রবিবার , ৩ মার্চ ২০১৯ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিপর্যস্ত কাশ্মীরের অর্থনীতি

Paris
মার্চ ৩, ২০১৯ ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পুলওয়ামা হামলা ও তার জেরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থায় বিপর্যস্ত কাশ্মীরের অর্থনীতি। আতঙ্কে স্থবিরতা নেমে এসেছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে। এতে লোকসান গুনছেন এ অঞ্চলের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা।

অনেকটা পর্যটন নির্ভরশীল হওয়ায় বিপর্যয় নেমে এসেছে কাশ্মীরের সার্বিক অর্থনীতিতে। পর্যটক আগমন শূন্যের কোটায় দাঁড়িয়েছে। কর্মসংস্থানের তীব্র সংকটে থাকা এ রাজ্যে পর্যটন খাতকে ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করে অনেক মানুষ। পর্যটক আগমনের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে এ অঞ্চলের অর্থনীতি। বর্তমানে পর্যটক আগমন শূন্যের কোঠায় নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চরম বিপর্যয়ে পড়বে পুরো অঞ্চলের অর্থনীতি।

কাশ্মীর ইকোনমিক অ্যালান্সের মুখ্যসচিব সিরাজ আহমেদ জানিয়েছেন, কেবল পর্যটন শিল্পে নয়, ব্যবসাতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। তার দাবি, চলমান উত্তেজনায় প্রতিদিন ১৫০ কোটি রুপি ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ পরিস্থিতিতে বিদেশি নাগরিকদের কাশ্মীরে না আসার পরামর্শ দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। এটিও পর্যটন শিল্পে ভাটা পড়ার অন্যতম একটি কারণ বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। ২০১২ সাল থেকে কাশ্মীরে আসা নিয়ে নেতিবাচক পরামর্শ দেয়া বন্ধ করেছিল জাপান, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য।

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরকে যেন প্রকৃতি সাজিয়েছে তার নিজের মতো করে। সুন্দর এ রাজ্য সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান। শুধু ভারতের মুকুট হিসেবেই নয়, সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভূ-স্বর্গ হিসেবে পরিচিত জম্মু-কাশ্মীর। দেশটির উত্তরাঞ্চলের এ রাজ্যটি পাহাড়, ঝরনা ও তুষারপাতের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলেও অন্যান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বিমোহিত করে তাদের।

অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর শত শত পর্যটক আসেন এখানে। বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছেও এটি অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি পর্যটকের মধ্যে কাশ্মীরে ঘুরতে যাওয়ায় বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। শীতপরবর্তী এ সময়ে আরও বেশি সুন্দর হয়ে ওঠে ভূ-স্বর্গ। হরেক পসরা সাজিয়ে প্রকৃতি স্বাগত জানায় ভ্রমণপ্রেমীদের। তাই এ সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় উপত্যকায়।

আর সেদিকে তাকিয়েই প্রতীক্ষা করে থাকেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালে অশান্তির জেরে পর্যটন ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এর পরের দুই বছর মোটামুটি শান্তি বজায় ছিল কাশ্মীরে। শান্তির হাত ধরেই সমৃদ্ধি আসছিল পর্যটন শিল্পে। মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল উপত্যকার অর্থনীতি। গত বছর ভারত ও পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যার পর জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে ধস নামে। সে ধস কাটিয়ে উঠতে এবার আশায় বুক বেঁধেছিলেন রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারির পর সব পাল্টে গেছে।

মার্চ পর্যন্ত পর্যটকদের সব বুকিং বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কাশ্মীরের ‘ট্র্যাভেল এজেন্ট’ সংগঠনের সভাপতি আবদুল খলিফ ওয়াংনু। তিনি বলেন, এবার অনেক বেশি পর্যটক আশা করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান চরম অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে পর্যটক আগমন শূন্যের কোঠায় দাঁড়িয়েছে। অন্যবার এ সময় শ্রীনগরগামী বিমানের আসন ভর্তি থাকে, এবার সব খালি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অনেকেই কাশ্মীরে আসতে চাইছেন না।

এদিকে উপত্যকায় বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছেন অনেক পর্যটক। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পর্যটন ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, আটকা পড়েছেন অন্তত কয়েকশ পর্যটক। তাদের বিনা খরচে থাকার সুযোগ দিতে দরজা খুলে দিয়েছেন উপত্যকার হোটেল মালিক থেকে সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য, পুলওয়ামায় ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ৪২ জন ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে বলে ভারতের দাবি। এর জবাব দিতেই মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে অভিযান চালায় ভারত।

ভারতের ভাষ্য অনুযায়ী ওই অভিযানে ৩০০ জঙ্গি নিহত হয়েছে। তবে ভারতের দাবি নাকচ করে আসছে পাকিস্তান। এরপর মঙ্গলবার দিনের প্রথমদিক থেকে বুধবার পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পরস্পরের দাবি অনুযায়ী, ভারতের দুটি ও পাকিস্তানের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়। এর মধ্যে অভিনন্দন নামে একজন ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক হন। শুক্রবার তাকে ফেরত দিলেও দুই দেশের মধ্যে এখনও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

সর্বশেষ - অর্থ ও বাণিজ্য