বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রমিকা, শালিসে জোরপূর্বক বিদায়

নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছীতে স্ত্রীর অধিকার নিয়ে প্রমিকের বাড়িতে  প্রেমিকার অবস্থান নেওয়া এক তরুণীকে শারীরিক নির্যাতন করে দুই দিন পর তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কোলা বাজারের অনুষ্ঠিত শালিসী বৈঠকে মাতব্বরা জোরপূর্বক ওই তরুণীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীর অধিকার নিয়ে আসা তরুণী বগুড়া জেলার সিবগনজ উপজেলার গড় মহাস্থান গ্রামের হাফিজার রহমানের মেয়ে রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৭-৮ মাস আগে কোলাগ্রামের মীর আব্দুর রহিম ছেলে সেনা সদস্য মীর রুহুল আমিন (২৫) এর সঙ্গে আমার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে।

তিন-চার মাস আগে আমাদের প্রেমের সর্ম্পক আর গভীরে পৌঁছায়।আমি বিয়ের জন্য চাপ দিলে তখন রুহুল আমিন আমাকে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে মৌলভী দ্বাড়া মাজারকে সাক্ষী রেখে বিয়ে পড়ান। আমি রেজিষ্ট্রি করে বিয়ের কথা বলতে রুহুল আমিন বলে আমার এখন চাকরিতে বিয়ের পারমিশন হয়নি যখন সরকারি ভাবে বিয়ে করার অনুমতি পাব তখন রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে করব তানাহলে আমার চাকরির সমস্য হবে।

এরপর রুহুল আমিন আমাদের বাড়িতে জামাই হিসেবে যাতায়াত করতে থাকেন। কিছুদিন থেকে রুহুল আমিন আমার সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখছিল না।  গত মঙ্গলবার ২২ শে নভেম্বর সন্ধায় আমার ভাবিকে সঙ্গে নিয়ে রুহুল আমিন বাড়িতে যাই।

রুহুল আমিন আমাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে আমাকে মারধর ও বিভিন্ন ভাবে র্নিযাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।এসময় আমরা স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় নিই।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কোলা বাজারের একটি দোকান ঘরে আমাদের ডেকে নিয়ে সালিসী বৈঠক করা হয়। ওই সালিসী  বৈঠক শেষে আমাকে জোরপূর্বক বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সালিসী বৈঠকে রুহুল আমিনসহ স্থানীয় কোলা ইউপি চেয়ারম্যান এসকেন্দার মির্জা,পাঁচ নম্বর ওর্য়াডের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও কোলা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি কুদ্দুস ,মাষ্টার নাজমুল ইসলামসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে আমাকে মাতব্বরা জোরপূর্বক বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। রুহুল আমিন আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

আমি এর ন্যায বিচার চাই।জানতে চাইলে রুহুল আমিন বলেন, মেয়েটির সঙ্গে আমার মোবাইলে কথা হতো সত্য। তবে তাঁকে বিয়ে করিনি বা কোন প্রলোভনও দেয়নি। এছাড়াও বিষয়টি সংবাদপত্রে না লেখার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি।

ইউপি চেয়ারম্যান এসকেন্দার মির্জা বলেন, রুহুল আমিন প্রেমের সর্ম্পকের কথা অস্বীকার করায় তরুণীকে আমরা তাঁর পরিবারের লোকজনের হাতে উঠিয়ে দিয়েছি। মেয়েটি তাঁর বাবার বাড়িতে যেতে চাননি। এছাড়া মেয়েটিকে র্নিযাতন ও মারপিটের কথা বললে বিষয়টি তিনি এরিয়ে যান।

ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে মেয়েটি তাঁর ভাবিকে সঙ্গে নিয়ে রুহুল আমিনের বাড়িতে আসেন। রুহুল আমিনও বাড়িতে ছিল। রুহুল আমিন ও তাঁর বাড়ির লোকজন মেয়েটির সঙ্গে র্দুব্যবহার করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।

ইউপি চেয়ারম্যানের কথামতো মেয়েটিকে আমার বাড়িতে এনে রাখি। আজকের সালিসী বৈঠকে রুহুল আমিন মেয়েটি বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। আমরা মেয়েটিকে তাঁর পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দিয়েছি।

স/আ