সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বিয়ের প্রলোভনে এক শিক্ষক তার ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধভাবে দৈহিক মেলামেশা করার পর ওই কিশোরী এখন ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। পেটের সন্তান যতই বড় হচ্ছে, সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে ততই চিন্তিত হয়ে পড়েছে ওই কিশোরীসহ পরিবার। এ ঘটনায় ২ মাস আগে থানায় মামলা হলেও এখনো পর্যন্ত ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উপায়ন্তর না পেয়ে প্রতিকার চেয়ে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছেও অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
অভিযুক্ত আব্বাস আলী কল্যাণপুর গ্রামের মৃত আশু সেখের ছেলে এবং স্থানীয় ইকরা কোচিং সেন্টারের শিক্ষক আব্বাস আলী। নির্যাতিত কিশোরী উপজেলার কল্যানপুর দাখিল মাদ্রাসার ১০ শ্রেণির ছাত্রী এবং পার্শ্ববর্তী বওড়া আকন্দপাড়ার বাসিন্দা।
নির্যাতিত কিশোরীর ভাই ও মামলার বাদী জানান, ১৬ বছর বয়সী ছোট বোন ইকরা কোচিং সেন্টারে কোচিং করতো। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি অবিবাহিত শিক্ষক আব্বাস আলী পড়া দেখিয়ে দেয়ার কথা বলে আমার বোনকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বিষয়টি বাড়িতে জানানোর কথা বললে আব্বাস বিয়ের প্রলোভন দেখায়। এরপর সে পর্যায়ক্রমে আরো ৪ বার আমার বোনের সঙ্গে অবৈধভাবে মেলামেশা করে।
এ অবস্থায় বোনের অস্বাভাবিক শারিরীক পরিবর্তন ঘটলে সে বাড়িতে ঘটনার বিষয়ে অবগত করে।
এরপর পারিবারিক ও সামাজিকভাবে চাপ দেয়া হলে আব্বাস আলী বিয়ে করতে অস্বীকার করে। উপায়ন্তর না দেখে ৭ জুলাই আমি নিজে বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু আজও পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে বোনের গর্ভের সন্তানের বয়স ৮ মাস হয়ে গেছে। সন্তানের জন্ম হলে তার পিতৃপরিচয় কি হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব চিন্তায় আছি। গ্রামের লোকজন নানা কথা বলছে।এ বিষয়ে নির্যাতিত কিশোরীর বড় বোন জামাই বলেন, পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার না করায় বৃহস্পতিবার বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় মামলা দিতে গেলে শুরুতেই পুলিশ গড়িমসি করতে থাকে। থানার বড় সাহেবকে ১০ হাজার টাকা দেয়ার পর তিনি মামলা রুজু করেন। এ ঘটনার পর বাড়ির একটি টিনের ঘর বিক্রি করে কয়েক দফায় পুলিশকে এ পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছি। কিন্তু তারা আসামি ধরার বিষয়ে আজও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যোগাযোগ করলেই টাকা চায়।
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামিম রেজা বৃহস্পতিবার বলেন, সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ৯ জুলাই ওই কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। এএনা প্রতিবেদন পাইনি। অভিযুক্ত শিক্ষক আব্বাস আলী পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়াও স্থানীয় মেম্বারের সঙ্গে কথা বলে ওই তরুণীর বিয়ের বিষয়েও চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন ঘুষ গ্রহণের কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই কিশোরী ঘটনার বিষয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামি গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ