে) রাতে সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লিভারপুল জিতল ৩-২ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ গোলের অগ্রগামিতায় প্যারিসের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করল ইংলিশ দলটি। মৌসুমে চার শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাও বাঁচিয়ে রাখল ভালোভাবে। বোলায়ে দিয়া ও ফ্রান্সিস কোকেলিনের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ১২ মিনিটের মধ্যে লিভারপুলের তিন গোল করেন ফাবিনিয়ো, লুইস দিয়াস ও সাদিও মানে।

দুই অর্ধে দুই দলের দাপটের চিত্র স্পষ্ট পরিসংখ্যানেও। প্রথমার্ধে গোলে পাঁচটি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখা ভিয়ারিয়াল অবিশ্বাস্যভাবে, বিরতির পর কোনো শটই নিতে পারেনি! আর লিভারপুল প্রথমার্ধে যেখানে মাত্র দুটি শট নিতে পারে, দ্বিতীয়ার্ধে তারাই শট নেয় ১৩টি, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।

ভিয়ারিয়ালের শুরুটা হয় স্বপ্নের মতো। তৃতীয় মিনিটে বাঁ দিক থেকে পেরভিস এস্তুপিনানের ক্রস দূরের পোস্টে পেয়ে এতিয়েন কেপুর বাড়ান ছয় গজ বক্সের মুখে। ফাঁকা জালে বল পাঠিয়ে স্বাগতিক দর্শকের উচ্ছ্বাসে ভাসান সেনেগালের ফরোয়ার্ড দিয়া।

প্রথমার্ধে লিভারপুল কিছু ‘হাফ চান্স’ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি সেসব। বরং ৩৮তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পান জিওভানি লো সেলসো। সতীর্থের পাস ডি-বক্সে পেয়ে প্রথম স্পর্শে এগিয়ে আসা আলিসনকে কাটাতে যান তিনি, তবে ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষকের চ্যালেঞ্জে পড়ে যান আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। পেনাল্টির জোরাল আবেদন হলেও রেফারির সাড়া মেলেনি। একটু পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে ভিয়ারিয়াল। নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা করে বাড়ানো বল খুঁজে পায় কেপুকে। ডান দিকে বাইলাইনের কাছে একজনের বাঁধা এড়িয়ে তিনি ক্রস বাড়ান ছয় গজ বক্সের মুখে। লাফিয়ে হেডে বাকিটা সারেন কোকেলিন।

দুই লেগ মিলিয়ে তখন ২-২ সমতা। ভিয়ারিয়ালের সমর্থকরা দারুণ কিছুর আশায়, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন খুঁজেই পাওয়া গেল না স্বাগতিকদের। ৫৫তম মিনিটে লিভারপুল ডিফেন্ডার ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আরনল্ডের শট প্রতিপক্ষের কোকেলিনের পায়ে লেগে ক্রসবারে বাঁধা পায়। ছয় মিনিট পর দুই লেগ মিলিয়ে দলকে এগিয়ে নেন ফাবিনিয়ো। মোহামেদ সালাহর পাস ধরে এই ব্রাজিলিয়ানের শট গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়ায়।

চার মিনিট পরই আবার ভিয়ারিয়ালের জালে বল। এবার আলেকজান্ডার-আরনল্ডের ক্রসে হেডে ম্যাচে সমতা টানার পাশাপাশি দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন কলম্বিয়ার ফরোয়ার্ড দিয়াস। ৭৪তম মিনিটে গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলির ভুলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে মানেকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যর্থ হন তিনি। বল ধরে এগিয়ে ফাঁকা জালে পাঠান সেনেগালের ফরোয়ার্ড। শেষ দিকে লিভারপুলের কার্টিস জোন্সকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কেপু।

এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে বড় চমকের নাম ছিল ভিয়ারিয়াল। শেষ ষোলোয় ইউভেন্তুস ও কোয়ার্টার-ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের মতো দলকে ছিটকে দিয়ে তারা উঠে আসে সেমি-ফাইনালে। এখানেও দারুণ কিছুর সম্ভাবনা জাগালেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না তারা। কোয়াড্রপলের পথে দারুণভাবে ছুটে চলা লিভারপুল পাঁচ মৌসুমের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল। আরেক সেমি-ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে ২৮ মে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে ক্লপের দল। প্রথম লেগে ৪-৩ গোলে জেতা সিটি বুধবার মাদ্রিদে খেলবে।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন