বিচার অঙ্গনে দুর্নীতি নির্মূলে দুদককে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত: হাইকোর্ট

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপাকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে নোটিশ দিয়েছিল- সেটিকে চ্যালেঞ্জ করা রিটের শুনানি নিয়ে রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তাকে দুদকের কাছে সময় চাইতে বলেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আদালত তার পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন।

বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ ও পর্যবেক্ষণ দেন।

আদালত বলেছেন- বিচার অঙ্গনে দুর্নীতি নির্মূলে দুদককে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।  দুর্নীতিবিষয়ক ওই রিটের শুনানিকালে আদালত আরও বলেন- সবার মনে রাখা উচিত কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

শুনানি শেষে গণমাধ্যমের কাছে আদালতের এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।  তিনি বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর আবার শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসবে রিট আবেদনটি।  কাল (বুধবার) যদি জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপা দুদকে যান, তাহলে তিনি আবেদন করে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেবেন।  যদি না যান, তাহলে উনার পক্ষ থেকে কেউ আবেদন করবেন, উনি যেহেতু অসুস্থ।

আদালতে রিটকারী রূপার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জেডআই খান পান্না ও সালাহউদ্দিন দোলন।  আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বুধবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপাকে ওই নোটিশ পাঠায় দুদক।  বুধবার সকাল ১০টায় তাকে সেগুনবাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয় নোটিশে।

নোটিশে বলা হয়, রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা ‘বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করে জিকে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সঙ্গে আঁতাত করে জামিন করিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন’ বলে অভিযোগ রয়েছে।

এরপর ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন রূপা। ওই নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়ার পাশাপাশি রুল জারির আর্জি জানানো হয় রিটে।

হয়রানি করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে বিধি বিহির্ভূতভাবে জারি করা ওই নোটিশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুল চেয়েছেন রূপা।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে ২০ জুলাই ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে তোলপাড় শুরু হলে রাজধানীর নিকেতনের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা, মাদক, অবৈধ অস্ত্রসহ বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়।  এর মধ্যে অবৈধ সম্পত্তির মামলাও রয়েছে।

গ্রেফতারের পাঁচ মাস পর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে জিকে শামীমের করা নামের বানানটিতে গলদ ছিল।  নামের পরিবর্তন করায় কাকে জামিন দেয়া হচ্ছে বিষয়টি অনেকটাই অস্পষ্ট থেকে যায় আদালতের কাছে।  জামিনের এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তা প্রত্যাহার করে নেন উচ্চ আদালত। অবৈধ পন্থায় নেয়া ওই জামিনের ঘটনায় অভিযোগের তীঁরটি যার দিকে ছিল তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপা।

 

সূত্রঃ যুগান্তর