ভারতের কাছে পাত্তাই পেলো না পাকিস্তান

সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক: বড় মঞ্চে এলেই ভারতের কাছে ধরাশায়ী হবে পাকিস্তান-এটাই যেন চিরন্তন সত্যে পরিণত হয়েছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ডিএল ম্যাথডে ভারতের কাছে ১২৪ রানে হেরেছে সরফরাজ আহমেদের দল। ২৮৯ রানের নতুন লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩৩.৪ ওভারে ১৬৪ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। শেষ দিকে চোটের কারণে ওয়াহাব রিয়াজ ব্যাটিং না করায় ভারতের জয়টা আরও দ্রুত হয়ে যায়।

নতুন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে দলটি। অবশ্য এই ম্যাচে বাজে ফিল্ডিংয়ের উদাহরণ রেখেছে ভারত। আজহার আলীকে ৩৭ রানেই ফিরিয়ে দিতে পারতো। কিন্তু ভুবনেশ্বর তার ক্যাচ মিস করায় সেটি হয় বিলম্বিত। হাফসেঞ্চুরি করেই জাদের বলে পান্ডিয়াকে ক্যাচ দেন আজহার।

এর আগে শুরুটা হয় আহমেদ শেহজাদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে। ৯ ওভারেই তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন ভুবনেশ্বর। দলীয় ৬১ রানে বাবর আজমকে জাদেজার ক্যাচ বানান উমেশ যাদব।

মাঝের দিকে মোহাম্মদ হাফিজ প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টা করলেও ৩৩ রানে জাদেজার বলে বিদায় নিলে সেরকম আর কিছুই করতে পারেনি পাকিস্তান। অধিনায়ক সরফরাজও ১৫ রানের বেশি কিছু করতে পারেননি। শোয়েব মালিক আলো ছড়ানোর চেষ্টা করলেও রান আউট হলে সবই ভেস্তে যায়।

ধীরে ধীরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েই ৩৩.৪ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে যায় সরফরাজ আহমেদের দল।

ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন উমেশ যাদব। দুটি করে নেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রবিন্দ্র জাদেজা। একটি নেন ভুবনেশ্বর কুমার।

এর আগে ভারতের ইনিংসও ছিল ঘটনাবহুল। ঠিক যেমন ৮ রানে জীবন পান যুবরাজ সিং, আর বিরাট কোহলি ৪৩ রানে। ‘নতুন জীবন’ পেয়েই যেন পাকিস্তানের বোলারদের ওপর আরও চড়াও হন তারা। একের পর এক চার ছক্কায় শেষ ৪ ওভারে ভারতের স্কোরবোর্ডে যুক্ত হয় ৭২ রান। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত ৪৮ ওভারের ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩১৯ রান। যুবরাজ ও কোহলি ছাড়াও রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের হাফসেঞ্চুরি ছিল উল্লেখযোগ্য।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শিরোপা ধরে রাখার মিশনে ভারত টসে হেরে ব্যাট করতে নামে। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রোহিত ও শিখর ধাওয়ান সাবধানী ব্যাটিং করছিলেন শুরু থেকে। তবে হঠাৎ করে তারা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। দারুণ কয়েকটি চার-ছয়ের প্রদর্শণীতে হাফসেঞ্চুরি করেন তারা দুজন।

রোহিত ৭১ বলে ৩০তম হাফসেঞ্চুরি করেন। তার চেয়ে কম সময় নিয়েছেন ধাওয়ান, পঞ্চাশ ছুঁতে তার লেগে ৪৮ বল। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফসেঞ্চুরি। সাদাব খানের বলে আজহার আলীর ক্যাচ হওয়ার আগে ধাওয়ান ১৩৬ রানের জুটি গড়েন রোহিতের সঙ্গে। ৬৫ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৬৮ রান করেন তিনি। রোহিত দ্বিতীয় উইকেটে বিরাট কোহলির সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি গড়েন। কোহলি সিঙ্গেল নিতে গেলে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্ত থেকে দৌড়ে এসে প্রাণপণ ডাইভিং দিয়েও উইকেট বাঁচাতে পারেননি রোহিত।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করতে আবারও ব্যর্থ হন রোহিত। এবার খুব কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু ৯ রানের আক্ষেপে পুড়তে হলো ভারতীয় ওপেনারকে। ৭১ বলে ক্যারিয়ারের ৩০তম হাফসেঞ্চুরির পর রোহিত থেমেছেন ৯১ রানে।
এর পর যুবরাজ ও কোহলি মাত্র ৯.৩ ওভারে ৯৩ রানের জুটি গড়েন। শাদাব খানের বলে হাসান আলী ক্যাচ ছেড়ে দেন যুবরাজের। জীবন পাওয়ার পর মাত্র ২৯ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। আক্ষেপে পোড়া হাসানই শেষ পর্যন্ত থামান যুবরাজকে, মাত্র ৩২ বলে ৫৩ রানে এলবিডব্লিউ হন তিনি। তখনও বাকি ছিল ভারতের ২.৪ ওভার। শেষ কয়েক বলে আর থামানো যায়নি কোহলিকে। ওয়াহাব রিয়াজের ওভারে ফিল্ডার ফখর জামানের হাতে জীবন পাওয়া ভারতীয় অধিনায়ক ৬৮ বলে ৮১ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষ ওভারে প্রথম তিন বলে ছক্কা মেরে সংগ্রহটাকে আরও বিশাল করেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৬ বলে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ম্যাচ সেরা হন যুবরাজ সিং। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন