বিশ্ব নেতাদের মাঝেও দেশরত্ন শেখ হাসিনা অনন্য কেন? ।। হিমেল

২০১১ সালের দিকে সিরিয়ায় সরকার(বাশার আল আসাদ) বিরোধী আন্দোলনের পর আসাদ সরকার মারাত্মকভাবে বেকায়দায় পরে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের মদদে দেশটি গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হয়। উত্থান ঘটে আইএস নামক জঙ্গীগোষ্ঠীর। আইএস থাকার অজুহাতে সেখানে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এই আগ্রাসনকে বৈধতা দিতে যুক্তরাষ্ট্র এখানে সম্পৃক্ত করে ন্যাটো’কে(মুলত ফ্রান্সকে)। এক পর্যায়ে ফ্রান্স এই আগ্রাসনে শিথিলতা দেখালে ফ্রান্সের নিস শহরে বাস্তিল দূর্গ পতন দিবসে হামলা চালায় আইএস। প্রায় ৮৪ জন নিহত হন এই হামলায়। দেশের জনগনের কাছে নৈতিকতার যায়গা থেকে সিরিয়ায় আবার হামলা জোরদার করতে বাধ্য হয় ফ্রান্স।আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, আইএস। আইএস কে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে তুরস্ক। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা শক্তিসমুহ, তুরস্ক কিন্তু আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধেও নগ্নভাবে শেখ হাসিনার সরকারের বিরোধীতা করেছে।সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পক্ষে আছে মুলত রাশিয়া, ইরান এবং ইরান সমর্থিত সংগঠন হিজবুল্লাহ।যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়ার অবস্থা এখন এমন যে, এর মাথাপিছু আয় প্রায় ৬০০০ ডলার থেকে প্রায় ১৫০০ ডলারে ঠেকেছে! সিরিয়ার ঘটনার সাথে এবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমি মার্জ করুন।২০১৩ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করলো যুক্তরাষ্ট্র আশীর্বাদপুষ্ট বিএনপি-জামাত।২০১৪ এর নির্বাচনের পর আবার শুরু হলো সরকার বিরোধী আন্দোলন। এবার শুরু হলো পেট্রোল বোমার পৈশাচিক ব্যাবহার। নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরে সরকার পতনের চেষ্টা হলো। সেসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সরকার কঠোর হাতে দমন করলো। এভাবেও যখন সরকার পতন করা গেলোনা তখন বিদেশী নাগরীকদের হত্যা করে সরকারকে আন্তর্জাতিক চাপে ফেলার চেষ্টা করা হলো। শুরু হলো নতুন গেইম।আইএস! এরপর গুলশানের হামলা, শোলাকিয়ার হামলা হওয়ার পরেই সরকার এসব সন্ত্রাসীদের নির্মুলে জিরো টলারেন্স দেখালো। সন্ত্রাসীদের নির্মুল করার পথে অনেকখানি সফলতা এলো। লক্ষ্য করে দেখুন, সিরিয়ায় এসব ঘটনার পেছনে যারা সেই একই শক্তি কিন্তু এদেশের এসব ঘটনারও মুল কারিগর। কিন্তু যে মানুষটির কারনে আমরা বেচে গিয়েছি, তিনি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সিরিয়া এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যার নেতৃত্ব, সাহস আর বুদ্ধিমত্তা পার্থক্য করে দিয়েছে, তিনি শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ যার কারনে সিরিয়ার মতো অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, আমাদের দেশরত্ন।

 

  • মালয়েশিয়ার মাহতির মোহাম্মদের কথা আমরা প্রায়ই উদাহরণ প্রসঙ্গে টানি, সিঙ্গাপুরের লি ক্যুয়ানের কথাও বলি।এরা দেশকে উন্নয়ন দিয়েছেন, গণতন্ত্র দেননি। একমাত্র শেখ হাসিনাই গনতন্ত্র এবং উন্নয়ন একসাথে কার্যকর করেছেন। উল্লেখ্য, নিজ দলের ভিতর মাহাথির মোহাম্মদ এতটাই একপেশে হয়ে গেছেন যে, এখন তিনি নিজেই তার প্রতিষ্ঠিত দল থেকে বেরিয়ে আরেকটি দল প্রতিষ্ঠা করছেন। অথচ, শেখ হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদের কাছে অদ্বিতীয়, অবিনশ্বর। তিনি দলের আস্থা, বিশ্বাস।

 

  • খুব মনে পরে কিংবদন্তী নেতা হুগো স্যাভেজের কথা। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ভেনিজুয়েলার এই নেতা নিজের জীবন ব্যয় করেছেন দেশের মানুষের কল্যানে। অথচ, সে দেশেও দেখলাম প্রায় ১৪ বছর পর একটি ডানপন্থী দল সরকার গঠন করলো। অথচ, বাংলাদেশে যে মানুষটির জন্য ডানপন্থীরা রাজনৈতিকভাবে মুমূর্ষু, তার নাম শেখ হাসিনা। একমাত্র, শেখ হাসিনার চোখেই আমরা দেখি সম্বৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। শেখ হাসিনাই আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে সাম্রাজ্যবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হয়, তিনি শিখিয়েছেন কিভাবে বিশ্বপরাশক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে একটি স্বপ্নের পদ্মাসেতু করতে হয়, তিনি আমাদের দেখিয়েছেন সরকারী দলের সংসদ সদস্য হয়েও অপরাধ করলে কিভাবে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হয়, তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে একটি পরাক্রমশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছ থেকে ছিটমহলে স্বাধীনতা এনে দিতে। শেখ হাসিনা এজন্যই অন্যান্য বিশ্বনেতাদের মাঝে অনন্য। তিনি আমাদের রত্ন, দেশরত্ন।জন্মদিনে শুভেচ্ছা, মাননীয় অনন্য সাধারণ প্রধানমন্ত্রী।

লেখক:

তৌহিদুর রহমান হিমেল

তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-সম্পাদক,

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং

সাধারণ সম্পাদক,

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)।