বিপনণ ব্যবস্থাপনায় ত্রুটিতে পণ্যের ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ছে

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বিপনণ ব্যবস্থাপনায় ত্রুটির কারণে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। শনিবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ নিয়ে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বড় করপোরেট কম্পানিগুলো যাতে অন্যায্যভাবে পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেদিকে সরকারের নজরদারি রয়েছে। যেসব করপোরেট কম্পানি অতিমুনাফার জন্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করছে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তাদের তালিকা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বড় কম্পানিগুলোর আধিপত্যের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পণ্য মজুদসহ অন্যায়ভাবে দাম বৃদ্ধির কারণে প্রতিযোগিতা কমিশনে ৫৩টি মামলা চলমান রয়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের দেশে গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা হলেও ভারত, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশি দেশে কেজি প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কম দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য ভোক্তাদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণও দায়ী।’

তিনি বলেন, আমাদের বিপনণ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। কিন্তু ভোক্তাকে বেশি দামে পণ্য ক্রয় করতে হচ্ছে। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্ত্বভোগী ছাড়াও পরিবহণ ভাড়া ও রাস্তায় পদে পদে চাঁদাবাজিও দায়ী। এসবের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ অপর্যাপ্ত। তবে গণমাধ্যম অনিয়মের বিপক্ষে সরব ভূমিকা পালন করে আসছে।

মহাপরিচালক বলেন, বর্তমান প্রচলিত আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে মজুদদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে মজুদদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে নতুন আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে জনবান্ধব কার্যক্রমে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে দায়ী করা হলেও প্রকৃতপক্ষে সুশাসনের অভাব এবং সরকারি সংস্থাগুলোর অদক্ষতা ও সমন্বয়হীনতাও এর জন্য দায়ী। বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি। মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা সব সময়ই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনগনকে প্রতারিত করে থাকে। তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন।

ছায়া সংসদে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যায়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। সূত্র: কালের কণ্ঠ