সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ২০১৬ সালের তথ্যচিত্রে দেখা যায়, দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ১৬ দশমিক শূন্য এক ভাগ লোক মানসিক রোগে আক্রান্ত। অন্যদিকে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু কিশোরদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪ শতাংসই মানসিক রোগে আক্রান্ত।
এই চিত্রের মধ্য দিয়েই সোমবার, ১০ অক্টোবর পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।
দেশে মোট জনগোষ্ঠির এই বিপুল অংশ মানসিক রোগে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসকের সংখ্যা একবারেই অপ্রতুল। প্রতি এক লাখ জনগোষ্ঠির জন্য চিকিৎসক এক জনেরও কম। এমনকি এই খাতের চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয় স্বাস্থ্য বাজেটের শূন্য দশমিক ৪৪ শতংশ।
পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী, দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ১৬ দশমিক ১ ভাগ মানুষ মানসিক রোগে ভুগছেন। এছাড়া উদ্বেগাধিক্যতে (অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার) ৮ দশমিক ৪ ভাগ, বিষণ্ণতায় (ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার) ৪ দশমিক ৬ ভাগ, গুরুতর মানসিক রোগে (সাইকোসিস) ১ দশমিক ১ ভাগ এবং মাদকাসক্তিতে (ড্রাগ অ্যাডিকশন) শূন্য দশমিক ৬ ভাগ লোক ভুগছেন।
শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক রোগে আক্রান্তের হার আরও বেশি। ১৮ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪ ভাগই মানসিক রোগে আক্রান্ত। এছাড়া এই বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩ দশমিক ৮ ভাগ মানসিক প্রতিবন্ধী, ২ ভাগ শিশু মৃগীরোগে আক্রান্ত এবং শূন্য দশমিক ৮ ভাগ শিশু মাদকাসক্ত।
এ বিষয়ে মনরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহিত কামাল বাংলানিউজকে বলেন, দেশে মানসিক রোগীদের জন্য চিকিৎসক খুবই অপ্রতুল। যে কজনও বা আছে তাদের কাছেও রোগীরা আসে না বললে¬ই চলে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ১৬ ভাগের বেশি মানসিক রোগী হলেও এরমধ্যে ১৫ ভাগই বুঝতে পারেন না যে তারা মানসিক রোগী। আর বুঝতে পারলেও তারা সুস্থ মানসিক চিকিৎসকদের দারস্থ হন না। এর প্রধান কারণ লজ্জা বা অনীহা। কারণ, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষেরা মানসিক চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা সংকোচের বলে মনে করেন। এমনকি তারা অন্যদের কাছে বলতে পর্যন্ত লজ্জা পান।
মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্ট নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, সকাল ১০টায় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গন থেকে র্যালি এবং বিকেলে ৩টায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট কনফারেন্স হলে আলোচনা সভা। সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকাল ৯টায় একটি বর্ণাঢ্য রোড-শোর আয়োজন করা হয়। রোড-শো টি রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ, ব্যানার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়।
সূত্র: বাংলা নিউজ