বৃষ্টির মধ্যেই ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর আতাতে রাস্তার কার্পেটিং কাজ

তানোর প্রতিনিধি :

রাজশাহীর তানোর উপজেলার সীমান্তবর্তী চৌবাড়িয়া ব্রীজের বাদশার  মোড় হতে মুশিদপুর ঘাট পর্যন্ত   ১৫০০ মিটার রাস্তায় ভারি বর্ষনের মধ্যে ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর আতাতে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে বলে একাধিক সুত্র থেকে  নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে গত রবিবার  দিবাগত রাতে প্রচুর পরিমানে বৃষ্টি হয়, পরদিন সোমবারও কার্পেটিং করা হয়েছে ।

এমনকি কার্পেটিংয়ের  সময় মান্দা এলজিইডি অফিসের কেউ থাকেন না বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। এদিকে একেবারে  নিম্মমানের ডাবলু বিএম ও প্রাইম বোর্ড করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন স্থানীয়রা। রাস্তার প্রাইম বোর্ড ভিজে থাকার পরও দেওয়া হচ্ছে পিচ। পিচ ঢালায়ে স্থানীয়রা বাধা দিলে ঠিকাদারের লোকজন মামলার হুমকি দেন। একারনে ভয়ে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। এমনকি রাস্তার অনেক জায়গায় প্রাইম উঠে ডাবলু বিএম দেখা গেলেও তড়িঘড়ি করে পিচ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে রাস্তার টিকসই নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দের বিরুদ্ধে সমালোচনা। সেই সাথে একদিকে কার্পেটিং অপর দিকে বৃষ্টিতে উঠে যাচ্ছে পিচ।

স্থানীয়রা জানান, তানোর উপজেলার সীমান্তবর্তী মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া ব্রীজের পূর্বদিকে বাদশার মোড় থেকে মুশিদপুর ঘাট পর্যন্ত ১৫০০ মিটার রাস্তার কাজ করছেন ঠিকাদার লাল্টু। রাস্তার কাজের প্রথম থেকে প্রচুর অনিয়ম করা হয়েছে । বালুর বিপরীতে ভিজে মাটি ও তিন নম্বর ইটের খোয়া দিয়ে করেছেন ডাবলু বিএমের কাজ। যা কিছুদিন পর নষ্ট হওয়া শুরু হয়। জোড়াতালি দিয়ে ডাবলু বিএম সেরে প্রাইম বোর্ড করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যা নিয়ন্ত্রিত টি বাঁধের রাস্তার প্রাইম বোর্ডের একাধিক জায়গায় গর্ত হয়ে খোয়া দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই না গর্তে প্রচুর পানি জমে আছে। গর্ত বৃষ্টির পানি জমে আছে তার মধ্যেই করা হচ্ছে কার্পেটিং। পাথরের সাথে বিটুমিনের বিপরীতে পুড়া মবেল ও আলকাতারা এবং কেরোসিন দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে। কাজ চলা অবস্থায় অনেক জায়গা দেবে গেছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর থেকে ভারি বর্ষন শুরু হয়। এরমধ্যে দেদারসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার লাল্টু । এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পুনরায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ থেকে ট্রাকে করে পাথর পিচ রাস্তায় দিয়ে রোলার করা হচ্ছে। অনেক দুর থেকে পিচ পাথর মিশিয়ে আনার কারনে ট্যাম্মার নেই বললেই চলে। সেখানে ঠিকাদারের লোকজন ছিলেন তারা বলেন, বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার অনুমতি আছে বলেই করা হচ্ছে। বিল্লা নামের মান্দা এলজিইডি অফিসের লোক ছিলেন তিনিও বলেছেন কাজ করতে। এখন সে নেই, বৃষ্টির জন্য চলে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা, হাবিবুর,আতাউর, রনি, খুশবরসহ অনেকে জানান, জীবনে কখনো দেখিনি বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় কার্পেটিং হয়। আজকে কার্পেটিং হচ্ছে খুব বেশি হলে এক সপ্তাহ থাকবে । কারন পানির মধ্যেই পিচ দিয়ে রোলার করা হচ্ছে। পানি রাস্তার মধ্যেই থাকছে। ভারি বর্ষন বা যান চলাচল করলে পিচ উঠা শুরু হবে। একবার রাস্তা হলে পাঁচ দশ বছরে আর কেউ নজর দিবে না। এত খরতাপ হলো তখন কাজ করেনি আর এখন বৃষ্টির মধ্যে কাজ করা হচ্ছে। কিছু বলা হলে চাঁদাবাজির মামলার ভয় দেখাচ্ছেন। কাজের সময় অফিসের কোন কর্মকর্তাকে দেখা যায় না।
মান্দা উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, বৃষ্টি শুরুর পর থেকে কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও যদি করে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃষ্টি শুরু হয়েছে দুপুর থেকে নিষেধ করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কিভাবে কাজ হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, বৃষ্টির মধ্যে কাজ হলে আপনার কি সমস্যা, সেটা আমরা দেখব, ১৫০০ মিটার রাস্তার কাজের বরাদ্দ ও ঠিকাদার লাল্টু কাজটি নাকি কিনে করছেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন মোট ১২ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং হবে, এজন্য ১৫০০ মিটার রাস্তার সঠিক বরাদ্দ কত বলা যাচ্ছে না, তবে ১ কোটির বেশি হবে, কিনে করছেন না যে লাইসেন্সে পেয়েছে সে করছে বলে দায় সারেন।
নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহম্মেেদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বৃষ্টির মধ্যে কার্পেটিং করার কোন সুযোগ নেই। কাজ বন্ধ করা হবে এবং বৃষ্টির মধ্যে কার্পেটং করার প্রমান পেলে বিল বন্ধ করে দেওয়া হব।