বড় পর্দায় খেলা দেখেই স্বাধ মেটাচ্ছেন রাজশাহীবাসী

অমিত হাসান:
রাজশাহীতে আন্তর্জর্তিক মানের স্টেডিয়াম না থাকায় মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর খেলা দেখে স্টেডিয়ামের স্বাধ মেটাচ্ছেন রাজশাহীবাসী। শহরে স্টেডিয়াম থাকা সত্ত্বেও যে খেলা হয় না, তার কিন্তু বিন্দুৃ মাত্র প্রভাব পড়েনি ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে। আর তাই বিপিএল এর এবারের আসরেরও প্রতিটি খেলা এখন নগরীর বিভিন্ন মোড়ে টেলিভিশনসহ বড় পর্দায় উপভোগ করছেন তারা।

 
ক্রিকেটানুরাগীদের মতে, রাজশাহীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হলে একদিকে যেমন রাজশাহীর খেলার জগতের প্রভাব পড়বে তেমনি আন্তর্জাতিক খেলার ভেন্যূ হলে তা রাজশাহীর ঘোরোয়া খেলার একটি প্লাটফর্ম তৈরী হবে। ফলে ঘরোয়া লীগ এবং অন্যান্য খেলা সমূহের মাধ্যমে আরও অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরী করা যাবে।

15301199_1843972892558481_267605984_n-copy
খেলা হয় মাঠে কিন্তু উল্লাস রাস্তাঘাটে। রাজশাহীর সমর্থকদের এমন উদ্দীপনা জানান দেয় ক্রিকেট দুনিয়ায় রাজশাহীর সমর্থদের ভালোবাসা কতটুকু। মূলত খেলা উপভোগ হয় বন্ধু বান্ধবের সাথে দলগত হয়ে। সে সুবিদা নগরবাসিকে তুলে দিতে নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে তৈরী করা হয়েছে বড় পর্দার আসর। নগরীর অলকার মোড়, বিনোদপুর, কাজলা, তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায়, দরগাপাড়ায় পদ্মার পাড়ে, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ এর সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাক্তিগত ভাবে, ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহায়তায় ও কোম্পানির মাধ্যমে টেলিভিশনসহ প্রজেক্টটরের মাধ্যমে এসব খেলা দেখানো হচ্ছে। বিকেল হলেই প্রতিটি বড় পর্দার সামনে দেখা যায় ক্রিকেট অনুরাগীদের ভীড়।

 
নগরীর উপশহর এলাকার মেহেদি হাসান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আমরা রাজশাহীবাসী খেলা প্রেমী। আর ক্রিকেট খেলা হলে তো কথাই নাই। সবার সাথে খেলা দেখার আনন্দই আলাদা। তাই বিপিএল এর খেলা শুরু হলে বন্ধুরা সবাই একসাথে হয়ে বড় পর্দায় খেলা দেখতে যাই।

 

14963369_707919769366007_3879110391656676846_n
তিনি বলেন, স্টেডিয়ামে খেলা দেখার আনন্দ তো আলাদা। আর আমাদের এখানে (রাজশাহীতে) আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম না থাকায় আমরা সে আনন্দ থেকে বঞ্চিত। তারপরও এসব বড় পর্দায় খেলা দেখানোর কারনে আমরা বন্ধুরা অনেকে একসােেথ খেলা উপভোগ করছি। অনেকটা ‘দুধের স্বাধ ঘোলে মেটানোর মত’ ।

 
নগরীর সিএনবি এলাকার নাঈম হোসেন বলেন, আমরা রাজশাহীবাসী ক্রিকেট খেলাটাকে অনেক ভালবাসি। তাই সুযোগ হলে রাজশাহী থেকে ঢাকায় গিয়ে  আমরা খেলা দেখতে যায়। কিন্তু অনেক বন্ধু আছে বিভিন্ন কারনে ঢাকায় যেয়ে খেলা দেখে আসা সম্ভব হয়না। এ কারনে আমরা সবাই একসাথে হয়ে খেলা গুলো উপভোগ করতে পারিনা।
রাজশাহীতে বিপিএল খেলা দিলে হয়তো আমরা রাজশাহী কিংসের সার্পোটাররা মাঠে গিয়ে তাদের আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে সমর্থন করতে পারি। যেভাবে রাস্তায় দাড়িয়ে পোজেক্টটরে খেলা দেখে বন্ধুরা রাজশাহী কিংসকে সার্পোট করছি।

 
দড়িখরবনা এলাকায় ইয়াসিন রানা জানান, রাজশাহীবাসীর প্রাণের দাবি একটা আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম। কিন্তু বিভিন্ন কারনে ক্রিকেট প্রেমী রাজশাহীতে কোন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নাই। আমরা চাই রাজশাহীতে অন্তত একটি আন্তর্জাতিক মানের ষ্টেডিয়াম গড়ে তোলা হোক। এতে ঘরোয়া খেলোয়াড়রা যেমন খেলার সুযোগ পাবে, তেমনি রাজশাহীর ক্রিকেট প্রেমীদের একটি প্লাটফর্ম তৈরী হবে।

 

গত রোববার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুক টাইম লাইনে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাওয়া সমর্থকদের উদ্দেশ্যে যা লিখেন সিল্কসিটি নিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল,

15281087_843069405833091_1660559542_n-png

“স্টেডিয়ামের এই অংশে থেকে য়ারা প্রতিদিন রাজশাহী কিংস কে সমর্থন দিচ্ছেন তাদেরকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ ও ভালবাসা। ”
উল্লেখ্য, রাজশাহী কিংসের লগো উন্মোচন আনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে। রাজশাহীর মানুষ ক্রিকেটপ্রেমী। তাই রাজশাহীকে আবারো ক্রিকেটের জোয়ারে ভাসাতে রাজশাহী কিংসের জন্ম। রাজশাহীতে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম আমি করবোই করবো। রাজশাহী কিংস সেই স্টেডিয়ামেরই বীজ বোপন করলো।’

 
স্টেডিয়ামে যেমন সমর্থক রয়েছে, তেমনি স্টেডিয়ামের বাইরের সমর্থকও কিন্তু কম নেই। খেলা ঢাকায় হলেও প্রতিনিয়ত রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় রাজশাহী কিংসের  সমর্থকদের উল্লাস। আর এই উল্লাস আরো বৃদ্ধি পাবে যখন এই বিভাগীয় শহরে একটি উন্নত মানের স্টেডিয়াম গড়ে তুলে হাজারো সমর্থকদের হৃদয়স্পর্শী খেলা গুলো গ্যালারীতে বসে সরাসরি দেখবে। ক্রীড়াঙ্গনকে পরিচ্ছন্ন রুপ দিতে এবং যুব সমাজকে ধংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এর কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন ক্রীড়াবিদরা।

স/শ