বুধবার , ১২ এপ্রিল ২০১৭ | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ভারতে মুসলিমদের উপর হামলায় বিরোধীদের নালিশ

Paris
এপ্রিল ১২, ২০১৭ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ভারতে মুসলিমদের ওপর দক্ষিণ পন্থী শক্তিগুলোর একের পর এক হামলার ঘটনায় দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র হুমকির মুখে পড়েছে বলে বিরোধী দলগুলো আজ সম্মিলিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে নালিশ জানিয়েছে।

কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে দেশের মোট ১৩টি বিরোধী দল একযোগে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।

 

রাজস্থান, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে গো-রক্ষার নামে শাসক দলের মদতপুষ্ট মিলিশিয়া বাহিনী যেভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, বিরোধীরা তার কড়া নিন্দা করেছেন ও রাষ্ট্রপতিকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

ভারতে বিরোধী দলগুলো খুব কম বিষয়েই একমত হতে পারে – মাস কয়েক আগে নরেন্দ্র মোদি সরকার যখন পাঁচশো ও হাজার রুপির নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তখনও তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে পদযাত্রায় সব বিরোধী দল সামিল হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি যেভাবে গোরক্ষার নামে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চলছে, এদিন প্রায় সব বিরোধী দলই একযোগে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে তার প্রতিবাদ জানিয়েছে।

 

বিরোধীদের পেশ করা স্মারকলিপির খসড়া করেছেন যিনি, সেই কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলছেন, “সহিংসতার একটা পরিবেশ চলছে সারা দেশ জুড়ে। মানুষকে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মেরে ফেলা হচ্ছে, গাছে লটকে দেওয়া হচ্ছে।”

 

“কিছু লোক নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে, তারা রাস্তায় আপনাকে আটকে ফাঁসিও দিয়ে দিতে পারে – আর এরা সবাই শাসক দল বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কিত। রাজস্থানের আলোয়াড়ে, ঝাড়খণ্ডে, গুজরাটে সর্বত্র একই ছবি। দাদরির ঘটনা তো সারা দুনিয়া জানে, উধমপুরেও নিরীহ ট্রাক ড্রাইভারকে গরু পাচারের মিথ্যা অভিযোগে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

 

“এই পরিস্থিতিতে দেশে সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে আমরা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছি”, বলেছেন মি আজাদ।

 

বিরোধীদের এই বিরল সম্মিলিত উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী – আর তাতে যোগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও।

 

পশ্চিমবঙ্গে যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সেই বামপন্থী ও তৃণমূল কংগ্রেস উভয় দলই ছিল ওই প্রতিনিধিদলে।

 

তৃণমূল এমপি সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, “সারা দেশ জুড়ে একটা ধর্মীয় সন্ত্রাস চলছে। নিরপরাধ মানুষকেও পিটিয়ে মারা হচ্ছে ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে। আমাদের দেশে দীর্ঘদিনের যে ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো আছে তার জন্য এটা একটা অত্যন্ত অশুভ সংকেত ও বিপজ্জনক প্রবণতা।”

 

আর এই একটি বিষয়ে বামপন্থীরাও তার সঙ্গে একমত। আসলে ভারতে এই প্রথম যেভাবে একসাথে কেন্দ্রে ও উত্তরপ্রদেশে বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে, সেটা দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য বিপদসংকেত বলেই মনে করছেন সিপিআই এমপি ডি রাজা।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেরার পর তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “গোরক্ষার নামে দেশে যা চলছে – আসলে গরুকে একটা রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে দেশের দলিত, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের আতঙ্কিত করে তোলা হচ্ছে।”

 

”বিফ যাদের খাদ্যাভ্যাসের অংশ, তাদেরকে এই সহিংসতার শিকার হতে হচ্ছে। আমি কি খাব না-খাব সেটা সরকার বলে দেওয়ার কে? কিন্তু আজকের ভারতে সরকারকে প্রশ্ন করলেই আপনাকে দেশদ্রোহীর তকমা পেতে হবে”, বলছিলেন মি রাজা।

 

তবে প্রত্যাশিতভাবেই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে বিরোধী নেতারা এদিন কোনও সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পাননি।

 

তৃণমূল এমপি সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, “রাষ্ট্রপতি সচরাচর এমন পরিস্থিতিতে কোনও কমিট করতে পারেন না, কারণ তার প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থান এমনই যে মন্ত্রীসভার অনুমোদন সাপেক্ষেই তাকে কাজ করতে হয়। তবু তিনি বলেছেন যে সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে তার পক্ষে কী করা সম্ভব তা তিনি খতিয়ে দেখবেন।”

 

তবে অতীতে দেখা গেছে, বর্তমান রাষ্ট্রপতি তার বিভিন্ন বক্তৃতায় সরকারের নানা কাজকর্মের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমালোচনা করতেও দ্বিধা করেননি।

 

রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র মাস তিনেক বাকি, কিন্তু দেশের এই পরিস্থিতিতে তিনি নীরব থাকবেন না বলেই বিরোধী দলগুলো আশা করছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত